জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর হাতে দেওয়া রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের স্মারকলিপিটিতে বলা হয়েছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের একমাত্র মুসলমান যুবকদের নিয়ে গঠিত কর্মপরিষদ মনে করে যে, পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়া উচিত। কোন কোন রাষ্ট্রে একাধিক রাষ্ট্রভাষা গৃহীত আছে, সে দৃষ্টান্তগুলোও তাতে দেওয়া হয়েছিল। কেন সব প্রাদেশিক ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষাকেই রাষ্ট্রভাষার স্থান দেওয়া উচিত, সে কথাও বিবৃত করা হয়। বাংলা সাহিত্য এবং বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে ব্যাখ্যাও ছিল। কিন্তু জিন্নাহ বিষয়গুলোকে অগ্রাহ্য করলেন। এমনকি খাজা নাজিমুদ্দিন সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলেন, সেটিও বাতিল করে দিলেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পাকিস্তান রাষ্ট্রকে লন্ডভন্ড করে দেওয়ার জন্য কমিউনিস্ট ও হিন্দুদের কৌশল বলে তিনি অভিহিত করলেন।
জিন্নাহ ঢাকা ত্যাগ করার পর ৬ এপ্রিল পূর্ব বাংলা ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে খাজা নাজিমুদ্দিন বাংলা ভাষা-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এনেছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, পূর্ব বাংলায় ইংরেজির জায়গায় বাংলা হবে সরকারি ভাষা এবং পূর্ব বাংলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যথাসম্ভব বাংলা হবে শিক্ষার মাধ্যম। কিন্তু সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যে ৮ দফা চুক্তি সই করেছিলেন, তার তৃতীয় ও চতুর্থ দফার কথা তিনি বেমালুম চেপে গেলেন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যে এই চুক্তিভঙ্গের জন্য দায়ী, সেটা না বোঝার কোনো কারণ নেই।
এরপর বেশ কিছুদিন আন্দোলন চলল ঢিমেতালে। তবে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ যে আগুন জ্বলে উঠেছিল, সেই আগুনই দিনটিকে বাঁচিয়ে রাখল ১৯৪৯, ১৯৫০ ও ১৯৫১ সালে রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালন করে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমান বাংলা ভাষাকে ইসলামি ধারায় সংস্কার করা, আরবি হরফে বাংলা লেখা, উর্দু শিক্ষার প্রসার ইত্যাদির ব্যাপারে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিলেন। উর্দুপন্থী বুদ্ধিজীবীরা তখন উর্দুর পক্ষে প্রচার চালাতে থাকেন। ফজলুর রহমান বলেই বসলেন, ‘বাঙালি মুসলমানের ভাষা স্রেফ উর্দুরই একটি রূপান্তর, তাই উর্দু হরফে লিখলে তা উর্দু বলেই মনে হবে।’
বাংলা লেখায় আরবি হরফ প্রবর্তনের চক্রান্ত শুরু হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। ওই সময় জানা যায় যে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা বোর্ড পাকিস্তানের প্রাদেশিক ভাষাগুলোকে আরবি হরফে লেখার সুপারিশ করেছে। এ যে বাংলা লিপি ধ্বংস করার চক্রান্তেরই অংশ, সেটি চাপা থাকল না। এ গোপন চক্রান্তটি ফাঁস হয়েছিল ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মাধ্যমে। সরকার ড. মু. শহীদুল্লাহকে আরবি হরফ প্রবর্তনে সহায়তা করতে অনুরোধ জানালে তিনি সেই চিঠির জবাব সরকারকে না দিয়ে নিজের বক্তব্য প্রেসের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরেন। জনগণ তথা ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী সবাই এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সচেতন হয়ে ওঠেন। শুরু হয় আরবি লিপি প্রবর্তনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর সংগ্রহ, প্রতিবাদসভা ও বিক্ষোভ মিছিল। ওই সময় পূর্ব বাংলা সরকার পূর্ব বাংলা ভাষা কমিটি নামে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করলে তাঁরা বলিষ্ঠভাবে আরবি হরফ প্রবর্তনের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করেন।
১৯৫০ সালে তেমন বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে ১৯৫১ সালে এসে আবার গা-ঝাড়া দিয়ে উঠল আন্দোলন। আগের দুই বছরের মতো সে বছরও ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করে দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি ছাত্রসভা করে। সে সভায় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করা হয় এবং একটি নতুন সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক হন আব্দুল মতিন এবং কমিটির নাম দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি।
কুমিল্লায় পূর্ববঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ অধ্যাপক সম্মেলনে ১৬ মার্চ সভাপতির ভাষণে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলা ভাষা অবহেলিত হইলে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিদ্রোহ করিব।’
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর হাতে দেওয়া রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের স্মারকলিপিটিতে বলা হয়েছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের একমাত্র মুসলমান যুবকদের নিয়ে গঠিত কর্মপরিষদ মনে করে যে, পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়া উচিত। কোন কোন রাষ্ট্রে একাধিক রাষ্ট্রভাষা গৃহীত আছে, সে দৃষ্টান্তগুলোও তাতে দেওয়া হয়েছিল। কেন সব প্রাদেশিক ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষাকেই রাষ্ট্রভাষার স্থান দেওয়া উচিত, সে কথাও বিবৃত করা হয়। বাংলা সাহিত্য এবং বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে ব্যাখ্যাও ছিল। কিন্তু জিন্নাহ বিষয়গুলোকে অগ্রাহ্য করলেন। এমনকি খাজা নাজিমুদ্দিন সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলেন, সেটিও বাতিল করে দিলেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পাকিস্তান রাষ্ট্রকে লন্ডভন্ড করে দেওয়ার জন্য কমিউনিস্ট ও হিন্দুদের কৌশল বলে তিনি অভিহিত করলেন।
জিন্নাহ ঢাকা ত্যাগ করার পর ৬ এপ্রিল পূর্ব বাংলা ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে খাজা নাজিমুদ্দিন বাংলা ভাষা-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এনেছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, পূর্ব বাংলায় ইংরেজির জায়গায় বাংলা হবে সরকারি ভাষা এবং পূর্ব বাংলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যথাসম্ভব বাংলা হবে শিক্ষার মাধ্যম। কিন্তু সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যে ৮ দফা চুক্তি সই করেছিলেন, তার তৃতীয় ও চতুর্থ দফার কথা তিনি বেমালুম চেপে গেলেন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যে এই চুক্তিভঙ্গের জন্য দায়ী, সেটা না বোঝার কোনো কারণ নেই।
এরপর বেশ কিছুদিন আন্দোলন চলল ঢিমেতালে। তবে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ যে আগুন জ্বলে উঠেছিল, সেই আগুনই দিনটিকে বাঁচিয়ে রাখল ১৯৪৯, ১৯৫০ ও ১৯৫১ সালে রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালন করে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমান বাংলা ভাষাকে ইসলামি ধারায় সংস্কার করা, আরবি হরফে বাংলা লেখা, উর্দু শিক্ষার প্রসার ইত্যাদির ব্যাপারে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিলেন। উর্দুপন্থী বুদ্ধিজীবীরা তখন উর্দুর পক্ষে প্রচার চালাতে থাকেন। ফজলুর রহমান বলেই বসলেন, ‘বাঙালি মুসলমানের ভাষা স্রেফ উর্দুরই একটি রূপান্তর, তাই উর্দু হরফে লিখলে তা উর্দু বলেই মনে হবে।’
বাংলা লেখায় আরবি হরফ প্রবর্তনের চক্রান্ত শুরু হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। ওই সময় জানা যায় যে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা বোর্ড পাকিস্তানের প্রাদেশিক ভাষাগুলোকে আরবি হরফে লেখার সুপারিশ করেছে। এ যে বাংলা লিপি ধ্বংস করার চক্রান্তেরই অংশ, সেটি চাপা থাকল না। এ গোপন চক্রান্তটি ফাঁস হয়েছিল ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মাধ্যমে। সরকার ড. মু. শহীদুল্লাহকে আরবি হরফ প্রবর্তনে সহায়তা করতে অনুরোধ জানালে তিনি সেই চিঠির জবাব সরকারকে না দিয়ে নিজের বক্তব্য প্রেসের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরেন। জনগণ তথা ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী সবাই এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সচেতন হয়ে ওঠেন। শুরু হয় আরবি লিপি প্রবর্তনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর সংগ্রহ, প্রতিবাদসভা ও বিক্ষোভ মিছিল। ওই সময় পূর্ব বাংলা সরকার পূর্ব বাংলা ভাষা কমিটি নামে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করলে তাঁরা বলিষ্ঠভাবে আরবি হরফ প্রবর্তনের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করেন।
১৯৫০ সালে তেমন বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে ১৯৫১ সালে এসে আবার গা-ঝাড়া দিয়ে উঠল আন্দোলন। আগের দুই বছরের মতো সে বছরও ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করে দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি ছাত্রসভা করে। সে সভায় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করা হয় এবং একটি নতুন সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক হন আব্দুল মতিন এবং কমিটির নাম দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি।
কুমিল্লায় পূর্ববঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ অধ্যাপক সম্মেলনে ১৬ মার্চ সভাপতির ভাষণে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলা ভাষা অবহেলিত হইলে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিদ্রোহ করিব।’
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
৩ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪