আব্দুর রাজ্জাক
পৃথিবী পরিবর্তনশীল, সবকিছুরই কিছুটা বিবর্তন ঘটবে, এটা স্বাভাবিক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিবর্তন ঘটবে, সেই সঙ্গে উৎপাদনব্যবস্থা, বিপণনব্যবস্থা সবকিছুরই পরিবর্তন হবে। বর্তমানে আকাশ উন্মুক্ত, এই ইন্টারনেটের যুগে কোথায় কী ঘটছে, কোথায় কী পরিবর্তন হচ্ছে, বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে সেটা পৌঁছে যাচ্ছে অতিদ্রুত। পৃথিবী একটি ‘গ্লোবাল ভিলেজ’-এ পরিবর্তিত হয়েছে।
আমাদের সামাজিক জীবনের অর্থনৈতিক বাণিজ্যেরও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য চলে যাচ্ছে কিছু কিছু করপোরেট হাউসের কাছে। বেশ কয়েক বছর আগেও যেসব প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য আমরা বাজার থেকে কিনতাম, বিভিন্ন রকমের, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের, বলতে গেলে বিভিন্ন স্বাদের, সেগুলো কোন মৌসুমে কোন অঞ্চলেরটা ভালো হবে, তা মোটামুটি সবারই একটা ধারণা থাকত।
বরিশালের বালাম চাল ও মোটা চাল, দিনাজপুরের বিখ্যাত চিকন চাল, সিলেট অঞ্চলের সুগন্ধি চাল, ময়মনসিংহ অঞ্চলের বোরো চাল, কোন মৌসুমে বাজারে উঠবে, তার স্বাদ কেমন হবে, এটা বাংলার মানুষ সবাই জানত। গত কয়েক বছরে সব বদলে গেছে। মিনিকেট, নাজিরশাইল, ব্রি ধান ২৭, ২৮—এ রকম কয়েকটি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়ে যাচ্ছে সব চাল। বড় করপোরেট হাউসগুলো সুন্দর বস্তায় করে এগুলো বাজারে সরবরাহ করছে। এই সব চাল উৎপাদন করছে আমাদের দেশের গরিব কৃষকেরা। বড় বড় করপোরেট হাউস ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কৃষকদের দাদন দিয়ে নিজস্ব ব্র্যান্ডের চাল প্রস্তুত করে তাদেরই সুপার শপে বা নিয়মিত ডিলারের কাছে বিক্রি করছে।
বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন স্বাদের চাল কয়েকটি ব্র্যান্ডের সরু চালে পরিণত করে আমাদের সেই ঐতিহ্যগত খাবারকে বিনষ্ট করেছে, এ কথা এ দেশের সবাই স্বীকার করবেন। এখন শোনা যায়, বাজার অনুসারে মোটা চাল ঘষামাজা করে সরু করা হয় এবং সেই চাল একটি অতি লাভজনক ভোগ্যপণ্যে পরিণত করে বাজারজাত করা হচ্ছে। চাল নিয়ে রীতিমতো চালবাজি চলছে!
ধীরে ধীরে অন্যান্য ভোগ্যপণ্য, যেমন সবজিও নাকি এ রকম করপোরেট হাউসের কাছে চলে যাচ্ছে। বড় বড় সুপার শপের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে বিভিন্ন শাকসবজি তাঁদের ফরমাশ অনুসারে চাষ করিয়ে সেগুলো সুন্দর প্যাকেট করে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। এখানেও একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। ভবিষ্যতে এই কৃষিপণ্য, ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেটের হাত থেকেই আমাদের কিনতে হবে।
এখন দেশে ছোটখাটো বেকারি, বিস্কুট কারখানা দেখা যায় না। বড় বড় কোম্পানি বৃহৎ আকৃতির কারখানা করে এসব বিস্কুট, চানাচুর, চিপসসহ অন্যান্য পণ্য নানা ধরনের নামে ও প্যাকেটে সরবরাহ করছে। বিলীন হতে বসেছে আগের সেই রকমারি সুস্বাদু খাদ্য।
চাল, ডাল, আটা, চিনি, তেলসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা—সবকিছুই এখন বড় বড় করপোরেট হাউসের ব্র্যান্ড নামে, মোড়কজাত প্যাকেটে বাজারজাত হচ্ছে, আমরা সবাই এই সবের কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছি। ছোটখাটো উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা বিলীন হয়ে যাচ্ছেন বড় কয়েকটি করপোরেট হাউসের গর্ভে, বিলীন হতে বসেছে আমাদের চিরাচরিত ভোগ্যপণ্য সরবরাহব্যবস্থা।
এ রকম করপোরেট কালচারের বাজারব্যবস্থা, বিপণনব্যবস্থায় বেকার হয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। লাখ লাখ মানুষ পরিণত হচ্ছে করপোরেট হাউসের কেনা দাসে। দেশের নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষ বাঁধা পড়ে যাচ্ছে ওই সব করপোরেট কালচারে। সবকিছুই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, জীবনযাত্রার মান তেমন বাড়ছে না। প্রশ্ন হলো, সবকিছুরই যদি উন্নতি হয়, আমরা করপোরেট কালচারে চলে যাই, পশ্চিম ইউরোপের দেশের মতো সুপার শপ বা সুপার কালচারে চলে যাই, তাহলে তো আমাদের জীবনব্যবস্থা আরও উন্নত হওয়ার কথা।
আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ কি সে রকম উন্নত জীবনমানের দিকে যাচ্ছে?এত সব উন্নয়ন হচ্ছে, চকচকে কিছু দালানকোঠা, বড় বড় করপোরেট হাউসের রমরমা ব্যবসা প্রসারিত হচ্ছে ঠিকই। কিছু কিছু মানুষের বিদেশি দামি ব্র্যান্ডের পোশাক-পরিচ্ছদসহ জীবনমানের আমূল পরিবর্তন দেখা যায়। গ্রামপর্যায় থেকে উপশহর, শহরেও উন্নয়নের ছোঁয়া যথেষ্ট লেগেছে, দুই-তিন দশকের তুলনায় এখন এই সব উন্নয়ন চোখে দেখার মতো। যোগাযোগব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, সামাজিক-সংস্কৃতিতেও একটা পরিবর্তন ঘটেছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, এই সব পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেটা ঘটা উচিত ছিল—সমাজের বেশির ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার অধিকতর উন্নয়ন। বলা যায়, সার্বিক জনগণের মাঝে সে রকম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
কারণ হলো, আমাদের এই সব বড় বড় করপোরেট হাউস অতি মুনাফা করে। এদের সঙ্গে সংযুক্ত সরবরাহকারী, বিপণনকারী, এদের সাহায্যকারী কৃষক, ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মুনাফা করেন অতিসামান্য। ছোটখাটো ব্যবসায়ী, কৃষক, সরবরাহকারী, জোগানদার ও পরিবহনকারীদের জিম্মি করে ফেলেছে এই সব রাঘববোয়াল।
তাঁরা ঠিকমতো রাজস্ব দেয় না। ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্স, কাস্টমস ডিউটি ফি যদি ঠিকমতো দিত, তাহলে রাষ্ট্র আরও ধনী হতো। সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য নিরসনের ক্ষেত্রে অধিক অর্থ ব্যয় করতে পারত। যেহেতু ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে হাতে গোনা কয়েক শ করপোরেট হাউস, এ ক্ষেত্রে নির্দ্বিধায় বলাই যায় এই হাতে গোনা কয়েক শ মানুষই রাজস্ব না বাড়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়। ছোটখাটো ব্যবসায়ী, কৃষক, সাধারণ মানুষের উন্নতি না হলেও এই সব করপোরেট হাউস দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। তারা ধীরে ধীরে সব পণ্যই তাদের ব্র্যান্ডে পরিণত করে সাধারণ মানুষের গলা কাটছে।
এখন সবার দৃষ্টি রাখা উচিত এখানে—সরকার যা রাজস্ব পাওয়ার কথা এর অর্ধেক পাচ্ছে, বাকি অর্ধেক যারা ছলেবলে কৌশলে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে ফাঁকি দিচ্ছে, তারা সেই অর্থ কোথায় ব্যবহার করছে। যদি কর্মসংস্থান ও কিছু সমাজ উন্নয়ন করে, তাহলে কিছুটা ভালো।
কিন্তু ভয়টা সেখানেই—এই রাজস্ব ফাঁকির অর্থ যদি কিছু কিছু লোকের ভোগবিলাস, বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশে পাচার হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের জীবনমান আরও নিচের দিকে যাবে। আমাদের বাজারব্যবস্থা মাফিয়াতন্ত্রে পরিণত হবে। আমরা সাধারণ মানুষ আশা করব, ব্যবসায়ীরা যেন দেশপ্রেমিক হন। তাঁরা ব্যবসা করবেন সহনীয় পর্যায়ে, সরবরাহ ঠিক রাখবেন, উৎপাদিত পণ্য যেসব কৃষকদের কাছ থেকে কিনবেন, তাঁদের জন্য যথাযথ মূল্য দিয়ে, সঠিক মূল্যে বাজারে সরবরাহ করবেন। রাষ্ট্রের উচিত—এ ব্যাপারটির দিকে নজর রাখা।
লেখক: প্রকৌশলী
পৃথিবী পরিবর্তনশীল, সবকিছুরই কিছুটা বিবর্তন ঘটবে, এটা স্বাভাবিক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিবর্তন ঘটবে, সেই সঙ্গে উৎপাদনব্যবস্থা, বিপণনব্যবস্থা সবকিছুরই পরিবর্তন হবে। বর্তমানে আকাশ উন্মুক্ত, এই ইন্টারনেটের যুগে কোথায় কী ঘটছে, কোথায় কী পরিবর্তন হচ্ছে, বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে সেটা পৌঁছে যাচ্ছে অতিদ্রুত। পৃথিবী একটি ‘গ্লোবাল ভিলেজ’-এ পরিবর্তিত হয়েছে।
আমাদের সামাজিক জীবনের অর্থনৈতিক বাণিজ্যেরও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য চলে যাচ্ছে কিছু কিছু করপোরেট হাউসের কাছে। বেশ কয়েক বছর আগেও যেসব প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য আমরা বাজার থেকে কিনতাম, বিভিন্ন রকমের, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের, বলতে গেলে বিভিন্ন স্বাদের, সেগুলো কোন মৌসুমে কোন অঞ্চলেরটা ভালো হবে, তা মোটামুটি সবারই একটা ধারণা থাকত।
বরিশালের বালাম চাল ও মোটা চাল, দিনাজপুরের বিখ্যাত চিকন চাল, সিলেট অঞ্চলের সুগন্ধি চাল, ময়মনসিংহ অঞ্চলের বোরো চাল, কোন মৌসুমে বাজারে উঠবে, তার স্বাদ কেমন হবে, এটা বাংলার মানুষ সবাই জানত। গত কয়েক বছরে সব বদলে গেছে। মিনিকেট, নাজিরশাইল, ব্রি ধান ২৭, ২৮—এ রকম কয়েকটি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়ে যাচ্ছে সব চাল। বড় করপোরেট হাউসগুলো সুন্দর বস্তায় করে এগুলো বাজারে সরবরাহ করছে। এই সব চাল উৎপাদন করছে আমাদের দেশের গরিব কৃষকেরা। বড় বড় করপোরেট হাউস ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কৃষকদের দাদন দিয়ে নিজস্ব ব্র্যান্ডের চাল প্রস্তুত করে তাদেরই সুপার শপে বা নিয়মিত ডিলারের কাছে বিক্রি করছে।
বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন স্বাদের চাল কয়েকটি ব্র্যান্ডের সরু চালে পরিণত করে আমাদের সেই ঐতিহ্যগত খাবারকে বিনষ্ট করেছে, এ কথা এ দেশের সবাই স্বীকার করবেন। এখন শোনা যায়, বাজার অনুসারে মোটা চাল ঘষামাজা করে সরু করা হয় এবং সেই চাল একটি অতি লাভজনক ভোগ্যপণ্যে পরিণত করে বাজারজাত করা হচ্ছে। চাল নিয়ে রীতিমতো চালবাজি চলছে!
ধীরে ধীরে অন্যান্য ভোগ্যপণ্য, যেমন সবজিও নাকি এ রকম করপোরেট হাউসের কাছে চলে যাচ্ছে। বড় বড় সুপার শপের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে বিভিন্ন শাকসবজি তাঁদের ফরমাশ অনুসারে চাষ করিয়ে সেগুলো সুন্দর প্যাকেট করে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। এখানেও একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। ভবিষ্যতে এই কৃষিপণ্য, ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেটের হাত থেকেই আমাদের কিনতে হবে।
এখন দেশে ছোটখাটো বেকারি, বিস্কুট কারখানা দেখা যায় না। বড় বড় কোম্পানি বৃহৎ আকৃতির কারখানা করে এসব বিস্কুট, চানাচুর, চিপসসহ অন্যান্য পণ্য নানা ধরনের নামে ও প্যাকেটে সরবরাহ করছে। বিলীন হতে বসেছে আগের সেই রকমারি সুস্বাদু খাদ্য।
চাল, ডাল, আটা, চিনি, তেলসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা—সবকিছুই এখন বড় বড় করপোরেট হাউসের ব্র্যান্ড নামে, মোড়কজাত প্যাকেটে বাজারজাত হচ্ছে, আমরা সবাই এই সবের কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছি। ছোটখাটো উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা বিলীন হয়ে যাচ্ছেন বড় কয়েকটি করপোরেট হাউসের গর্ভে, বিলীন হতে বসেছে আমাদের চিরাচরিত ভোগ্যপণ্য সরবরাহব্যবস্থা।
এ রকম করপোরেট কালচারের বাজারব্যবস্থা, বিপণনব্যবস্থায় বেকার হয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। লাখ লাখ মানুষ পরিণত হচ্ছে করপোরেট হাউসের কেনা দাসে। দেশের নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষ বাঁধা পড়ে যাচ্ছে ওই সব করপোরেট কালচারে। সবকিছুই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, জীবনযাত্রার মান তেমন বাড়ছে না। প্রশ্ন হলো, সবকিছুরই যদি উন্নতি হয়, আমরা করপোরেট কালচারে চলে যাই, পশ্চিম ইউরোপের দেশের মতো সুপার শপ বা সুপার কালচারে চলে যাই, তাহলে তো আমাদের জীবনব্যবস্থা আরও উন্নত হওয়ার কথা।
আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ কি সে রকম উন্নত জীবনমানের দিকে যাচ্ছে?এত সব উন্নয়ন হচ্ছে, চকচকে কিছু দালানকোঠা, বড় বড় করপোরেট হাউসের রমরমা ব্যবসা প্রসারিত হচ্ছে ঠিকই। কিছু কিছু মানুষের বিদেশি দামি ব্র্যান্ডের পোশাক-পরিচ্ছদসহ জীবনমানের আমূল পরিবর্তন দেখা যায়। গ্রামপর্যায় থেকে উপশহর, শহরেও উন্নয়নের ছোঁয়া যথেষ্ট লেগেছে, দুই-তিন দশকের তুলনায় এখন এই সব উন্নয়ন চোখে দেখার মতো। যোগাযোগব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, সামাজিক-সংস্কৃতিতেও একটা পরিবর্তন ঘটেছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, এই সব পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেটা ঘটা উচিত ছিল—সমাজের বেশির ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার অধিকতর উন্নয়ন। বলা যায়, সার্বিক জনগণের মাঝে সে রকম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
কারণ হলো, আমাদের এই সব বড় বড় করপোরেট হাউস অতি মুনাফা করে। এদের সঙ্গে সংযুক্ত সরবরাহকারী, বিপণনকারী, এদের সাহায্যকারী কৃষক, ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মুনাফা করেন অতিসামান্য। ছোটখাটো ব্যবসায়ী, কৃষক, সরবরাহকারী, জোগানদার ও পরিবহনকারীদের জিম্মি করে ফেলেছে এই সব রাঘববোয়াল।
তাঁরা ঠিকমতো রাজস্ব দেয় না। ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্স, কাস্টমস ডিউটি ফি যদি ঠিকমতো দিত, তাহলে রাষ্ট্র আরও ধনী হতো। সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য নিরসনের ক্ষেত্রে অধিক অর্থ ব্যয় করতে পারত। যেহেতু ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে হাতে গোনা কয়েক শ করপোরেট হাউস, এ ক্ষেত্রে নির্দ্বিধায় বলাই যায় এই হাতে গোনা কয়েক শ মানুষই রাজস্ব না বাড়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়। ছোটখাটো ব্যবসায়ী, কৃষক, সাধারণ মানুষের উন্নতি না হলেও এই সব করপোরেট হাউস দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। তারা ধীরে ধীরে সব পণ্যই তাদের ব্র্যান্ডে পরিণত করে সাধারণ মানুষের গলা কাটছে।
এখন সবার দৃষ্টি রাখা উচিত এখানে—সরকার যা রাজস্ব পাওয়ার কথা এর অর্ধেক পাচ্ছে, বাকি অর্ধেক যারা ছলেবলে কৌশলে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে ফাঁকি দিচ্ছে, তারা সেই অর্থ কোথায় ব্যবহার করছে। যদি কর্মসংস্থান ও কিছু সমাজ উন্নয়ন করে, তাহলে কিছুটা ভালো।
কিন্তু ভয়টা সেখানেই—এই রাজস্ব ফাঁকির অর্থ যদি কিছু কিছু লোকের ভোগবিলাস, বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশে পাচার হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের জীবনমান আরও নিচের দিকে যাবে। আমাদের বাজারব্যবস্থা মাফিয়াতন্ত্রে পরিণত হবে। আমরা সাধারণ মানুষ আশা করব, ব্যবসায়ীরা যেন দেশপ্রেমিক হন। তাঁরা ব্যবসা করবেন সহনীয় পর্যায়ে, সরবরাহ ঠিক রাখবেন, উৎপাদিত পণ্য যেসব কৃষকদের কাছ থেকে কিনবেন, তাঁদের জন্য যথাযথ মূল্য দিয়ে, সঠিক মূল্যে বাজারে সরবরাহ করবেন। রাষ্ট্রের উচিত—এ ব্যাপারটির দিকে নজর রাখা।
লেখক: প্রকৌশলী
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে