নারায়ণগঞ্জ শহরে সন্ধ্যার পর থেকে চলছে মশার উপদ্রব। অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে বাসিন্দাদের জনজীবন। গত এক সপ্তাহে উপদ্রব এতটাই বেড়েছে যে নগরবাসী রীতিমতো আতঙ্কিত। তবে সিটি করপোরেশন ধারাবাহিকভাবে তাদের মশকনিধন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তবুও পুরোপুরি সুফল পাচ্ছে না বাসিন্দারা।

শহরের পাইকপাড়া, নিতাইগঞ্জ, দেওভোগ, বাবুরাইল, জল্লারপাড় ও মাসদাইর এলাকার বাসিন্দারা জানান, মশার উপদ্রবে রাতে ঠিকভাবে কাজকর্ম চালানো কঠিন হয়ে উঠেছে। বিকেল থেকে দরজা জানালা বন্ধ রেখেও নিস্তার মিলছে না। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে বেশি বিপাকে অভিভাবকেরা। নগরবাসী বলছেন, সিটি করপোরেশন থেকে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হয়। তা-ও নিয়মিত নয়। ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের।

নগরীর নিতাইগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আরিয়ানা বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে মশার কামড়ে এক স্থানে বেশি সময় বসে থাকা যায় না। সারাক্ষণ শরীরের খোলা স্থানে কামড়ে ফুলিয়ে দিচ্ছে। প্রতিবছর এই মার্চে মশা বেড়ে যায়। গত এক সপ্তাহে ব্যাপক হারে মশা বেড়েছে।’

শহরের ভূঁইয়ারবাগ এলাকার বাসিন্দা কবির বলেন, ‘মশার কামড়ে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমার পরিবারের অনেকের শরীরে বিভিন্ন স্থানে অ্যালার্জির মতো গোটা হয়ে গেছে।’

তবে মশার কামড়ে যখন নগরবাসী অতিষ্ঠ, তখন নতুন সুসংবাদ দিল সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ। ১৩ মার্চ থেকে সিটি করপোরেশনজুড়ে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলবে। এতে মশার প্রকোপ কমে আসার পাশাপাশি বংশবিস্তার রোধ হবে বলে আশবাদ প্রকাশ করেছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি ওয়ার্ডে মশকনিধন কার্যক্রম চলমান। প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচজন মশকনিধনকর্মী আছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন ফগার মেশিন দিয়ে এবং তিনজন হ্যান্ডস্প্রে দিয়ে ওষুধ ছিটান। আগামী রোববার থেকে মশকনিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু হবে—বিশেষ টিম মাঠে নামবে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা আলমগীর হিরন বলেন, ‘আমরাও নিয়মিত কার্যক্রম চলমান রেখেছি। বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়ির আঙ্গিনাসহ ড্রেন, জলাশয় ও নর্দমায় ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই আমরা সিটি করপোরেশন এলাকাকে কয়েকটি গ্রেডে ভাগ করে ওষুধ ছিটানো কার্যক্রম পরিচালনা করব। তার আগে মশার হটস্পটগুলো শনাক্ত করা হবে।’