পদ্মা সেতুর চাপ পড়বে সড়কে

শামিমুজ্জামান, খুলনা
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২২, ০৬: ৪১
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৬: ১২

পদ্মা সেতু চালুর পর খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যানবাহনের চাপ বাড়বে। সড়ক দুর্ঘটনা বাড়তে পারে। মানুষকেও ভোগান্তিতে পড়তে হবে। এ চাপ সামাল দিতে সড়ক বিভাগ গ্রহণ করেছে সড়ক প্রশস্ত করার মহাপরিকল্পনা।

জানা গেছে, ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া হচ্ছে। এ সেতু ব্যবহারের সুযোগে ৮-১০ চাকার ভারী যানবাহন খুলনা অঞ্চলে যাতায়াত করবে। কিন্তু এ অঞ্চলের সড়ক-মহাসড়ক ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী নয়। যানবাহন চলাচলের হার দ্বিগুণ হবে। যানবাহনের চাপ সামলাতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কর্তৃপক্ষকে বেগ পেতে হবে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মাধ্যমে খুলনার আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের আশায় রয়েছেন খুলনা অঞ্চলের মানুষ। ইতিমধ্যে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে এ অঞ্চলে। বিনিয়োগ বাড়লে বাড়বে মানুষের চাপ। বৃদ্ধি পাবে যানবাহন।

এ ব্যাপারে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর খুলনাসহ দক্ষিণ অঞ্চলে যে কর্মযজ্ঞ শুরু হবে তার প্রধান চাপ গিয়ে পড়বে সড়কপথে। যদি এখনই সড়ক প্রশস্তকরণ কিংবা নতুন নতুন সড়ক নির্মাণ করা না হয়, তা হলে এই অঞ্চলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হবে। এ বিষয়টি সড়ক বিভাগকে এখনই গুরুত্ব দিতে হবে।

অপর দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান অ্যান্ড রুরাল প্ল্যানিং ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক আসানুল কবির বলেন, একটি অঞ্চলের উন্নয়নের প্রধান শর্ত যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন। সেই লক্ষ্য নিয়েই হলো পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে যে পরিবর্তন হবে, তা ত্বরান্বিত করতে এই অঞ্চলের সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। তা হলে উন্নয়নের গতি ব্যাহত হবে। বাধাগ্রস্ত হবে। সে জন্য একই পরিকল্পনা নিয়ে সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

যানবাহনের চাপ সামাল দিতে এখনই পরিকল্পনা নিয়েছে সড়ক বিভাগ। সড়ক ও জনপথ (সওজ) খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর এই অঞ্চলের সড়কগুলোর ওপর চাপ পড়বে। তবে একই সঙ্গে বা রাতারাতি নয়। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সঙ্গে চাপ বাড়বে। সে বিষয়টি মাথায় নিয়ে সড়ক বিভাগ মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই অঞ্চলের সড়কের উন্নয়ন প্রশস্তকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সড়ক বিভাগ। দেশি ও বিদেশি অর্থায়নে এই সড়কগুলোর উন্নয়ন হবে।

তিনি বলেন, প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ কিলোমিটার কালনা-নড়াইল-যশোর সড়ক প্রশস্ত করা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুলনা-মোংলা সড়ক ৩০ কিলোমিটার ৬ লেনে উন্নীতকরণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। যশোর-খুলনা সড়কে ৬০ কিলোমিটার সড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার কাজটির জরিপ চলছে। এই সড়ক ৬ লেনে করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নেওয়া বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ভাঙা সড়কের ১১০ কিলোমিটার ৬ লেনে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন 

এ ছাড়া খুলনা মহানগরীর ডাকবাংলো থেকে আফিল গেট পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করার জরিপ শেষ হয়েছে। এই রাস্তা প্রশস্তকরণের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। ভোমরা-নাবারণ ৬৮ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করার জরিপ শেষ পর্যায়ে। আনুমানিক ব্যয় হবে ১ হাজার কোটি টাকা। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-লালন শাহ ব্রিজ ৭০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করার জরিপ শেষ হয়ে ডিজাইন করা হচ্ছে। এ জন্য ব্যয় হবে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। জরিপ শেষ হলে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এই তিনটি সড়কের উন্নয়নে জরিপ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো শেষ হতে কয়েক বছর সময় লাগবে। এই কাজগুলো শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন হবে।

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত