ভাঙা সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪: ৪২
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪: ৪৪

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় দুটি ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝোড়ার ওপর তৈরি একটি কাঠের সেতু জরাজীর্ণ এবং আরেকটি স্টিলের সেতু মরিচা ধরে ভেঙে পড়ে আছে। দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় এ দুটি সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। দ্রুত সেতু দুটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের সাহাতি ঝোড়া (পাহাড়ি পানিপ্রবাহের নালা) নলকুড়া ইউনিয়নের ডাকাবর এলাকা হয়ে ধানশাইল ইউনিয়নের চাপাঝোড়া এলাকায় প্রবেশ করেছে। এ ঝোড়ার ওপর দিয়ে স্থানীয় মোল্লাপাড়ার বাসিন্দাদের চলাচলে প্রায় পাঁচ বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়। বর্তমানে সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে চার বছর আগে ঝিনাইগাতী-রাংটিয়া সড়কের ঝোড়ার ওপর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে একটি স্টিলের সেতু তৈরি করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের কাজ করায় মাত্র দুই বছরেই সেতুটির স্টিলে মরিচা ধরে এক পাশ ভেঙে পড়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই পথে চলাচলকারীরা।

সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের সেতুটি নড়বড়ে ও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নির্মাণ দীর্ঘদিন হওয়ায় সেতুর কাঠের কিছু অংশ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয়রা বাঁশের খুঁটি দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে সেতুটি সচল রেখেছেন। ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা সেতুতে চলাচল করছেন। এদিকে স্টিলের সেতুর পশ্চিম প্রান্ত ভেঙে ঝোড়ার মধ্যে পড়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জহুরুল হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কাঠের সেতু ভেঙে পড়ে আছে, কিন্তু কেউ খোঁজ নেয় না। এখন ঝুঁকি নিয়েই ভয়ে সেতু পার হতে হয়।

বেশি ঝুঁকি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য। জরাজীর্ণ সেতু পার হতে তারা ভয় পায়। এখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।’

আরেক বাসিন্দা মো. আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, ‘স্টিলের সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের যাতায়াতে খুব সমস্যা হচ্ছে। এখন অনেক রাস্তা ঘুরে যেতে হয়।’

কলেজ শিক্ষার্থী মোছা. আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘ভাঙা কাঠের সেতু দিয়ে যাতায়াতে ভয় হয়। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়ে যেতে পারে। সেতুটির ওপর দিয়ে হাঁটলে নড়াচড়া করে। এখানে একটি পাকা সেতু করা প্রয়োজন। একই দাবি জানান শিক্ষার্থী মনোয়ারা খাতুন ও মো. সিয়াম।

ঝিনাইগাতী সদর ইউপির স্থানীয় সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, ‘সেতু দুটি ভাঙা থাকায় ওই এলাকার বাসিন্দারা চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছেন। সেতু দুটি দ্রুত সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক জানান, ওই সড়কের কোনো আইডি নম্বর না থাকায় সেখানে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো যাচ্ছে না। তবে সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত