মরদেহ মর্গে পাঠানোয় চিকিৎসককে লাঞ্ছনা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২২, ০৭: ০২
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২২, ১২: ৩১

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রোগীর ভর্তি টিকিটে ‘পুলিশ কেস’ সিলমোহর দিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোয় এক চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন স্বজনেরা। ওই চিকিৎসকের নাম শাহরিয়াজ জ্বাকী।

রোগীর হৃদ্ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন, এমন দাবি করে তাঁর স্বজনেরা লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবাদ করেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার বিকেলে। রোগীর নাম রেখা খাতুন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য হাবিব জানান, কুষ্টিয়া শহরের আলফার মোড় এলাকার আলিমের স্ত্রী রেখা খাতুন অসুস্থ হলে তাঁর স্বজনেরা দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহরিয়াজ জ্বাকী রোগীকে ভালোভাবে দেখেন এবং মৃত্যুর আলামত দেখে তাঁর সন্দেহ হলে তিনি ভর্তির টিকিটে পুলিশ কেসের সিল দিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন রেখা খাতুনের স্বজনরা। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর রেখার স্বজনরা চিকিৎসকের ওপর হামলা চালান। পরে হাসপাতাল ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মারা যাওয়া রেখা খাতুনের ভাই রকি বলেন, ‘আমার বোন আলফা মোড়ে ভাড়া থাকতেন। সকালে অসুস্থ হলে বাড়ির মালিক তাঁকে দ্রুত জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আমার বোন মারা যান। কিন্তু চিকিৎসক আমার বোনের লাশ কেন ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাল তা বুঝলাম না। কেউ তো কোনো অভিযোগ করেননি। এ জন্য আমার বোনের লাশ কেন মর্গে পাঠিয়েছেন, তা জিজ্ঞাসা করতে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন আমার ছোট দুলাভাই ফারুক। এরপর কি হয়েছে আমি তা জানি না।’

ডা. শাহরিয়াজ জ্বাকী বলেন, ‘সোমবার রেখা খাতুনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন তাঁর স্বজনেরা। তাঁকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ সময় রোগীকে দেখে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর নির্দেশ দিই। এতে রোগীর স্বজনেরা ক্ষিপ্ত হন এবং ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর তাঁরা এখানে এসে খারাপ ব্যবহার করেন এবং শাটের কলার ধরে ধস্তাধস্তি করে। পরে হাসপাতালে দায়িত্ব থাকা পুলিশ খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিবেশ শান্ত করে।’

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ময়নাতদন্ত না করার জন্য মারা যাওয়া রেখা খাতুনের স্বজনেরা সেখানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত