Ajker Patrika

বেগুনি ধান চাষ আশা জাগাচ্ছে কৃষকের

জুরাছড়ি (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ১৬: ০৭
বেগুনি ধান চাষ আশা জাগাচ্ছে কৃষকের

প্রথম দেখায় মনে হয়, খেতে রোগ লেগে ধানের পাতা বিবর্ণ হয়ে গেছে। আসলে ধানের পাতার রং বেগুনি। এমনকি এর ধান ও চালের রং বেগুনি (পার্পল) হবে। রাঙামাটির জুরাছড়িতে এই প্রথম চাষাবাদ হচ্ছে বেগুনি ধানের। এ নিয়ে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কৃষকদের মধ্যে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। এই ধান চাষে পাহাড়ের কৃষকদের অধিক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের দাবি, এটা বিদেশি কোনো জাত নয়, দেশি ধানের জার্মপ্লাজম।

উপজেলা সদরের চার শতাংশ জমিতে জার্মপ্লাজমসমৃদ্ধ ধানের চাষ করেন রুপেন্দু চাকমা। এ বিষয়ে রুপেন্দু চাকমা বলেন, ‘হাইব্রিড ধান চাষ করায় দিন দিন স্থানীয় জাতের বীজ হারিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া সবসময় একই ধানের বীজ চাষাবাদে ফলনও কমে গেছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নতুন বীজ চাষে উৎসাহী হই। শখের বশে চলতি বোরো মৌসুমে চার শতাংশ জমিতে বেগুনি ধানের চাষ করেছি।’

কৃষক রুপেন্দু চাকমা বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বোরো মৌসুমে বেগুনি ধানের চাষাবাদের খবর নজরে আসে। কৌতূহল দমাতে না পেরে বেগুনি ধান চাষাবাদ বিষয়ে কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে চাষাবাদের পরামর্শ নিই। এ জন্য স্থানীয় ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেন।’

চাষের প্রক্রিয়া সম্পর্কে রুপেন্দু জানান, যত্নসহকারে পেট্রিডিসে অঙ্কুরোদ্গম করে তারপর বীজতলায় ফেলেন। পরে ৪০ দিন বয়সের চারা প্রতি গুছিতে একটি করে দিয়ে চার শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। প্রতি গুছিতে ১০ থেকে ১৪টি কুশি রয়েছে। গাছের উচ্চতা ৮০ সেন্টিমিটার। ধানগাছগুলো গাঢ় বেগুনি রঙের। কিন্তু কচি পাতাগুলো সবুজ। এই সবুজ পাতায় পর্যায়ক্রমে বেগুনি রং ধারণ করে।

জুরাছড়ি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশিষ চাকমা বলেন, জুরাছড়িতে ৪৯২ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে; যা থেকে আনুমানিক উৎপাদন হাইব্রিড ৪ দশমিক ৫ মেট্রিক টন, উফশী ৩ দশমিক ৮২ মেট্রিক টন আশা করা যাচ্ছে। তবে নতুন চাষ হওয়ায় বেগুনি ধানের ফলন কত হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

রুপেন্দু চাকমার পার্পল ধানের জমিটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ব্রি-এর বিশেষ পর্যবেক্ষণে রয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুভক্ষণ খীসার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মাঠপর্যায়ের অবস্থা বিবেচনায় ধানটির জীবৎকাল আনুমানিক ১৫৫ দিন। প্রতি শতাংশে ২০ কেজি হিসেবে হেক্টরপ্রতি ফলন পাঁচ টন পর্যন্ত হতে পারে। তাই সব বিষয় জানতে ধান কাটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের রাঙামাটি অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক পবন কুমার চাকমা মোবাইল ফোনে বলেন, পার্বত্য এলাকার জন্য এটি নতুন জাতের ধান। এ জাতের চাল বেগুনি রং হয়। পাহাড়ের জমিতে এই ধান কী পরিমাণ উৎপাদন হবে, তা এখনো ধারণা করা যাচ্ছে না। তবে বাজারে এ চালের দাম বেশি। এই জাতের ধানে উৎপাদন ভালো হলে কৃষকদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ফলন ভালো দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত