ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দির রোগী

নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৫০
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২৫

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে হঠাৎ করে সর্দি-কাশি-জ্বর, ডায়রিয়া ও আমাশয়ে আক্রান্ত হচ্ছে সব বয়সের মানুষ। এর মধ্যে শিশুরা সংখ্যায় বেশি। সর্দি-জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

এদিকে হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ঋতু পরিবর্তনের ফলে প্রতিবছর এ রোগের বিস্তার দেখা গেলেও এবার তার প্রাদুর্ভাব কয়েক গুণ বেশি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

কাগজে-কলমে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শয্যাসংখ্যা ৫০। তবে প্রয়োজনীয় লোকবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে আগের ৩১ শয্যার সেবা দেওয়া হচ্ছে। গত মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে সব শয্যায় ভর্তি রোগীকে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঠ পরিদর্শক পল্লব বড়ুয়া বলেন, ‘উপজেলার ১৭ মৌজার প্রতিটি ঘরে বর্তমানে জ্বর, সর্দি রোগী আছে। প্রতিটি স্বাস্থ্য সহকারী এখন মাঠে কাজ করছেন, যা আগের তুলনায় দুই গুণ। তাঁরা রোগীর কাছে গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন।’

পল্লব বড়ুয়া জানান, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ের রোগীরা সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি রোগী ভর্তি আছে। তাঁদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তারেরা।

বাঁকখালী মৌজার বাসিন্দা খুরশেদ আলম জানান, তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যের সবাই সর্দি-জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। কিন্তু টাকা না থাকায় তাঁর মা-বাবাকে কোথাও নিতে পারছেন না। তাঁর এলাকায় সারা বছরে কোনো সরকারি লোকজন দেখেন না, স্বাস্থ্য সহকারী কখনো দেখেননি তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রতি জনপদে জ্বর-সর্দি ছড়িয়ে পড়ছে। আবহাওয়া বা ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে প্রতিবছর এসব রোগের বিস্তার ঘটে। তবে এবারে প্রাদুর্ভাব অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

বাইশারী মধ্যম চাকপাড়ার থোয়াইলং চাক বলেন, ঋতু পরিবর্তনের এ সময় প্রতিবছর এসব অসুখ হয় তাঁদের। বর্তমানে তাঁর পরিবারে সবাই জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে কষ্ট পাচ্ছেন। তবে স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে তাঁরা নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন অনেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন।

সোনাইছড়ি ইউনিয়নের হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দা ক্যানু মারমা বলেন, শুধু জ্বর নয়, তাঁর বাড়িতে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়েছেন দুজন। বাকিরাও জ্বরে আক্রান্ত।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা তিন বছরের রেহেনা ইয়াসমিনের মা হাসিনা বেগম বলেন, তিন দিন হাসপাতালে ভর্তি থেকেও কাশি, জ্বর, সর্দি কমছে না। ডাক্তার বলেছেন, ভালো হতে আরও দু-এক দিন লাগতে পারে। হাসপাতালের অন্যান্য রোগীর অভিভাবকেরা প্রায় একই কথা বলেন।

গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা. এ জেড এম ছলিম বলেন, পাহাড়ের প্রতিটি ঘরে জ্বর-কাশি-সর্দি। তা মহামারি আকার ধারণ করেছে। এর সঙ্গে ডায়রিয়া-আমাশয়ে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ঠিকভাবে চিকিৎসা না পেলে অনেক ডায়রিয়া রোগী মারা যেতে পারেন। এদিক দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে এখন তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। এ পর্যন্ত কেউ মারাও যাননি।

আক্ষেপ করে ডা. ছলিম জানান, সেবা দিতে গিয়ে নিজেও জ্বর, কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিন দিন ধরে তিনি শয্যায় আছেন। দুই দিন ধরে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। কিন্তু মোবাইলে সব খোঁজখবর করছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত