পানি নেমে যাওয়ার পর সড়কজুড়ে ক্ষতের দুঃখ

তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৩ জুন ২০২২, ১০: ৫৯
Thumbnail image

চট্টগ্রাম নগরের খাজা রোডের খরমপাড়া মোড় থেকে এনএমসি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কটিতে এক মাস আগে শুরু হয় সংস্কার-কাজ। দুই সপ্তাহ আগে ওই সড়কে ইটের কংক্রিট ও বালুর মিশ্রণ দিয়ে রোলারে সমান করা হয়। কদিন আগেই কার্পেটিং করার কথা ছিল সড়কটিতে। কিন্তু ভারী বর্ষণের কারণে সড়কে কয়েক দিন ধরে পানি জমে থাকায় সেটি আর সম্ভব হয়নি। গতকাল বুধবার সড়ক থেকে পানি নেমে যাওয়ার পর দেখা গেল সড়কজুড়ে ক্ষতের দাগ। কংক্রিট উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত।

সড়কের আমিনার দোকান এলাকার বাসিন্দা মুজিবুল করিম তাই বলে ওঠেন, ‘এই সড়ক নিয়ে তিন মাস ধরে কষ্টে আছি। এত দিন তাও গাড়ি নিয়ে কোনোভাবে যেতে পারতাম। এখন তো খানাখন্দের কারণে সেটিও সম্ভব হচ্ছে না।’

শুধু খাজা রোডের এই সড়কটি নয়, টানা পানির নিচে থাকায় নগরীর বেশির ভাগ সড়কই কম–বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, যেসব সড়কে পানি উঠেছিল সেগুলোর কোনোটিতে হা করে আছে গর্ত, কোথাও বেরিয়ে এসেছে পিচ–কঙ্কর।

এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক, বহদ্দারহাট থেকে জিইসি পর্যন্ত সড়ক, বহদ্দারহাট থেকে চকবাজার সড়ক, চকবাজার–রাহাত্তারপুর সড়ক, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বিভিন্ন ছোট–বড় সড়ক, অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়ক, দেওয়ানহাট–অলংকার মোড় সড়ক, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার সড়ক, ফিরিঙ্গি বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় সড়কে পানি জমে থাকার ফলে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।

আখতারুজ্জামান সড়কের মুরাদপুর অংশের প্রবেশমুখে সড়কে বেশ কয়েকটি গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্তের কারণে গাড়ি চলাচল করছিল ঝুঁকি নিয়ে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন আবদুল হাকিম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, ফলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো সময়। রাতের দিকে যখন সড়কবাতি জ্বলে না তখন–কীভাবে গাড়ি চালাব সেই শঙ্কায় আছি।’

দুই নম্বর গেট এলাকার দুদিকেই সড়কে একাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই গর্তের কারণে গাড়ি ধীর গতিতে চলায় দুই নম্বর গেট থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত সড়কটিতে গাড়ির দীর্ঘ জট তৈরি হয়। গতকাল সকালে সেই সড়ক দিয়ে বাসে করে আগ্রাবাদের কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই সড়কটি এমনিতেই যানজট প্রবণ। এখন বৃষ্টি আর পানির কারণে সড়কটি নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে–যানজট আরও বেড়েছে।’

তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ সড়ক বৃষ্টি ও পানির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনো নির্ধারণ করেনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও পানির কারণে প্রচুর সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নির্ধারণ করা হয়নি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সেটি নির্ধারণ করা হবে।’

তবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কারকাজ চলমান আছে বলে জানান মনিরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘সড়কগুলোতে আপাতত ইটের টুকরো দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে। কারণ রোদ ছাড়া পিচ দেওয়া সম্ভব নয়। পুরোপুরি রোদ উঠলে সড়কগুলো ভালোভাবে সংস্কার করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত