কেএম হিমেল আহমেদ, রংপুর
কোনো এক পাগল পীরের নামে জায়গাটার নাম হয়ে গেছে পাগলাপীর। রংপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে রংপুর-দিনাজপুর হাইওয়ের ওপরেই বিশাল এ বাজার। এই পাগলাপীর বাজারের এক কিলোমিটার দূরে কিশামত হরকলি গ্রাম। সে গ্রামেই বাস স্কুলশিক্ষক হারুন অর রশিদের। গ্রামের অনেকে তাঁকেও পাগল নামে ডাকে।
বেশ কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি হারুন অর রশিদের কথা। খুঁজতে থাকি তাঁর ঠিকানা। খুঁজতে গিয়েই পাগলাপীর বাজারের কয়েকজন দোকানদারের সহায়তায় অবশেষে খোঁজ পাই তাঁর। রশিদের বাড়ির সামনে রিকশা ভ্যান থেকে নামার আগেই কানে আসে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ।
‘স্যার, স্যার’ বলে কয়েকবার ডাক দিতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ৬৬ বছর বয়সী হারুন অর রশিদ। কপালে ঘাম, কাঁধে গামছা, গায়ে স্যান্ডো গেঞ্জি। তাঁর সঙ্গে বাড়ির ভেতরে যাই। এরপর তিনি টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা আলাপ করেন আমাদের সঙ্গে! এর মধ্যেই পলিথিনে মুড়িয়ে চৌকির তলায় রাখা তাঁর তৈরি করা ৬টি যন্ত্র বের করে দেখান।
ছোটবেলা থেকেই হারুনের ভালোবাসার জিনিস ছিল নাট-বল্টু আর লোহালক্কড়ের যন্ত্রপাতি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিমান তৈরি করেন তিনি! সেই বিমান ওড়াতে গিয়ে একজনের পাকা ধানখেতে আছড়ে পড়লে আগুনে পুড়ে যায় পুরো খেত। বসে সালিস। তাতে সিদ্ধান্ত হয়, এসব যন্ত্রপাতি তৈরি বন্ধ করতে হবে তাঁকে। বড়দের সে সিদ্ধান্ত মেনে নেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পর লুকিয়ে তৈরি করে ফেলেন টেলিস্কোপ! এতে আগুনে পুড়ে ধানখেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু বিধি বাম। একদিন ঠিকই সে টেলিস্কোপ দেখে ফেলেন তাঁর চাচা। বাধ্য হয়ে সেটিও নষ্ট করে ফেলেন!
অগত্যা তিনি পড়াশোনায় মন দেন। মাধ্যমিকে রাজশাহী বোর্ডে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন হারুন অর রশিদ। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার বৃত্তি পেলেও পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে যেতে পারেননি। পরে কারমাইকেল কলেজে ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে পড়ালেখা শুরু করলেও সমাপ্ত করা হয়ে ওঠেনি।
লেখাপড়ার পাট অসমাপ্ত রেখে চাকরি শুরু করেন হারুন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। ১৯৮১ সালে পোস্টাল অপারেটর হিসেবে ডাক বিভাগে ৬ মাস চাকরি করেন। সে বছরই বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চাকরি শুরু করেন। মাত্র ৩ মাস চাকরি করে আবার ফিরে যান ডাক বিভাগে পূর্বের পদে। ২০১১ সাল থেকে তিনি পাগলাপীরের আদ্-দ্বীন একাডেমিতে গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
এখন যে বেতন পান, তার অর্ধেক টাকায় সংসারের খরচ চালান হারুন অর রশিদ। বাকি অর্ধেক টাকায় কেনেন যন্ত্রপাতি বানানোর কাঁচামাল। কিশামত হরকলির বাড়িতে বসে ইতিমধ্যে তিনি টেলিস্কোপসহ চারটি ভিন্ন ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোস্কোপ, বিমানের মডেল এবং একটি ফিল্ম প্রজেক্টর তৈরি করেন। ইতিমধ্যে একটি হেলিকপ্টার তৈরির কাজও শুরু করেছেন তিনি।
এসব কাজ করতে গিয়ে বেশ সংকটে আছেন হারুন। তৈরি করা যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় তাতে মরিচা পড়ছে। এ ছাড়া সারা দিন শিক্ষকতা ও প্রাইভেট পড়ানো এবং পরিবারকে সময় দিয়ে ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না তিনি। রাতে কাজ করতে হয় বলে পড়শিদের কটু কথা শুনতে হয়। এত কিছু সত্ত্বেও হারুন অর রশিদ জানান, তাঁর স্বপ্ন, সারা জীবন বিজ্ঞানের সঙ্গে থাকা। কেউ ভরসা না রাখলেও নিজের ওপর যথেষ্ট ভরসা আছে তাঁর। ফলে তিনটি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েও তিনি উদ্ভাবনের নেশায় কাজ করে চলেছেন নিয়মিত।
কোনো এক পাগল পীরের নামে জায়গাটার নাম হয়ে গেছে পাগলাপীর। রংপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে রংপুর-দিনাজপুর হাইওয়ের ওপরেই বিশাল এ বাজার। এই পাগলাপীর বাজারের এক কিলোমিটার দূরে কিশামত হরকলি গ্রাম। সে গ্রামেই বাস স্কুলশিক্ষক হারুন অর রশিদের। গ্রামের অনেকে তাঁকেও পাগল নামে ডাকে।
বেশ কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি হারুন অর রশিদের কথা। খুঁজতে থাকি তাঁর ঠিকানা। খুঁজতে গিয়েই পাগলাপীর বাজারের কয়েকজন দোকানদারের সহায়তায় অবশেষে খোঁজ পাই তাঁর। রশিদের বাড়ির সামনে রিকশা ভ্যান থেকে নামার আগেই কানে আসে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ।
‘স্যার, স্যার’ বলে কয়েকবার ডাক দিতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ৬৬ বছর বয়সী হারুন অর রশিদ। কপালে ঘাম, কাঁধে গামছা, গায়ে স্যান্ডো গেঞ্জি। তাঁর সঙ্গে বাড়ির ভেতরে যাই। এরপর তিনি টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা আলাপ করেন আমাদের সঙ্গে! এর মধ্যেই পলিথিনে মুড়িয়ে চৌকির তলায় রাখা তাঁর তৈরি করা ৬টি যন্ত্র বের করে দেখান।
ছোটবেলা থেকেই হারুনের ভালোবাসার জিনিস ছিল নাট-বল্টু আর লোহালক্কড়ের যন্ত্রপাতি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিমান তৈরি করেন তিনি! সেই বিমান ওড়াতে গিয়ে একজনের পাকা ধানখেতে আছড়ে পড়লে আগুনে পুড়ে যায় পুরো খেত। বসে সালিস। তাতে সিদ্ধান্ত হয়, এসব যন্ত্রপাতি তৈরি বন্ধ করতে হবে তাঁকে। বড়দের সে সিদ্ধান্ত মেনে নেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পর লুকিয়ে তৈরি করে ফেলেন টেলিস্কোপ! এতে আগুনে পুড়ে ধানখেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু বিধি বাম। একদিন ঠিকই সে টেলিস্কোপ দেখে ফেলেন তাঁর চাচা। বাধ্য হয়ে সেটিও নষ্ট করে ফেলেন!
অগত্যা তিনি পড়াশোনায় মন দেন। মাধ্যমিকে রাজশাহী বোর্ডে চতুর্থ স্থান অধিকার করেন হারুন অর রশিদ। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার বৃত্তি পেলেও পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে যেতে পারেননি। পরে কারমাইকেল কলেজে ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে পড়ালেখা শুরু করলেও সমাপ্ত করা হয়ে ওঠেনি।
লেখাপড়ার পাট অসমাপ্ত রেখে চাকরি শুরু করেন হারুন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। ১৯৮১ সালে পোস্টাল অপারেটর হিসেবে ডাক বিভাগে ৬ মাস চাকরি করেন। সে বছরই বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চাকরি শুরু করেন। মাত্র ৩ মাস চাকরি করে আবার ফিরে যান ডাক বিভাগে পূর্বের পদে। ২০১১ সাল থেকে তিনি পাগলাপীরের আদ্-দ্বীন একাডেমিতে গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
এখন যে বেতন পান, তার অর্ধেক টাকায় সংসারের খরচ চালান হারুন অর রশিদ। বাকি অর্ধেক টাকায় কেনেন যন্ত্রপাতি বানানোর কাঁচামাল। কিশামত হরকলির বাড়িতে বসে ইতিমধ্যে তিনি টেলিস্কোপসহ চারটি ভিন্ন ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোস্কোপ, বিমানের মডেল এবং একটি ফিল্ম প্রজেক্টর তৈরি করেন। ইতিমধ্যে একটি হেলিকপ্টার তৈরির কাজও শুরু করেছেন তিনি।
এসব কাজ করতে গিয়ে বেশ সংকটে আছেন হারুন। তৈরি করা যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় তাতে মরিচা পড়ছে। এ ছাড়া সারা দিন শিক্ষকতা ও প্রাইভেট পড়ানো এবং পরিবারকে সময় দিয়ে ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না তিনি। রাতে কাজ করতে হয় বলে পড়শিদের কটু কথা শুনতে হয়। এত কিছু সত্ত্বেও হারুন অর রশিদ জানান, তাঁর স্বপ্ন, সারা জীবন বিজ্ঞানের সঙ্গে থাকা। কেউ ভরসা না রাখলেও নিজের ওপর যথেষ্ট ভরসা আছে তাঁর। ফলে তিনটি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েও তিনি উদ্ভাবনের নেশায় কাজ করে চলেছেন নিয়মিত।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে