পৌর বর্জ্যে সর্বনাশ কীর্তিনাশার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভার কীর্তিনাশা নদীর লঞ্চঘাট এলাকা যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পৌরসভাটির বর্জ্য অপসারণের জন্য নির্ধারিত স্থান বা ডাম্পিং ইয়ার্ড না থাকায় শহরের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নদীতে। ফলে জেলা শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদীটি দূষণের পাশাপাশি ভরাট হওয়ায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নদীদূষণ বন্ধে দ্রুতই ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণের উদ্যোগের কথা জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, স্থানীয়দের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ১১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নড়িয়া পৌরসভা। পৌরসভাটিতে প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার মানুষের বসবাস। উপজেলা সদর ও পৌর শহর হওয়ায় নড়িয়া বাজারে গড়ে ওঠে দেড় হাজারের বেশি ছোট-বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া বাজার ও আশপাশে রয়েছে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বিভিন্ন পণ্য তৈরির কারখানা, মাছ-মাংস, সার, কীটনাশক ও ওষুধের দোকান। নড়িয়া বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কীর্তিনাশা নদী। পদ্মা নদীর নড়িয়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁর সঙ্গে মিশেছে ৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য কীর্তিনাশা নদী। নড়িয়া বাজারের সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এই নদীতে। নড়িয়া পৌরসভার স্থায়ী বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা না থাকায় পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও তাঁদের সংগ্রহ করা ময়লা-আবর্জনা ফেলছে নদীতে। ফলে নড়িয়া পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকার কীর্তিনাশা নদীর তীরের অন্তত ২০০ মিটার এলাকা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নদীর তীরে ফেলা ময়লা-আবর্জনা নদীর স্রোতে পানিতে মিশে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এ ছাড়া ময়লার স্তূপে ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীতীরবর্তী ওই সব এলাকা।

নড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ময়লা-আবর্জনা ফেলার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে নদীতীরে ফেলতে হচ্ছে। এখানে থাকা ময়লার দুর্গন্ধে আশপাশের দোকানে ক্রেতারা আসতে চান না। ব্যবসায়ীরাও দুর্গন্ধ আর মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ।

পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কাজ করা বিডি ক্লিন জেলা কমিটির সহসমন্বয়ক পলাশ খান বলেন, শহর পরিচ্ছন্ন রাখা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। আর তাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে পৌরসভাকে। নড়িয়ায় শিগগিরই বিডি ক্লিন টিমের সদস্যরা পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও প্রচারণা চালাবেন; বিশেষ করে বাসিন্দাদের নদীতে ময়লা ফেলা থেকে বিরত রাখতে জোর প্রচারণা চালানো হবে।

নদী পরিব্রাজক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নুরুজ্জামান শিপন বলেন, প্রতিনিয়তই নদী দখল ও দূষণ বেড়ে চলছে। কোনোভাবেই তা ঠেকানো যাচ্ছে না। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি নদীদখল ও দূষণ রোধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। নদীদূষণের পরিণাম কী হতে পারে, তা সরকারের ভেবে দেখা উচিত। নড়িয়া পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কীর্তিনাশা নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এর ফলে এক দিকে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে ভরাট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। 

নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্থায়ীভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য ডাম্পিং ইয়ার্ড না থাকায় নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে স্থানীয়রা। নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণ করার জন্য পৌর শহরের বাঁশতলা এলাকায় এক একর পরিমাণ জমি ক্রয় করা হয়েছে। সেটি নির্মিত হলে আর এ সমস্যা থাকবে না। ইয়ার্ড নির্মাণে কমপক্ষে তিন একর জমি প্রয়োজন। ক্রয়কৃত জমির পাশে আরও দুই একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত