Ajker Patrika

কম ফলনে দাম চড়া

আনিসুল হক জুয়েল, দিনাজপুর
আপডেট : ৩০ মে ২০২২, ২২: ৩২
কম ফলনে দাম চড়া

দিনাজপুরে গত এক সপ্তাহে জমে উঠেছে লিচুর বাজার। শহরের গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানের অস্থায়ী লিচুর বাজার ক্রেতা-বিক্রেতার দরদামে সরগরম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিরতিহীন চলছে বিকিকিনি। তবে এ বছর বৈরী আবহাওয়ায় ফলন কম এবং নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লিচুর দামও বেড়েছে। তাই গত 
কয়েক বছরের তুলনায় এবার দাম চড়া।

জানা গেছে, গত সপ্তাহ থেকে দিনাজপুরের বাজারে উঠতে শুরু করেছে মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচু। বড় মাঠের পাইকারি বাজার ছাড়াও বরাবরের মতো শহরের বাহাদুর বাজার, হাসপাতাল মোড়, থানার মোড়ে লিচুর কেনাবেচা হয়।

বাজারের অধিকাংশই মাদ্রাজি লিচু। তবে চায়না থ্রি, বোম্বাই, বেদানা, হরিয়ানাসহ সব লিচুরই দেখা মিলছে কম-বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী জেলায় ৫ হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে লিচুবাগান রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার ৪১৮টি। এর মধ্যে বোম্বাই লিচু ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে, মাদ্রাজি ১ হাজার ১৬৬, চায়না থ্রি ৭০২ দশমিক ৫, বেদানা ২৯৪ দশমিক ৫, কাঁঠালি ২১ হেক্টর এবং মোজাফফরপুরী লিচু ১ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। আর বসতবাড়ির উঠানসহ বাগানগুলোতে লিচুগাছ রয়েছে ৭ লক্ষাধিক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. খালেদুর রহমান বলেন, সারা দেশে কম-বেশি লিচু উৎপাদন হলেও দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা বেশি। এবারে হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক ৩ মেট্রিক টন লিচুর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর জেলায় ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

গোর-এ-শহীদ মাঠে পাইকারি লিচুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকেই ভ্যান, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে আড়তে লিচু নিয়ে আসছেন চাষিরা।

ঝুড়িতে সবুজ পাতার বিছানায় মুড়িয়ে চটের ঢাকনা দেওয়া হচ্ছে। ঝুড়ির গায়ে লেখা হচ্ছে ঠিকানা। লিচু উঠছে ট্রাকে। ছুটছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে।

পাইকারি বাজারে প্রতি ১ হাজার মাদ্রাজি লিচু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। আর চায়না থ্রি লিচুর সাইজ ও কোয়ালিটি ভেদে প্রতি হাজার বিক্রি হচ্ছে ১৩ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা, বেদানা ৪ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা দরে। এ ছাড়া বোম্বাই লিচু প্রতি হাজার ১ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে 
বিক্রি হচ্ছে।

বড় মাঠের ফল ব্যবসায়ীরা জানান, সারা দেশে দিনাজপুরের লিচুর কদর বেশি। তাই ক্রেতাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নজরও এ লিচুতে থাকে বেশি। এবার একে তো ফলন কম, আবার সব জিনিসের দাম বেশি। শ্রমিক খরচ থেকে পরিবহন সবকিছুর দাম চড়া। আর এর প্রভাব লিচুর দামেও পড়েছে। গত দু-তিন বছর রমজান, আবার করোনার কারণে লিচুতে ব্যবসায়ীরা তেমন লাভ করতে পারেননি। এ বছর তাঁরা কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন।

লিচু ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগে কালীতলায় ঘিঞ্জি পরিবেশে ক্রেতারা দেখেশুনে লিচু কিনতে পারতেন না। করোনায় গত দুই বছর থেকে বড় মাঠে বাজার স্থানান্তর করায় খোলামেলা পরিবেশে ক্রেতারা দেখেশুনে লিচু কিনতে পারছেন। তবে দামের কারণে স্থানীয় ক্রেতারা লিচু কম কিনছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত