কর্মিসভায় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইলেন চার এমপি

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২২, ১৪: ২৭

রাজবাড়ী জেলা পরিষদের নির্বাচন ১৭ অক্টোবর। নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কর্মিসভা হয়েছে। সভায় রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিম, রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ওই কর্মিসভায় সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাওয়ার অভিযোগ করেছেন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী দীপক কুন্ডু।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গোয়ালন্দ পৌরসভা মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের কর্মিসভা হয়। এ সময় গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ, জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী দীপক কুন্ডু জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন। দীপক কুন্ডু বলেন, ‘গোয়ালন্দে আওয়ামী লীগের কর্মিসভার নামে দলীয় নেতা-কর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ডেকে সংসদ সদস্যরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তাঁদের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আমি অভিযোগে জানিয়েছি।’

কর্মিসভায় সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন বলেন, ‘তালগাছ পরিবেশবান্ধব মার্কা। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে রাজবাড়ীর পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করবেন। আমরা যেন সংসদে আপাকে (শেখ হাসিনা) বলতে পারি, আপনার মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। সে জন্য আপনারা এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ ভাইকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’

আরেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা বলেন, ‘আমরা আজ এখানে এসেছি জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ ভাইয়ের পক্ষে কথা বলতে। গোয়ালন্দ উপজেলায় ৬৮টি ভোটার যদি সত্যিকারের আওয়ামী লীগ করেন, তাঁদের রক্তে যদি আওয়ামী লীগ থাকে, তবে তাঁরা কোনোভাবেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ ভাইয়ের বাইরে যেতে পারবে না।’

কর্মিসভায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী কেরামত আলী বলেন, ‘আমাদের গোয়ালন্দের ভোটার যাঁরা আছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ ভাইয়ের তালগাছ প্রতীকের বাইরে যাবেন না। কোনো ইউনিয়ন থেকে যদি একটা-দুইটা ভোট এদিক-ওদিক যায়, তাহলে কিন্তু আমরা ধরে ফেলব। আপনারাই আমাকে এমপি বানিয়েছেন, তাই আপনাদের ভাই হিসেবে অধিকারের দাবি থেকে অনুরোধ করলাম, তালগাছ প্রতীকে ভোট দেবেন।’

কর্মিসভায় রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘শফিকুল মোরশেদ আরুজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী।

আমরা প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছি, দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করব। আমার তিন উপজেলার (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) সব ভোট তিনি পাবেন। এক-দুটি ভোট ভুলবশত এদিক-সেদিক হতে পারে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিমকে গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা দলীয় কর্মিসভায় চার এমপিই উপস্থিত ছিলাম। জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া হয়নি।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী দীপক কুন্ডুর লিখিত অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা আমাদের জানা নেই।’

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু কায়সার খান বলেন, ‘গোয়ালন্দে কর্মিসভায় এমপিরা উপস্থিত ছিলেন বলে শুনেছি। দীপক কুন্ডুর মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজবাড়ী-১ আসনের সাংসদ কাজী কেরামত আলী এবং রাজবাড়ী-২ আসনের সাংসদ মো. জিল্লুল হাকিমকে চিঠি দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণ করতে অনুরোধ জানিয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত