Ajker Patrika

বারান্দায় ভিড় ডায়রিয়া রোগীর

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ০৫
বারান্দায় ভিড় ডায়রিয়া রোগীর

চলছে বৈরী আবহাওয়া। প্রচণ্ড গরমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে বেড়ে চলছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে পাঁচ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চিত্রও একই। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। শিশুদের ডায়রিয়ার সঙ্গে বমিও বেড়েছে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে আতঙ্কিত না হয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়াটা জরুরি বলছেন চিকিৎসকেরা।

লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, গরমের কারণে প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে ৭০–৮০ জন শিশু। এদের মধ্যে ২৫–৩০ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে আক্রান্তরা একই বেডে দুজন করে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।

ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৫ শতাধিক রোগী। এর মধ্যে ৩ শতাধিক শিশু ও বয়স্ক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগীর অনুপাতে হাসপাতালে বেড না থাকায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে অবস্থান নিয়ে। এ ছাড়া জেলার কমলনগর, রামগতি, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ভর্তি হচ্ছেন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, ভর্তির পর হাসপাতাল থেকে তাঁদের খাবার স্যালাইন ও সামান্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। বাকি ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়। এ ছাড়া তেমন কোনো চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে না, বলে অভিযোগ করেন তারা। প্রতিদিনই ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। প্রতি বেডে একটি শিশুকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা থাকলেও বেড না থাকায় দুই শিশুকে এক বেডে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি সুরাইয়া আক্তারের মা হাছিনা বেগম বলেন, ‘গতদিন আগে ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করি। কিন্তু হাসপাতাল থেকে স্যালাইন ছাড়া তেমন কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া হাসপাতাল নোংরা ও অপরিষ্কার। দুর্গন্ধের কারণে হাসপাতালে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। দিনে একবার এসে ডাক্তার দেখে যান।’

জেলা বেসরকারি প্যাথলজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম বাসার জানান, প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। হাসপাতালে পা রাখার জায়গা নেই। যেখানে প্রতিটি বেডে এক শিশু ভর্তি করার কথা, সেখানে এক বেডে তিনটি শিশু পর্যন্ত ভর্তি করা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইসমাইল হাসান বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গরমের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। দিনে ৫০–৬০ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তাঁদের সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।’

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৭০০–৮০০ জন নতুন রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। জনবল সংকটের কারণে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

জেলা সিভিল সার্জন আহাম্মদ কবির বলেন, ‘এ সময়ে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত রয়েছে। জনবল সংকট থাকলেও চিকিৎসা কার্যক্রমে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তারপরও প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত