Ajker Patrika

বিদেশে বসে চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী সাজ্জাদের

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২, ১১: ৪৩
বিদেশে বসে চাঁদাবাজি  সন্ত্রাসী সাজ্জাদের

ইন্টারনেট কিংবা বিদেশি নম্বর থেকে হঠাৎ একটি ফোন আসে। রিসিভ করতেই ওপার থেকে সালাম দিয়ে বলেন, ‘আমি এইট মার্ডারের সাজ্জাদ বলছি। আপনি অমুক জায়গায় বাড়ির কাজ শুরু করেছেন কিংবা অমুক জায়গায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছেন। আমার জন্য এত টাকা পাঠাতে হবে।’ পরে বেঁধে দেওয়া সময়ে দাবি করা টাকা দিলে ঝামেলা শেষ, আর না দিলেই বিপদ।

পরোয়ানা নিয়ে ভারতে পালিয়ে থাকা চট্টগ্রামের এইট মার্ডারের আলোচিত সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খানের টেলিফোনে চাঁদাবাজির ধরনটা এমনই বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বিভিন্ন সময় বিদেশে বসে চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির কলকাঠি নাড়ছেন এই সন্ত্রাসী। থানায় কোনো মামলার পরই এসব আলোচনায় আসে।

জানা গেছে, চাঁদা না পেলে টার্গেট ব্যক্তির বাসস্থান কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গুলি কিংবা পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এরপর আবার ফোন আসে টার্গেট ব্যক্তির মোবাইলে। বলা হয় পরেরবার তোর বুকে গুলি করা হবে। এ সময় আবার সময় বেঁধে দিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হয়। তাতে অনেকে প্রাণের ভয়ে টাকা দিয়ে ঝামেলা এড়িয়ে যান। আবার কেউ কেউ সাহস করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারস্থ হন।

এক যুগের বেশি সময় বিদেশে আত্মগোপন থাকা চট্টগ্রামে এসব চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে সাজ্জাদ হোসেন খানের বিরুদ্ধে। তাঁর নামে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে।

সর্বশেষ, গত ১৭ ও ১৮ জুলাই তানভীর আলম নামের এক ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোনে বিদেশ থেকে শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ পরিচয়ে চাঁদা দাবি করা হয়। তানভীর চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ২০ জুলাই গভীর রাতে কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।

এ ঘটনায় বায়েজিদ থানায় মামলার পর গত ২৬ জুলাই মোবারক ও জিসান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়ার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। পরে গত ৩ আগস্ট সাজ্জাদের অন্যতম সহযোগী বেলাল উদ্দিন মুন্না ও নাজিম উদ্দিন হিরুকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর ও পশ্চিম) মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের অন্যতম সহযোগী বেলাল উদ্দিন মুন্না ও নাজিম উদ্দিন হিরু। এরা মূলত সাজ্জাদের হয়ে আড়ালে থেকে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে এ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সাজ্জাদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ শোনা গেলেও বেশির ভাগ ভুক্তভোগী থানায় মামলা করতে আসেন না। সমঝোতা করে টাকা পরিশোধ করে দেন। চাঁদা না দিলে যখন হামলার ঘটনা ঘটে, তখন আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন।’

২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রামে ৬ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীসহ আটজনকে হত্যার ঘটনায় নিম্ন আদালতে ফাঁসির দণ্ড পেয়েছিলেন সাজ্জাদ। পরে উচ্চ আদালত থেকে এ মামলায় খালাস পান। মূলত তখন থেকেই আলোচিত শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ও রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড়

বাংলাদেশের ১৮ বছরের সেই অপেক্ষা তবে ফুরোচ্ছে

খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে সিঁধ কেটে চুরির সময় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ

জুলাই আন্দোলনের নারীদের সম্মাননা নিয়ে প্রশ্নে যা বলল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

চোর সন্দেহে যুবককে পিটুনি, প্রতিবাদ করায় দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত