পশু জবাইয়ে নেই তদারকি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২২, ০৮: ১৭
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১১: ৫৪

নওগাঁর নিয়ামতপুরে পশু জবাইয়ে কোনো তদারকি না থাকায় সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। তাঁরা নিয়মকানুন না জেনেই কিনছেন এসব গরু ও ছাগলের মাংস। প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই উপজেলা সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে অবাধে গবাদিপশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, উপজেলা সদরে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার পাঁচ-ছয়টি গরু জবাই করা হয়। এসব পশুর শরীরে কোনো রোগবালাই রয়েছে কি না, এমন কোনো ধারণাই রাখেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আইন প্রয়োগের দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনো তৎপরতা নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়ামতপুর সদর ছাড়াও টিএলবি বাজার, বরেন্দ্র বাজার, গাবতলী বাজার, খড়িবাড়ি বাজারে গরু, ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয়। এ ছাড়া হোটেলের চাহিদা পূরণ করার জন্যও গরু, ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয় বলে জানান হোটেল ব্যবসায়ীরা।

কাপাষ্টিয়া গ্রাম থেকে গরুর মাংস কিনতে আসা বদিউজ্জামান মণ্ডল বলেন, ‘আমরা তো বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করেই মাংস কিনছি। কোনো ভেজাল থাকলে আমাদের জানার কথা নয়। তবে এসব বিষয়ে ভেটেরিনারি হাসপাতাল দেখাশোনা করলে আমাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমে আসবে।’

নিয়ামতপুর গ্রামের আম্মাজুল ইসলাম বলেন, পশুর শরীরে কোনো রোগবালাই রয়েছে কি না, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ধরনের কোনো তদারকি নেই। সাধারণ জনগণ মরা নাকি রোগাক্রান্ত গবাদিপশুর মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই। পাশাপাশি ধর্মীয় নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে পশুটি জবাই করা হচ্ছে কি না, সেটাও সবার জানার বাইরে থেকেই যাচ্ছে।

মাংস ব্যবসায়ী তফিজ উদ্দিন বলেন, তাঁরা অনেক দিন থেকে মাংস বিক্রি করে আসছেন। গরুর জবাই করার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না। আগে পশু হাসপাতাল থেকে খোঁজ রাখলেও এখন আর কেউ খোঁজখবর রাখেন না। মাঝেমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লোক আসেন খোঁজখবর নিতে।

উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পশু জবাইয়ে আগে এটি সুস্থ, রোগাক্রান্ত ও গর্ভবর্তী কি না—এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দায়িত্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা চিকিৎসকের। তবে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পশু জবাইয়ের পর স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে বিক্রি হচ্ছে কি না এবং ওজনের কারচুপি করছে কি না, সেটা দেখভালের।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইয়ামিন আলী বলেন, পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য ভেটেরিনারি সার্জন তাঁদের নেই। এ কারণে পশুর চিকিৎসা ছাড়াই নির্বিঘ্নে পশু জবাই হয়। তবে অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস খাওয়া অবশ্যই জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত