চুয়াডাঙ্গা রেলগেটে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা। বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে জানুয়ারি ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত।

এদিকে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে যাওয়ায় জেলাবাসীর মাঝে খুশির জোয়ার বইছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জেলা শহরের যানজট কমে আসবে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরের ওপর দিয়ে রেললাইন রয়েছে। প্রতিদিন ১১ জোড়া যাত্রীবাহী ও ৮ থেকে ১০ জোড়া মালবাহী রেল চলাচল করে এ রেললাইন থেকে। এসব রেল চলাচল নির্বিঘ্ন করতে প্রতিদিন ৩৮ থেকে ৪৪ বার রেলগেট বন্ধ রাখা হয়। এতে রেলগেটে যানজট তৈরি হয়।

শুধু চুয়াডাঙ্গাবাসী নন, জেলা শহরের ওপর দিয়ে চলাচলকারী মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ার যাত্রীবাহী যানবাহনও আটকে যায় যানজটে। এ চার জেলার যানবাহন ছাড়াও ঢাকা, খুলনা ও বরিশালের দিক থেকে আসা যানবাহনগুলোও যানজটে আটকা পড়ে। এ জন্য চুয়াডাঙ্গাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, এ স্থানে একটি ওভারপাস নির্মাণের।

জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ৪১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। এর সঙ্গে থাকবে ৩৩০ মিটার সংযোগ সড়ক। এ ছাড়া ওয়াল ও নালা নির্মাণ এবং ২ হাজার মিটার সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা। বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে জানুয়ারি ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত।

ট্রাকচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আমাদের দীর্ঘ দিনের মনের আশা পূরণ হবে। এ রেলগেটের কারণে আমাদের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। আমরা খুশি, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি পূরণ করছেন।’

চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের মাস্টার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা রেলগেটে ওভারপাসের প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে। আমাদের কাছেও এটি একটি ঝামেলাপূর্ণ গেট ছিল। এবার সব সমস্যার সমাধান হবে।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মাহবুব হোসেন মেহেদী বলেন, ‘জেলাবাসীর সব থেকে বড় দুর্ভোগ ছিল এ রেল গেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দাবি পূরণ করছেন।’

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘সত্যিই এবার একটি বড় সমস্যার সমাধান হবে। একনেকে অনুমোদনের খবরই যেন আমাদের জন্য মহা আনন্দের বিষয়। ’

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি এখানে আসার পর থেকেই এ সমস্যা সমাধান নিয়ে কাজ করছি। খোঁজ খবর নিচ্ছি।’