ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ০৪
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ২৮

কয়েক দিন ধরে তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এ ছাড়া ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ।

প্রতিদিনই বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের রোগীর সংখ্যা। এতে ওষুধের দোকান, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে রোগীর ভিড়। আবার কেউ ছুটছেন সদরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এসব রোগে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, গেল সপ্তাহে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। আর এতে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া। তবে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, আগের চেয়ে বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এ ছাড়া যাঁরা বেশি আক্রান্ত, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

চিকিৎসকদের মতে, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ বয়োজ্যেষ্ঠরা। বিশেষ করে সন্ধ্যা ও ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসের কারণে এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা। ফলে ওষুধের দোকান, কমিউনিটি ক্লিনিক কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে ছুটছেন অনেকে।

কেউ সেরে উঠলেও যাঁদের নিরাময়ে সময় লাগছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শে ভর্তি হচ্ছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। আবার যাঁদের অবস্থা বেশি খারাপ; তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পৌরশহরের চণ্ডীবের গ্রামের বাদল মিয়া জানান, কয়েক দিন ধরে তিনি জ্বর, সর্দির সঙ্গে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। ফলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে তিনি এসেছেন।

চিকিৎসা নিতে আসা চণ্ডীবের গ্রামের আরেক নারী জানান, তাঁর দুই বছর বয়সী শিশুর হঠাৎ ঠান্ডা লেগেছে। নাক দিয়ে শ্বাস নিতে পারছে না। তাই হাসপাতালে এসেছেন।

শহরে বসবাসকারী শিমুলকান্দি গ্রামের বয়স্ক মজিবুর বলেন, কয়েক দিন ধরে তাঁর এক বছর বয়সী নাতি সর্দি-কাশিতে ভুগছে। পরে হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খোরশেদ আলম জানান, শীত মৌসুমে ঠান্ডাজনিত কারণে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনই ঠান্ডা জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অনেকে চিকিৎসা নিতে আসছেন। এসব রোগীর মধ্যে চার বছর থেকে দেড়-দুই বছরের শিশুর সংখ্যাই বেশি। তবে এদের মধ্যে এক বছরের নিচে যে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে, তারা ঝুঁকিতে রয়েছে। শীতে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে ভালোভাবে চিকিৎসা এবং নিয়মিত সেবাযত্ন পেলে পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবে।

শিশু কিংবা বয়োজ্যেষ্ঠদের সবসময় গরম কাপড় পরে থাকতে হবে। ঠান্ডার কারণে যদি কেউ ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত