রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। সকাল ৯টায় বিজ্ঞান ইউনিটের প্রথম শিফটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হবে তিন দিনের এই ভর্তিযুদ্ধ। ভর্তি পরীক্ষা দিতে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজশাহীতে আসতে শুরু করেছেন ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা।

পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী জুড়ে বেড়ে গেছে গাড়িভাড়া ও খাবারের দাম। ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকায় রিকশা ভাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ নিচ্ছেন চালকেরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় কোটাসহ মোট ৪ হাজার ৬৪১টি আসনের বিপরীতে মোট ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। আজ ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চার শিফটে ৭২ হাজার ৪১০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। পরীক্ষাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে, পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রিকশা ভাড়া থেকে শুরু করে খাবারের দাম সবকিছু বেড়েছে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন গুনও বৃদ্ধি পেয়েছে রিকশা ভাড়া। গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর থেকে সোহরাওয়ার্দী হলের ১৫ টাকার ভাড়া এক ভর্তি-ইচ্ছুকের কাছে ১০০ টাকা নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিনোদপুর থেকে তালাইমারীর ভাড়া ৫ টাকা হলেও যাত্রী ভেদে নেওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে কাজলা গেটের ভাড়া ১০ টাকা, কিন্তু বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।

উত্তরের জেলা লালমনিরহাট থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছেন সাইফুল ইসলাম। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে অটোরিকশায় উঠে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে। অটোচালককে ১০০ টাকার নোট দিলে তাকে ফেরত দেওয়া হয় ৫০ টাকা। তিনি বলেন,‘ যেহেতু আমি এখানকার ভাড়া সম্পর্কে জানি না, তাই নামার পর আমি রিকশাওয়ালাকে ১০০ টাকার নোট দিই। কিন্তু তিনি এটুকু রাস্তা আমার কাছে ৫০ টাকা ভাড়া নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে চলছে একধরনের নৈরাজ্য।’

গতকাল রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাগর ক্যানটিন, সিলসিলা রেস্তোরাঁ, টুকিটাকি চত্বর ও বিভিন্ন হলের সামনের খাবারের দোকানগুলোকে দাম বাড়ানো হয়েছে। খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার, কাজলা বাজার, স্টেশন বাজারের খাবারের দোকানগুলোতেও। বিনোদপুরের হোটেলগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের ১০০ টাকার গরুর কালাভুনা ১২০ টাকা, ৫০ টাকার মুরগি ৭০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতরের দোকানগুলোতে ৩০ টাকার মুরগির পিস ৪০, ৬০ টাকার সোনালি মুরগি ৭০, ৩০ টাকার মাছ ৪০ এবং ৮০ টাকার গরুর মাংস ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের কোনো দোকানে যেন খাবারের অতিরিক্ত দাম কিংবা যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে না পারে সে জন্য আমাদের প্রক্টরিয়াল বডি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। তারপরেও অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’