Ajker Patrika

নদে বাড়ছে পানি, তীরে আতঙ্ক

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১২: ১২
নদে বাড়ছে পানি, তীরে আতঙ্ক

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উদাসীনতা ও কর্মকর্তাদের অবহেলায় ছয় মাসেও সংস্কার করা হয়নি কুষ্টিয়ার কুমারখালী শহর রক্ষা বাঁধ। ইতিমধ্যে গড়াই নদে পানি বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু বাঁধ সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা। এতে আতঙ্কিত শহরের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। হুমকির মুখে রয়েছে ৩টি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্তসহ শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। স্থানীয়রা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পাউবো জানিয়েছে, ভাঙনরোধে কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ ভাঙনরোধ করা হয়নি এখনো। এবারও বাকি অংশে জিও ব্যাগ ফেলা হবে। স্থায়ী ভাঙনরোধের জন্য প্রকল্প পাস হয়েছে। ২০২৩ সালের শুষ্ক মৌসুমে পাথর দিয়ে বাঁধ দেওয়া হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, গড়াই নদের কবল থেকে কুমারখালী শহর রক্ষার জন্য পাথরের বাঁধ রয়েছে। সেই বাঁধের ইকোপার্ক এলাকায় খানিকটা ভাঙা রয়েছে। সেখানে কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা রয়েছে।

জানা গেছে, গড়াই নদের তীর ঘেঁষে ১৮৬৯ সালে কুমারখালী পৌরসভা গঠিত। পৌরসভায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বসবাস। ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পসহ পৌর এলাকায় দিনে দিনে গড়ে উঠেছে শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আর নদ থেকে পৌরবাসীকে রক্ষা করতে নির্মাণ করা হয়েছিল পাথরের বাঁধ। কিন্তু সেই বাঁধের ইকোপার্ক এলাকায় প্রায় ছয় মাস আগে ভাঙন লেগেছে। ভাঙনের কিছুদিন পর কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। কিন্তু এতে পুরো ভাঙনরোধ হয়নি। এখন নদে পানি বাড়ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সংস্কারের উদ্যোগ নেই। ভরা মৌসুমের আগেই বাঁধ সংস্কার না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

নদ পাড়ের বাসিন্দা গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘পানি বাড়ছে। ভাঙনও বাড়বে। বসতভিটা ও পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি।’

শেরকান্দি পৌরপাড়ার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান প্রতিদিন বিকেলে ইকোপার্কে চটপটি বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘ভাঙন নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। রাতে আতঙ্কে ঘুম আসে না। এত গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ। কেন সংস্কার করা হলো না এত দিনেও, বুঝতে পারছি না।’

কুমারখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস এম রফিক বলেন, ‘৬ মাস আগে বাঁধ ভেঙেছে। বারবার উপজেলা প্রশাসন ও পাউবোকে জানানো হয়েছে। কিন্তু বাঁধ সংস্কার হয়নি। এতে আতঙ্কিত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।’

শহরের স্বনামধন্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান লালু বলেন, ‘শহর রক্ষার প্রাণ হলো ইকোপার্ক এলাকার বাঁধ। সেই বাঁধ ভেঙে আছে, অথচ কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই। বাঁধ নিয়ে ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।’

কুমারখালী পৌরসভার মেয়র সামছুজ্জামান অরুন বলেন, ‘বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। দ্রুত সংস্কার না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আবারও কথা বলব।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। গুরুত্বসহকারে তাদের জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পাউবো কর্মকর্তারা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি তাঁরা দেখছেন।’

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন, ‘কুমারখালী শহর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প পাস হয়েছে। আগামী শুষ্ক মৌসুমে পাথর দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এ বছর জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙনের বাকি অংশ ভরাট করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত