রহমান মৃধা
এক. জাতীয় সংসদ ভবনে ৩৫০ জন নীতিনির্ধারকসহ তাঁদের সহযোগী আমলারা রয়েছেন, যাঁরা শপথের বাণী পড়ে নীতিমালা তৈরি এবং তার প্রতিফলন ঘটাবেন বলে ওয়াদা করেছেন। কিন্তু হচ্ছে কি সেই কাজগুলো সঠিকভাবে?
আচ্ছা, দেশের এই উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের কথা ভাবুন তো! প্রতিটি এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ বাধ্যতামূলক থাকতে হবে, আছে কি?
দেশের শহরগুলোকে শুধু ইট, কাঠ, পাথরের বস্তি না বানিয়ে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা দরকার নয় কি? দেশের সবার মাথায় একটিই ভাবনা—ছেলেমেয়েকে শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বানাতে হবে! ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার মানেই সফল জীবন নয়, এটা মাথায় নিতে হবে। আপনার বাচ্চাকে আপনি পৃথিবীতে এনেছেন ঠিকই, কিন্তু তাকে যা খুশি তাই করতে চেষ্টা করার আগে ভাবুন, সে নিজেই একটা আলাদা মানুষ, যা জোরালো হতে থাকে বয়ঃসন্ধিতে। এটা জেনেবুঝেও নিজের ইচ্ছেটা পূরণ করতে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে তার জীবন দুর্বিষহ করে দেবেন না।
কিশোরীদের কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। তাদের এই সময়টা সত্যিই কষ্টদায়ক। নিরাপত্তার অভাবে একা কোথাও যেতে পারে না। ফলে মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যা চিন্তার বিষয়। বিভিন্নভাবে প্রলোভিত হচ্ছে ওইটুকুন একটা যন্ত্রের মাধ্যমে। তাদেরও প্রয়োজন মুক্ত বাতাস, যেখানে তারা নির্ভয়ে বেড়ে উঠবে। নইলে শারীরিক সমস্যার সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক
সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।
যাই হোক, এসব চিন্তা শুধু বাবা-মায়ের নয়, এসব চিন্তা সংসদ সদস্যদের এবং আমলাদেরও হওয়া উচিত। শুধু
শহর নয়, সারা দেশের আনাচে-কানাচে রয়েছে লাখ লাখ নতুন প্রজন্ম, তাদের কথা ভাবুন! কে জানে, দেখবেন হঠাৎ পৃথিবীসেরা অলরাউন্ডার আমরাই পেয়েছি। এমনটি কিন্তু হতে পারে। আমরা আশা নিয়েই বাঁচি এবং বেঁচে আছি।
দুই.
৪০ বছর কাজ করতে এবং কাজ করাতে নিযুক্ত থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এবং সম্ভবত পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে চাকরিরত কোনো কর্মচারীকে ওএসডি করে রাখা হয় বলে শুনিনি। এমনকি চাকরির ক্ষেত্রে এই যুগে ‘ওএসডি’ শব্দটি যে ব্যবহৃত হয়, তা কেবল বাংলাদেশেই চলমান।
ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) অনুশীলনটি ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময়কালের একটি প্রথা, যা ১৯৩১ সালের দিকে চালু ছিল। তৎকালীন ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে এ ধরনের নিয়ম ছিল। ব্রিটিশ বা পাকিস্তানি নিয়মকানুনই যদি দেশে চলবে, তাহলে কী দরকার ছিল তাদের তাড়ানোর?
দেশের জনপ্রশাসনে কিছু কর্মকর্তার ওপর বিশেষ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তারা অন্য কর্মকর্তাদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে বিবেচিত। সরকারের প্রয়োজনে তাদের ওপর সেই দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। আবার দায়িত্ব শেষে আগের পদে ফিরিয়ে আনা হয়, যাকে বলা হয় ডেপুটেশন। কিন্তু বাংলাদেশে ‘ওএসডি কর্মকর্তা’ অর্থটি অত্যন্ত নিন্দাবাচক হয়ে পড়েছে। কারণ ওএসডিধারীরা সব সুবিধা ভোগ করছেন, শুধু কাজ করছেন না—এমন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়তো হাতে গুনে শেষ করা যাবে না।
প্রতিবারই সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে একদল কর্মকর্তা ওএসডি হয়ে যান আর পূর্ববর্তী সরকারের আমলের ওএসডিরা উচ্চতর দায়িত্বে নিয়োজিত হন। জনপ্রশাসনের এ দুরারোগ্য রোগটি দূর করা না গেলে জনপ্রশাসন নির্ভয়ে কাজ করতে পারবে না। অনেক সময় সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সময় থেকেই দলীয় লোকদের প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা দেখা যায়। এটা আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। জনপ্রশাসনের এই অসুস্থ ধারা ভাঙতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা সরকারেরই কর্তব্য। তা না হলে প্রজাতন্ত্রের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যাবে না।
যে দেশে একজন মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে দিতে পারে না শয্যা খালি না থাকার কারণে, শেষে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুবরণ করে, সে দেশে কীভাবে ওএসডি প্রথা চলমান, খুব জানতে ইচ্ছা করে!
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
এক. জাতীয় সংসদ ভবনে ৩৫০ জন নীতিনির্ধারকসহ তাঁদের সহযোগী আমলারা রয়েছেন, যাঁরা শপথের বাণী পড়ে নীতিমালা তৈরি এবং তার প্রতিফলন ঘটাবেন বলে ওয়াদা করেছেন। কিন্তু হচ্ছে কি সেই কাজগুলো সঠিকভাবে?
আচ্ছা, দেশের এই উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের কথা ভাবুন তো! প্রতিটি এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ বাধ্যতামূলক থাকতে হবে, আছে কি?
দেশের শহরগুলোকে শুধু ইট, কাঠ, পাথরের বস্তি না বানিয়ে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা দরকার নয় কি? দেশের সবার মাথায় একটিই ভাবনা—ছেলেমেয়েকে শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বানাতে হবে! ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার মানেই সফল জীবন নয়, এটা মাথায় নিতে হবে। আপনার বাচ্চাকে আপনি পৃথিবীতে এনেছেন ঠিকই, কিন্তু তাকে যা খুশি তাই করতে চেষ্টা করার আগে ভাবুন, সে নিজেই একটা আলাদা মানুষ, যা জোরালো হতে থাকে বয়ঃসন্ধিতে। এটা জেনেবুঝেও নিজের ইচ্ছেটা পূরণ করতে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে তার জীবন দুর্বিষহ করে দেবেন না।
কিশোরীদের কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। তাদের এই সময়টা সত্যিই কষ্টদায়ক। নিরাপত্তার অভাবে একা কোথাও যেতে পারে না। ফলে মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যা চিন্তার বিষয়। বিভিন্নভাবে প্রলোভিত হচ্ছে ওইটুকুন একটা যন্ত্রের মাধ্যমে। তাদেরও প্রয়োজন মুক্ত বাতাস, যেখানে তারা নির্ভয়ে বেড়ে উঠবে। নইলে শারীরিক সমস্যার সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক
সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।
যাই হোক, এসব চিন্তা শুধু বাবা-মায়ের নয়, এসব চিন্তা সংসদ সদস্যদের এবং আমলাদেরও হওয়া উচিত। শুধু
শহর নয়, সারা দেশের আনাচে-কানাচে রয়েছে লাখ লাখ নতুন প্রজন্ম, তাদের কথা ভাবুন! কে জানে, দেখবেন হঠাৎ পৃথিবীসেরা অলরাউন্ডার আমরাই পেয়েছি। এমনটি কিন্তু হতে পারে। আমরা আশা নিয়েই বাঁচি এবং বেঁচে আছি।
দুই.
৪০ বছর কাজ করতে এবং কাজ করাতে নিযুক্ত থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এবং সম্ভবত পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে চাকরিরত কোনো কর্মচারীকে ওএসডি করে রাখা হয় বলে শুনিনি। এমনকি চাকরির ক্ষেত্রে এই যুগে ‘ওএসডি’ শব্দটি যে ব্যবহৃত হয়, তা কেবল বাংলাদেশেই চলমান।
ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) অনুশীলনটি ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময়কালের একটি প্রথা, যা ১৯৩১ সালের দিকে চালু ছিল। তৎকালীন ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে এ ধরনের নিয়ম ছিল। ব্রিটিশ বা পাকিস্তানি নিয়মকানুনই যদি দেশে চলবে, তাহলে কী দরকার ছিল তাদের তাড়ানোর?
দেশের জনপ্রশাসনে কিছু কর্মকর্তার ওপর বিশেষ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তারা অন্য কর্মকর্তাদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে বিবেচিত। সরকারের প্রয়োজনে তাদের ওপর সেই দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। আবার দায়িত্ব শেষে আগের পদে ফিরিয়ে আনা হয়, যাকে বলা হয় ডেপুটেশন। কিন্তু বাংলাদেশে ‘ওএসডি কর্মকর্তা’ অর্থটি অত্যন্ত নিন্দাবাচক হয়ে পড়েছে। কারণ ওএসডিধারীরা সব সুবিধা ভোগ করছেন, শুধু কাজ করছেন না—এমন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়তো হাতে গুনে শেষ করা যাবে না।
প্রতিবারই সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে একদল কর্মকর্তা ওএসডি হয়ে যান আর পূর্ববর্তী সরকারের আমলের ওএসডিরা উচ্চতর দায়িত্বে নিয়োজিত হন। জনপ্রশাসনের এ দুরারোগ্য রোগটি দূর করা না গেলে জনপ্রশাসন নির্ভয়ে কাজ করতে পারবে না। অনেক সময় সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সময় থেকেই দলীয় লোকদের প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা দেখা যায়। এটা আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। জনপ্রশাসনের এই অসুস্থ ধারা ভাঙতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা সরকারেরই কর্তব্য। তা না হলে প্রজাতন্ত্রের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যাবে না।
যে দেশে একজন মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে দিতে পারে না শয্যা খালি না থাকার কারণে, শেষে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুবরণ করে, সে দেশে কীভাবে ওএসডি প্রথা চলমান, খুব জানতে ইচ্ছা করে!
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে