২১ বছর পর কমিটি সেটি নিয়েও দ্বন্দ্ব

তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২২, ০৭: ০৮
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ১১: ২৭

চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির জন্য পদপ্রত্যাশী নেতারা অপেক্ষায় ছিলেন দেড় যুগের বেশি সময়। দীর্ঘ ২১ বছর পর ২০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয় ১০ দিন আগে। কিন্তু এই কমিটি নিয়েই শুরু হয়েছে বিবাদ। দুটি পক্ষ পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করছে। এই বিভক্তির কারণে সাত দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার নির্দেশনা থাকলেও সেটি হয়নি।

অবশ্য নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই বিভক্তি হওয়ারই কথা ছিল। চট্টগ্রাম নগরে আওয়ামী লীগ এবং এর বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রায় তিন দশক ধরে দুটি ধারা বিদ্যমান আছে। এর একটির নেতা-কর্মীরা ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। ২০১৭ সালে এই নেতার মৃত্যুর পর অনুসারীরা তাঁর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বলয়ে থাকেন। অন্য পক্ষের নেতা-কর্মীরা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের বিভিন্ন কমিটিতে শীর্ষ পদগুলো এই দুই নেতার অনুসারীদের ভাগ করে দেওয়ার রীতি আছে।

তবে ৯ মার্চ গঠিত কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে দেবাশীষ নাথ দেবুকে আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আজিজুর রহমান। দুই শীর্ষ পদের জন্য আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী নেতাদের দৌড়ঝাঁপ ছিল। কিন্তু তাঁদের কয়েকজনকে সহসভাপতিসহ অন্যান্য পদে রাখা হয়েছে।

সব মিলিয়ে আংশিক কমিটিতে পদ পাওয়া ২০ নেতার ১১ জন নওফেলের অনুসারী। ৭ জন আ জ ম নাছিরের অনুসারী। এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রী আফছারুল আমিন ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালামের অনুসারী দুজনের কমিটিতে জায়গা হয়েছে।

বিভাজন

শীর্ষ দুই পদে নিজেদের কেউ না থাকার বিষয়টি মানতে পারেননি নাছিরপক্ষের নেতা-কর্মীরা। কমিটি গঠনের দিনই নাছিরের অনুসারীরা এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানান। বিভাজন আরও প্রকাশ্যে আসে কদিন পরই পৃথকভাবে দুই পক্ষ কর্মসূচি পালন শুরু করলে।

১৫ মার্চ দেবু ও আজিজুরের নেতৃত্বে ১৩ নেতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ এবং সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। একই দিন তাঁরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এসব কর্মসূচিতে ছিলেন না নাছিরপক্ষের ৭ নেতা। অবশ্য তার আগের দিন এই নেতারা পৃথকভাবে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করেন।

হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি

কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে লেখা ছিল, ‘আগামী সাত দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।’ কিন্তু ১৬ মার্চ সেই সাত দিন পেরিয়ে গেলেও কমিটি হয়নি।

বিভাজনের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিবাদ কেটে যাচ্ছে। এখন সামনে থেকে একযোগে কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

অন্যদিকে নাছিরপক্ষের অনুসারী হিসেবে পরিচিত স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আরেকটু সমন্বয় করে কর্মসূচিগুলো দেওয়া গেলে আমরা একসঙ্গে পালন করতে পারতাম। কারণ, এখানে কেউ ব্যবসায়ী, কেউ সামাজিক কাজে ব্যস্ত। সে জন্য ডাকলেই দ্রুত একসঙ্গে আসা যায় না।’

পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ার কারণ জানতে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁরা ফোন ধরেননি। যদিও দুই পক্ষের নেতাদের দ্বন্দ্বের কারণে কমিটি গঠনপ্রক্রিয়া ধীরগতিতে হচ্ছে বলে প্রচার আছে।

তবে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, ‘১৭ মার্চ ও ২৬ মার্চের কর্মসূচির কারণে নির্ধারিত সময়ে কমিটি দেওয়া যায়নি। ২৬ মার্চের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে আলোচনা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত