কচা নদীতে ডুবোচর খনন শুরু

পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০৬
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১১: ১৭

দীর্ঘদিন পিরোজপুরের ইন্দুরকানী ও ভান্ডারিয়ার মধ্যবর্তী কচা নদীতে ডুবোচরে আটকে নৌ চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। চরখালী-টগড়া ফেরি চলাচলে ভোগান্তির যেন কোনো শেষ ছিল না। এখানে নাব্যতা-সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক নৌপথ থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগ অনেক সময় পড়েছে হুমকির মুখে। কচা নদী পারাপারে ডুবোচরে আটকে চরখালী-টগড়া ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়ে জনদুর্ভোগের যেন শেষ ছিল না এ পথের যাত্রী সাধারণের।

এই রুটে বাংলাদেশ-ভারত (অভ্যন্তরীণ) এবং খুলনা ও মোংলা বন্দরের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের অন্যতম নৌ যোগাযোগমাধ্যম। গত বেশ কয়েক বছর ডুবোচরের কারণে এ পথে চলাচলকারী ঢাকাগামী লঞ্চ, বিআইডব্লিউটিসির রকেট-স্টিমার, সরকারি ও বেসরকারি ওয়েল ট্যাংকার, কোস্টার, কার্গো, নৌবাহিনীর জাহাজ চলাচলে প্রায়ই অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তবে বলেশ্বর নদের বড় একটি অংশ নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে কচা ও বলেশ্বরের মোহনায় এই ডুবোচর জেগে উঠছে, যা নিয়মিত খনন করা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ সমস্যা সমাধানে পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর একক প্রচেষ্টায় কচা নদীর ডুবোচর খননের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগেও ২০১৯ সালে তিনি নদী খননের ব্যবস্থা করে ছিলেন।

বর্তমানে বরিশাল-ঝালকাঠি-ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৫৩ কিলোমিটারে কচা নদীর চরখালী-টগড়া ফেরিঘাটের টগড়া প্রান্তে অবস্থিত ডুবোচর খননের (ড্রেজিং) কাজ বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং ডিপার্টমেন্ট থেকে সম্পন্ন করা হচ্ছে। বর্তমানে সে চিত্র আর নেই। দুরন্ত গতিতে নিয়মিতভাবে ফেরি চলাচল করছে। নির্বিঘ্নে যাত্রী সাধারণ পৌঁছে যাচ্ছে তাঁদের গন্তব্যে। সবার মধ্যে এখন স্বস্তির নিশ্বাস।

চরখালী-টগড়া ফেরির চালক শাহিন মুন্সী বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ভাটির সময় ফেরি বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। প্রায়ই ফেরি আটকে যেত মাঝ নদীতে। ডুবোচরের কারণে ফেরি চালাতেই পারতাম না। নদী খননের ফলে এখন আর সমস্যা হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক খোকন বলেন, ‘চরখালী-টগড়া ফেরিটি দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু কচা নদীতে ডুবোচরের কারণে দীর্ঘদিন বেশ কয়েকটি রুটের যানবাহন চলাচলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বর্তমানে এমনভাবে খননকাজ শুরু করা হয়েছে তাতে চরখালী-টগড়া ফেরিঘাট ব্যবহারকারী দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা, পাথরঘাটা, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, কাঠালিয়া, পিরোজপুর রুটের যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে আর সমস্যা থাকবে না।’

বিআইডব্লিউটিএর টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিভিল) মিরাজুর রহমান সোহেল বলেন, ‘কচা নদীর ১৭০০ ফুট দীর্ঘ ও ২৪০ ফুট চওড়া এলাকায় এই খননকাজ চলমান রয়েছে। এখানে প্রায় এক লাখ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করা হবে। যার ফলে টগড়া-চরখালী ফেরিসহ যাবতীয় নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত