আবু সাইম, ঢাকা
জমি কীভাবে ঠিকঠাক মাপা যায়, সেসব শিখতে হবে। শিখে এসে শেখাতেও হবে। এ জন্য ৫০ জনের একটি দলকে বিদেশে পাঠানো দরকার। এর মধ্যে ১০ কর্মকর্তা যাবেন ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ডে, যাঁদের বিশেষায়িত এ শিক্ষা বা প্রশিক্ষণে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বাকিরা যাবেন ভারতে, অথচ তাঁদের জন্য দেশেও এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে।
প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ করে এসব কর্মকর্তার বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে। ডলার বাঁচাতে সরকার যখন মরিয়া, অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর চূড়ান্ত পর্যায়ে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, তখনই দেওয়া হয়েছে এমন প্রস্তাব।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বিদেশ সফরের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। সেখানে এত বড় বহরের বিদেশ সফরের যৌক্তিকতা ভেবে দেখা উচিত। তা ছাড়া যেসব দেশে প্রশিক্ষণের কথা বলা হচ্ছে, সেসব দেশের জ্ঞান আমাদের দেশে কাজে লাগবে কি না দেখতে হবে? যাঁদের প্রশিক্ষণে যাওয়ার কথা, তাঁদের জ্ঞান প্রকল্পে কতটুকু কাজে লাগবে, তা–ও দেখতে হবে।’
‘বাংলাদেশে ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন’ শীর্ষক মেয়াদহীন প্রকল্পে বিদেশ সফরের আয়োজন করার চেষ্টা চলছে। চার বছর আগে নেওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুনে। প্রকল্পের কাজ এখনো খুব একটা এগোয়নি। অথচ সেই প্রকল্পে বিদেশ সফরের জন্য আগের চেয়ে বাড়তি খরচ দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে নতুন নতুন কাজ। অচল এ প্রকল্পে বাড়তি সময় ও অর্থ দাবির পাশাপাশি সাড়ে ৩ কোটি টাকার দেশে প্রশিক্ষণ, দেড় কোটি টাকায় পুকুর খনন, আড়াই কোটি টাকার গাড়িসহ বিভিন্ন খাতে বাড়তি ব্যয়ের আবদারও জানানো হয়েছে।
২০১৮ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের জুনে। শুরুতে ব্যয় ধরা ছিল ২৭৯ কোটি টাকা। এরপর এক দফা বাড়ানো মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুনে। এখন বাড়তি মেয়াদ শেষে আরও তিন বছর সময় এবং প্রায় ২৯ শতাংশ বা ৮১ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে ব্যয় দাঁড়াবে ৩৬০ কোটি টাকা।
তবে সংশোধনীর মাধ্যমে অবাধ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকারের পরিকল্পনা কমিশন। গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত মূল্যায়ন কমিটির সভায় (পিইসি) প্রকল্প ব্যয়সহ বেশ কিছু খাতের কাজ ও ব্যয় কমানোর কথা বলেছে। যদিও প্রকল্প পরিচালক বলছেন, প্রকল্পে যে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা যুক্তিযুক্ত। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশ সফর, গাড়ি কেনা বাবদ অপচয়, প্রকল্প ঝুলিয়ে রেখে রেট শিডিউল পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে দাম বাড়ানোর পথ বন্ধ করতে হবে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, দেশে-বিদেশে ভবিষ্যতের শ্রমবাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমি জরিপ খাতে উচ্চ মানের কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনশক্তি বৃদ্ধিতে ৫টি টেকনোলজিতে বিশেষায়িত কোর্স চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চার বছর মেয়াদি এসব ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বছরে ২ হাজার দক্ষ সার্ভেয়ার তৈরি হবে। এ জন্য কুমিল্লা, পটুয়াখালী, রাজশাহী ও যশোরে চারটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান ও সেগুলোর অবকাঠামো তৈরি হবে এ প্রকল্পে।
বিদেশ কারা যাবেন, কোথায় যাবেন, ব্যয় কত?
জানা গেছে, শিক্ষক, প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা মিলে জরিপের জ্ঞান নিতে মোট ৫০ জনকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে। এর মধ্যে সার্ভে ইনস্টিটিউটের ৪০ জন প্রশিক্ষকের জন্য ভারতে টিওটি (ট্রেইনিং অব ট্রেইনার্স) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তাঁরা হয়তো দেশে ফিরে এ-সংক্রান্ত শিক্ষায় যুক্ত হতে পারেন। এর বাইরে যাঁদের বিশেষায়িত এ শিক্ষা বা প্রশিক্ষণে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে, তেমন ১০ কর্মকর্তারা যাবেন ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ডে। এই তালিকায় থাকবেন কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা, পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) কর্মকর্তা, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সার্ভে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিটের কর্মকর্তা (পিআইইউ)।
শুরুতে সবার জন্য ভারতসহ এশিয়ার কোনো দেশে প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছিল। কর্মকর্তাদের ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার বিষয়টি নতুন করে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া, আগে বিদেশে প্রশিক্ষণ খাতে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা রাখা হয়েছিল। সংশোধনীতে নতুন করে আরও ৯০ লাখ টাকার আবদার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে খরচ চাওয়া হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, বিদেশ সফর বাদ দেওয়ার বিষয়টি এর আগে গত জানুয়ারিতে প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভায়ও আলোচনা ওঠে। সভার সভাপতি কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব আমিনুল ইসলাম খান, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিদেশের পরিবর্তে দেশে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করেন। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ অন্যদের চাওয়ায় বিদেশ সফর বাদ দেওয়া যায়নি।
এ বিদেশ সফর নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, দেশে এরই মধ্যে সরকারি ৫০টি পলিটেকনিক ও ইনস্টিটিউটে এ বিষয়ে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা চলমান রয়েছ। বিদ্যমান দুটি সার্ভে ইনস্টিটিউটেও এ বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে।শুরুতে দেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলেও এখন দেশে প্রশিক্ষণের জন্যও প্রকল্পে সাড়ে ৩ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
সংশোধিত প্রস্তাবের ওপর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগমের সভাপতিত্বে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয় গত জুলাইয়ে। এতে কমিশন বলছে, প্রয়োজন হলে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের (এক্সিকিউটিভ লেভেল) বাদ দিয়ে মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের ও প্রশিক্ষকদের বিদেশে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তবে এ খাতে বাড়তি ব্যয় করা যাবে না।
সংশোধিত প্রস্তাবে নতুন করে ৮১ কোটি টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। পিইসি সভায় বিভিন্ন খাতের ব্যয় কমাতে বলা হয়। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর আগের চেয়েও ২০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১০১ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয়ের প্রস্তাব করছে।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাইরে প্রশিক্ষণের দরকার আছে। আমাদের দেশের চেয়ে ইন্ডিয়া অনেক এগিয়ে। তাই প্রশিক্ষকদের ইন্ডিয়ায় পাঠানো হবে।’
আর কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের যৌক্তিকতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘এ জন্য একটা ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ কমিটি করা হয়েছে। কমিটি থেকে যা সুপারিশ করা হয়েছে, তা-ই প্রকল্পে প্রস্তাব করা হয়েছে।’
দেড় কোটি টাকার পুকুর
প্রকল্পের আওতায় সার্ভে ইনস্টিটিউটের জন্য পুকুরবিলাসের প্রস্তাবও রাখা হয়। চার প্রতিষ্ঠানে চারটি পুকুর খননে শুরুতে ৯৬ লাখ টাকার প্রস্তাব ছিল, সংশোধনীতে তা আরও বাড়িয়ে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে।
গাড়িবিলাস
প্রকল্পের জন্য ৫টি গাড়ি কেনার কথা বলা হয়েছে, মোট ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার মধ্যে। একটি এসইউভি (জিপ), চারটি মাইক্রোবাস। নতুন গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণেও ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। এ ছাড়া জ্বালানি খাতে মেরামতে পৌনে ৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে গাড়ির পেছনে ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। এরই মধ্যে একটি গাড়ি কেনাও হয়েছে। বাকি গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয়তা বুঝে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে কেনার পরামর্শ দিয়েছে পিইসি।
জমি কীভাবে ঠিকঠাক মাপা যায়, সেসব শিখতে হবে। শিখে এসে শেখাতেও হবে। এ জন্য ৫০ জনের একটি দলকে বিদেশে পাঠানো দরকার। এর মধ্যে ১০ কর্মকর্তা যাবেন ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ডে, যাঁদের বিশেষায়িত এ শিক্ষা বা প্রশিক্ষণে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বাকিরা যাবেন ভারতে, অথচ তাঁদের জন্য দেশেও এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে।
প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ করে এসব কর্মকর্তার বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে। ডলার বাঁচাতে সরকার যখন মরিয়া, অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর চূড়ান্ত পর্যায়ে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, তখনই দেওয়া হয়েছে এমন প্রস্তাব।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বিদেশ সফরের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। সেখানে এত বড় বহরের বিদেশ সফরের যৌক্তিকতা ভেবে দেখা উচিত। তা ছাড়া যেসব দেশে প্রশিক্ষণের কথা বলা হচ্ছে, সেসব দেশের জ্ঞান আমাদের দেশে কাজে লাগবে কি না দেখতে হবে? যাঁদের প্রশিক্ষণে যাওয়ার কথা, তাঁদের জ্ঞান প্রকল্পে কতটুকু কাজে লাগবে, তা–ও দেখতে হবে।’
‘বাংলাদেশে ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন’ শীর্ষক মেয়াদহীন প্রকল্পে বিদেশ সফরের আয়োজন করার চেষ্টা চলছে। চার বছর আগে নেওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুনে। প্রকল্পের কাজ এখনো খুব একটা এগোয়নি। অথচ সেই প্রকল্পে বিদেশ সফরের জন্য আগের চেয়ে বাড়তি খরচ দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে নতুন নতুন কাজ। অচল এ প্রকল্পে বাড়তি সময় ও অর্থ দাবির পাশাপাশি সাড়ে ৩ কোটি টাকার দেশে প্রশিক্ষণ, দেড় কোটি টাকায় পুকুর খনন, আড়াই কোটি টাকার গাড়িসহ বিভিন্ন খাতে বাড়তি ব্যয়ের আবদারও জানানো হয়েছে।
২০১৮ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের জুনে। শুরুতে ব্যয় ধরা ছিল ২৭৯ কোটি টাকা। এরপর এক দফা বাড়ানো মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুনে। এখন বাড়তি মেয়াদ শেষে আরও তিন বছর সময় এবং প্রায় ২৯ শতাংশ বা ৮১ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে ব্যয় দাঁড়াবে ৩৬০ কোটি টাকা।
তবে সংশোধনীর মাধ্যমে অবাধ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকারের পরিকল্পনা কমিশন। গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত মূল্যায়ন কমিটির সভায় (পিইসি) প্রকল্প ব্যয়সহ বেশ কিছু খাতের কাজ ও ব্যয় কমানোর কথা বলেছে। যদিও প্রকল্প পরিচালক বলছেন, প্রকল্পে যে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা যুক্তিযুক্ত। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশ সফর, গাড়ি কেনা বাবদ অপচয়, প্রকল্প ঝুলিয়ে রেখে রেট শিডিউল পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে দাম বাড়ানোর পথ বন্ধ করতে হবে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, দেশে-বিদেশে ভবিষ্যতের শ্রমবাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমি জরিপ খাতে উচ্চ মানের কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনশক্তি বৃদ্ধিতে ৫টি টেকনোলজিতে বিশেষায়িত কোর্স চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চার বছর মেয়াদি এসব ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বছরে ২ হাজার দক্ষ সার্ভেয়ার তৈরি হবে। এ জন্য কুমিল্লা, পটুয়াখালী, রাজশাহী ও যশোরে চারটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান ও সেগুলোর অবকাঠামো তৈরি হবে এ প্রকল্পে।
বিদেশ কারা যাবেন, কোথায় যাবেন, ব্যয় কত?
জানা গেছে, শিক্ষক, প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা মিলে জরিপের জ্ঞান নিতে মোট ৫০ জনকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে। এর মধ্যে সার্ভে ইনস্টিটিউটের ৪০ জন প্রশিক্ষকের জন্য ভারতে টিওটি (ট্রেইনিং অব ট্রেইনার্স) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তাঁরা হয়তো দেশে ফিরে এ-সংক্রান্ত শিক্ষায় যুক্ত হতে পারেন। এর বাইরে যাঁদের বিশেষায়িত এ শিক্ষা বা প্রশিক্ষণে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে, তেমন ১০ কর্মকর্তারা যাবেন ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ডে। এই তালিকায় থাকবেন কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা, পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) কর্মকর্তা, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সার্ভে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিটের কর্মকর্তা (পিআইইউ)।
শুরুতে সবার জন্য ভারতসহ এশিয়ার কোনো দেশে প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছিল। কর্মকর্তাদের ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার বিষয়টি নতুন করে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া, আগে বিদেশে প্রশিক্ষণ খাতে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা রাখা হয়েছিল। সংশোধনীতে নতুন করে আরও ৯০ লাখ টাকার আবদার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে খরচ চাওয়া হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, বিদেশ সফর বাদ দেওয়ার বিষয়টি এর আগে গত জানুয়ারিতে প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভায়ও আলোচনা ওঠে। সভার সভাপতি কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব আমিনুল ইসলাম খান, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিদেশের পরিবর্তে দেশে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করেন। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ অন্যদের চাওয়ায় বিদেশ সফর বাদ দেওয়া যায়নি।
এ বিদেশ সফর নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, দেশে এরই মধ্যে সরকারি ৫০টি পলিটেকনিক ও ইনস্টিটিউটে এ বিষয়ে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা চলমান রয়েছ। বিদ্যমান দুটি সার্ভে ইনস্টিটিউটেও এ বিষয়ে পড়ানো হচ্ছে।শুরুতে দেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলেও এখন দেশে প্রশিক্ষণের জন্যও প্রকল্পে সাড়ে ৩ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
সংশোধিত প্রস্তাবের ওপর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগমের সভাপতিত্বে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয় গত জুলাইয়ে। এতে কমিশন বলছে, প্রয়োজন হলে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের (এক্সিকিউটিভ লেভেল) বাদ দিয়ে মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের ও প্রশিক্ষকদের বিদেশে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তবে এ খাতে বাড়তি ব্যয় করা যাবে না।
সংশোধিত প্রস্তাবে নতুন করে ৮১ কোটি টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। পিইসি সভায় বিভিন্ন খাতের ব্যয় কমাতে বলা হয়। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর আগের চেয়েও ২০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১০১ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয়ের প্রস্তাব করছে।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাইরে প্রশিক্ষণের দরকার আছে। আমাদের দেশের চেয়ে ইন্ডিয়া অনেক এগিয়ে। তাই প্রশিক্ষকদের ইন্ডিয়ায় পাঠানো হবে।’
আর কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের যৌক্তিকতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘এ জন্য একটা ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ কমিটি করা হয়েছে। কমিটি থেকে যা সুপারিশ করা হয়েছে, তা-ই প্রকল্পে প্রস্তাব করা হয়েছে।’
দেড় কোটি টাকার পুকুর
প্রকল্পের আওতায় সার্ভে ইনস্টিটিউটের জন্য পুকুরবিলাসের প্রস্তাবও রাখা হয়। চার প্রতিষ্ঠানে চারটি পুকুর খননে শুরুতে ৯৬ লাখ টাকার প্রস্তাব ছিল, সংশোধনীতে তা আরও বাড়িয়ে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে।
গাড়িবিলাস
প্রকল্পের জন্য ৫টি গাড়ি কেনার কথা বলা হয়েছে, মোট ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার মধ্যে। একটি এসইউভি (জিপ), চারটি মাইক্রোবাস। নতুন গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণেও ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। এ ছাড়া জ্বালানি খাতে মেরামতে পৌনে ৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে গাড়ির পেছনে ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। এরই মধ্যে একটি গাড়ি কেনাও হয়েছে। বাকি গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয়তা বুঝে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে কেনার পরামর্শ দিয়েছে পিইসি।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
৩ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪