নেত্রকোনা সদর উপজেলার দুই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মোটরসাইকেল ও আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেন প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ ও রৌহা ইউপিতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় ১৩ জনকে আটক করেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নৌকার প্রার্থী আজহারুল ইসলাম তুহিনের কর্মীরা নির্বাচনী প্রচার শেষে ফিরছিলেন। লক্ষ্মীগঞ্জ ইউপির ত্রিয়শ্রী বাজারে এলে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুল কাদের সুজার সমর্থকেরা হামলা চালান। এ সময় নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের দুটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় ১২ জন আহত হন। আহতের মধ্যে আলমগীর মিয়া ও বেলায়েত হোসেনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৩ জনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নৌকার প্রার্থী মো. আজহারুল হকের ছোট ভাই শাফায়েত আহমেদ নেত্রকোনা মডেল থানায় ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

শাফায়েত আহমেদ বলেন, ‘সুজার লোকজন আমাদের প্রচারে হামলা চালায়। মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ১২ জন আহত হন। দুজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম শফিকুল কাদের সুজা বলেন, ‘নৌকার প্রার্থীর লোকজন আমার বাড়িঘরে হামলা করেছে। আমার লোকজন তা প্রতিহত করেন। মোটরসাইকেল ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ ও কাউকে মেরে রক্তাক্ত করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট।’

এদিকে সদর উপজেলার রৌহা ইউপির বড়গাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়া ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার সকালে রৌহা ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান মুন্না বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভোটারদের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করতেই দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ভাঙচুর করা হয়। রৌহা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বাতেনের সমর্থকেরা এই কাজ করেছে। দোষীদের বিচারের দাবি করছি।’

তবে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বাতেন। তিনি বলেন, ‘এটি মিথ্যা অভিযোগ। তবে আই ডোন্ট কেয়ার।’

রৌহা ইউপির স্থানীয় বাসিন্দা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, ‘গত ইউপি নির্বাচনে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বাতেনসহ তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা আমাকে এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। কিন্তু এবার প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বুঝতে পেরে এই জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনার বিচার চাই।’

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, ‘লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের ঘটনায় ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রৌহা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’