Ajker Patrika

তবু বন্ধ সেতু নির্মাণকাজ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ০৯
তবু বন্ধ সেতু নির্মাণকাজ

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের অজুহাত দেখিয়ে কুড়িগ্রামের সদর উপজেলায় ধরলা সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। ঠিকাদারের অভিযোগ, দুই দফায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনার কপি এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার পরও নির্বাহী প্রকৌশলী নির্মাণকাজ শুরু করতে দিচ্ছেন না। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে জনগণকে।

গত ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ একটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত এক মাসের জন্য স্থগিত করেন। একই সঙ্গে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে কেন কাজ চলমান রাখার নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানাতে চার সপ্তাহ সময় দিয়ে রুল জারি করা হয়। রুলে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। এরপর ১৬ নভেম্বর এই আদেশের সময়সীমা আরও তিন মাসের জন্য বাড়ানোর আদেশ দেন আদালত। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা প্রায় দুই মাস পার হলেও এখনো ব্রিজ নির্মাণকাজ স্থগিত রয়েছে।

২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ধরলা নদীর ওপর ৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়। বসুন্ধরা অ্যান্ড আবুবকর (জেভি) নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায়। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে কাজ শুরু করেন এর ক্ষমতাপ্রাপ্ত (অথরাইজ) স্বত্বাধিকারী মো. গোলাম রব্বানী। কিন্তু ঠিকাদারের সঙ্গে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের চুক্তি বাতিলের আইনি জটিলতায় সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এলজিইডি কুড়িগ্রাম কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করায় এবং বারবার চিঠি দিয়ে কাজ শুরু না করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখায় মূল ঠিকাদারের সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়ায় চুক্তি বাতিল করা হয়।

এদিকে ভুক্তভোগী ঠিকাদারের অভিযোগ, নকশা পরিবর্তন, ক্যালকুলেশনসহ বিভিন্ন কারণে এলজিইডি নির্মাণকাজ স্থগিত করে সময়ক্ষেপণ করা হয়। পরে সময় বাড়িয়ে কাজ শুরু করা হয় এবং প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়। কিন্তু করোনা মহামারির সময় নানা কারণে নির্মাণকাজে কিছুটা ধীরগতি তৈরি হয়। বিষয়টি এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়। কিন্তু তারা একতরফা সিদ্ধান্তে চুক্তি বাতিল করে।

ঠিকাদার গোলাম রব্বানী বলেন, ‘এলজিইডি কর্তৃপক্ষের চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমি উচ্চ আদালতে রিট করি। আদালত এলজিইডির চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে দুই দফায় চার মাসের জন্য স্থগিত করেন। এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে আদালতের আদেশের কপি এবং কাজ শুরু করার আবেদন করে আমি পুনরায় নির্মাণকাজ শুরু করি। কিন্তু এলজিইডি কর্তৃপক্ষ পুলিশ পাঠিয়ে আমার কাজ বন্ধ করে দেয়। আদালতের আদেশের কপি দিলেও তারা শুনতে রাজি হয়নি। আর চুক্তি বাতিল করলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’

সময়মতো কাজ শেষ না করার যে অভিযোগে চুক্তি বাতিল করা হয়, নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শেষ করতে অনেক বেশি সময় লাগবে বলে তিনি দাবি করেন।

আদালতের নির্দেশনার পরও কাজ করতে না দেওয়া আদালত অবমাননার শামিল বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সাবেক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুর রহমান দুলু।

জানতে চাইলে এলজিইডি, কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান বলেন, ‘গোলাম রব্বানী ওই কাজের ঠিকাদার নন। তাঁর সঙ্গে আমাদের চুক্তি নেই।’

তবে ঠিকাদার গোলাম রব্বানী দাবি করেন, ক্ষমতাপ্রাপ্ত স্বত্বাধিকারী হওয়ায় সেতু নির্মাণকাজের কাগজপত্রে তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে। এই কাজ দেখে ব্যাংক ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা লোন দিয়েছে।

এলজিইডির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। আপিল আবেদনটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘আমার জানা নেই।’ তবে এ নিয়ে কথা বলতে তাঁর কার্যালয়ে আসতে বলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত