অ্যাম্বুলেন্স আছে, চালক নেই

সজল সরকার, টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ)
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, ১৫: ৩৬
Thumbnail image

গর্ভবতী মা ও শিশুদের জরুরি সেবার জন্য দেওয়া হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু কোনো চালক দেওয়া হয়নি। চালকের অভাবে অ্যাম্বুলেন্স অচল হয়ে পড়ে আছে। অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে জরুরি সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মা ও শিশুরা।

উপজেলার ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের মা ও শিশুদের জরুরি সেবায় গত বছরের গত ১৫ আগস্ট একটি অ্যাম্বুলেন্স দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অ্যাম্বুলেন্সটির মূল্য প্রায় ৪৩ লাখ টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত চালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে কাজে আসছে না অ্যাম্বুলেন্সটি।

টুঙ্গিপাড়া মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট মাস আগে পাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটির কোনো চালক না থাকায় বেশ কিছু অংশ বিকল হয়ে যাচ্ছে। ব্যাটারি বসে যাওয়ায় ইতিমধ্যে একবার পরিবর্তনও করা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সটি পরিচর্যার অভাবে ধুলা-বালিতে ভরে গেছে। তবে ইঞ্জিন সচল রাখতে সপ্তাহে একদিন অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করে রাখা হয়।

উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের সোনালী আক্তার ও পাটগাতী গ্রামের শরীফা বেগম বলেন, প্রসবজনিত কারণে তাঁরা কয়েক দিন ধরে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, এখানে অ্যাম্বুলেন্স আছে। কিন্তু চালক নেই। এই অবস্থায় স্বাভাবিক ডেলিভারি না হলে তাঁদের গোপালগঞ্জ অথবা খুলনা নিয়ে যেতে হতো। তখন তাঁদের দুর্ভোগের শেষ থাকত না। এমনকি মৃত্যুও হতে পারত।

প্রসূতির স্বজন গিমাডাঙ্গা গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ উপজেলার হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স আছে, কিন্তু চালক নেই; এটা খুবই দুঃখজনক। এতে মা ও শিশুরা জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই উপজেলার জনগণের স্বার্থে দ্রুত একজন চালক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল আজিজ বলেন, চালকের অভাবে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়মিত চলাচল না করায় কিছু অংশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তখন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের অনুরোধে গোপালগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপপরিচালক তাঁকে সপ্তাহে একদিন টুঙ্গিপাড়া যেতে নির্দেশ দেন। তাই সপ্তাহে একদিন গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন চালু করে সচল রাখেন।

টুঙ্গিপাড়া মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মেহেরুন্নেসা বলেন, গর্ভবতী মা ও শিশুদের জরুরি সেবার জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো চালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্সটি পরিচর্যা করার কেউ নেই। অ্যাম্বুলেন্সটির ব্যাটারিতে সমস্যা হওয়ার পর জেলা কার্যালয়ে জানান। অ্যাম্বুলেন্স সচল রাখতে একজন চালক সপ্তাহে একদিন আসেন। তিনি ইঞ্জিন সচল রাখেন।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মৌখিক ও লিখিতভাবে জানালেও চালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এতে মা ও শিশুদের জরুরি সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ কে এম সেলিম ভূঁইয়া বলেন, টুঙ্গিপাড়া মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে দ্রুত একজন চালক নিয়োগ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন। এ ছাড়া সারা দেশে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে কিছুসংখ্যক চালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনার জন্য সেটি বাস্তবায়ন করতে একটু সময় লাগছে। দ্রুত টুঙ্গিপাড়া কেন্দ্র একজন চালক পাবে বলে আশা করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

বিচার বিভাগের সমস্যা তুলে ধরলেন বিচারক, আনিসুল হক বললেন ‘সমস্যা কেটে যাবে’

বিদ্যালয়ে একই পরিবারের ১৬ জনের চাকরি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ভাতা নয়, সঞ্চয়পত্র কিনে দিচ্ছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত