বরেন্দ্র এলাকায় সেচ প্রকল্প: উৎপাদন হবে ২৮ হাজার টন ধান

রিমন রহমান, রাজশাহী
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ০৯

ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করা বরেন্দ্র এলাকায় পানির স্তর নিচে নামছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে নেওয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। নদী ও বিভিন্ন জলাধার থেকে পানি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। তারা বলছে, সেচের নতুন এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ৩ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বছরে দু-তিনটি করে ফসল চাষাবাদ হবে। বছরে উৎপাদিত হবে ২৭ হাজার ৯২০ টন ধান।

দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত শুষ্ক। তাপমাত্রাও তুলনামূলক বেশি। শুষ্ক মৌসুমে এসব এলাকার ভূ-উপরিস্থ পানি কম থাকে। অন্যদিকে বর্ষাকালে এই এলাকার নদীগুলোয় পানি থাকে। এসব বরেন্দ্র এলাকায় নদীর পানি সংরক্ষণ করে শুষ্ক মৌসুমে সেচকাজে ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ‘বরেন্দ্র এলাকার খালে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প’ নামের এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে এখন। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গত বছরের অক্টোবরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, নাচোল, গোমস্তাপুর, শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট উপজেলা; রাজশাহীর বাগমারা ও গোদাগাড়ী উপজেলা এবং নওগাঁর মহাদেবপুর—মোট আটটি উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। মূলত এসব এলাকায় পানি সরবরাহের জন্য উৎস হিসেবে ধরা হয়েছে পদ্মা, মহানন্দা, পুনর্ভবা, রানী ও বারনই নদী। এসব নদী থেকে পানি এনে জলাধারে পানি সংরক্ষণের জন্য ৩৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটার খাল ও খাড়ি এবং একটি পুকুর ও দুটি বিল পুনঃখনন করা হচ্ছে। পানি আনা ও জমিতে সরবরাহের লক্ষ্যে ১৪৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলছে। 

এ প্রসঙ্গে বিএমডিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক নাজিরুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের আওতায় খালে পানি সংরক্ষণে ক্রস ড্যাম নির্মাণ করা হবে ১৩টি। নদীতে বসানো হবে ৪টি পন্টুন। মেরামত করা হবে আরও ২টি। স্থাপন করা হবে বিদ্যুৎ-চালিত ২৬টি লো লিফট পাম্প (এলএলপি)। এসব পাম্পের মাধ্যমে নদী থেকে পানি খালে আনা হবে। খাল থেকে ১৩২টি সৌরবিদ্যুৎ-চালিত লো লিফট পাম্পের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে পানি সরবরাহ করা হবে। 

চলছে প্রকল্পের কাজ
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে শুরুতেই খালের পাড়ে ১ লাখ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাগমারা উপজেলায় রানী নদী থেকে খালে পানি সরবরাহের জন্য ৮০০ মিটার এবং শিবগঞ্জ উপজেলায় মহানন্দা নদী থেকে খালে পানি সরবরাহের জন্য ১ হাজার ৫০০ মিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে। এসব স্থানে ৫৫০ মিটার খাল খনন করে ৫ হাজার ফলদ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাগমারা, গোমস্তাপুর ও মহাদেবপুর উপজেলায় ১৩২টি সৌরবিদ্যুৎ-চালিত লো লিফট পাম্প স্থাপন কাজ চলছে। শিবগঞ্জ উপজেলায় রানী নদীতে একটি পন্টুন নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে। পুনর্ভবা নদীর কাজীগ্রাম এলাকায় স্থাপনের জন্য আরও একটি পন্টুন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

বিএমডিএর চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান বলেন, সরকার সেচকাজে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহারকে প্রাধান্য দিচ্ছে। সরকারি প্রাধান্যকে গুরুত্ব দিয়ে তা অর্জনের লক্ষ্যে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে ভূ-উপরিস্থ এবং বৃষ্টির পানি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিএমডিএ। প্রকল্পের কাজ শেষে এ অঞ্চলের কৃষিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত