মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত সময় পার করছেন মধুপুর উপজেলার আট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২৮ জনের বেশি সম্ভাব্য প্রার্থী। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সরব হয়ে উঠেছেন এসব সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী। দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি বাড়িয়েছেন জনসংযোগ এবং দান-অনুদানও। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন লড়াই থাকলেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন নিজেদের।

নির্বাচন প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মহসিনুল কবীর জানান, প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার জন্য ছয় ইউপির তিনজন করে ১৮ জন রয়েছেন। আর দুই ইউপিতে দুজন করে চারজন প্রার্থীর তালিকা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে ইতিমধ্যে পাঠিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি ও সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু। যাচাই-বাছাই শেষে ওই তালিকা থেকে আট ইউপির জন্য দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

জানা গেছে, মধুপুর উপজেলা ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন ও মধুপুর পৌরসভার নির্বাচন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী বাকি আটটি কুড়ালিয়া, মহিষমারা, বেরীবাইদ, কুড়াগাছা, আউশনারা, অরণখোলা, ফুলবাগচালা ও শোলাকুড়ী ইউপিতে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১৫ জুন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে। বাছাইয়ের তারিখ ১৯ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৬ মে। ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। এসব সম্ভাব্য প্রার্থী গত দুই বছরেরও বেশি সময় জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। করছেন নানা ধরনের জনমুখী কার্যক্রম। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। তবে যাঁরা নির্বাচিত হয়ে টানা ৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁদের রয়েছে শক্ত অবস্থান।

এ ছাড়া কেউ কেউ দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে নেতাদের আদেশ-নির্দেশ যথাযথ পালনের মাধ্যমে পুরস্কার হিসেবে দলীয় টিকিট পাওয়ার আশা করছেন। নতুন প্রার্থীরা দলীয় গ্রুপিংকে কাজে লাগিয়ে মনোনয়ন জিতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের আশীর্বাদ নিতে। আবার কেউ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি কিংবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবুর দ্বারস্থ হচ্ছেন। তবে কার ভাগ্যে দলীয় মনোনয়ন জুটবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই।

এদিকে গত শুক্রবার নির্বাচনকে ঘিরে বৈঠক করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। ওই বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু এই তিনজনকে নিয়ে মনোনয়ন বাছাই কমিটি করা হয়। তাঁদের তৈরি করা প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখানেই করা হবে চূড়ান্ত মনোনয়ন।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড দলের জন্য নিবেদিত ও জনবান্ধব প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠাবে। এর পর দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাঁর জন্যই নেতা-কর্মীরা সক্রিয়ভাবে কাজ করবে।

অপরদিকে মধুপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্বাচনের বিষয় মাথায় রাখছি না। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন বেগবান করতে জন্য সাংগঠনিক কাঠামো গছাতে ব্যস্ত।