উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপন করা হয়েছে মহান বিজয় দিবস। গতকাল বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁওয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করা হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

পঞ্চগড়: বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ৫০ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচির সূচনা হয়। এরপরই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা ও দায়রা জজ শরীফ হোসেন হায়দার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা, পঞ্চগড় প্রেসক্লাবসহ জেলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে শহীদদের রুহের মাগফিরাত ও দেশ জাতির কল্যাণে মোনাজাত করা হয়। এ ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে, আলোচনা সভা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা, মিলাদ মাহফিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ জেলা পরিষদে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

কুড়িগ্রাম: গতকাল বৃহস্পতিবার যথাযোগ্য মর্যাদায়, উৎসব ও আনন্দঘন পরিবেশে নানা আয়োজনে কুড়িগ্রামে মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। দিনের প্রথম প্রহরে ৫০ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বিজয় উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। পরে শহরের বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে পায়রা উড়িয়ে দিনের কর্মসূচির সূচনা করা হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচিতে অংশ নেয়।। পরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত করা হয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের নেতৃত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম।

ঠাকুরগাঁও: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে অপরাজেয় একাত্তরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন। এরপর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পৌরসভা, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে একটি বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে।

ভূরুঙ্গামারী: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ভূরুঙ্গামারী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন কর্মসূচির শুরু হয়। ভূরুঙ্গামারী পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে সেখানে বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইড, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করে।

চিলমারী: যথাযোগ্য মর্যাদায় কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ৫০ তম মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে এ দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পাটি, চিলমারী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর শিশু-কিশোরদের মার্চপাস্ট, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, শিশু-কিশোরদের ডিসপ্লে, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম, ইউএনও মাহবুবুর রহমান, ওসি আনোয়ারুল ইসলাম, চিলমারী প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম সাবু প্রমুখ।

ফুলবাড়ী: মহান বিজয় দিবসে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি পালন করে। ভোরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হয়। সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধে উপজেলার প্রথম শহীদ লুৎফর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল ৮টায় ফুলবাড়ি জসিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার। এ সময় তাঁকে সহযোগিতা করেন ইউএনও সুমন দাস, ওসি রাজীব কুমার রায় এবং সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবর রহমান।