Ajker Patrika

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৩৯
মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী

একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নগরবাসী। দিন-রাত মশার অত্যাচারে নাকাল তাঁরা।

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) সূত্র দাবি করেছে, গত কয়েক বছরের তুলনায় মশার ওষুধ বেশি ছিটানো হলেও নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ছে। নগরবাসীর অসচেতনতায় ডোবা-নালায় মশার আবাসস্থল সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বৃষ্টির আগেই মশা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নগরের গোরস্তান রোড পণ্ডিতবাড়ির বাসিন্দা এ কে এম ওয়ালিদ। তিনি বলেন, তাঁর বাসার সামনে ডোবায় মশার আড্ডাখানা। সিটি করপোরেশন এসে ড্রেনে ওষুধ দিয়ে গেলে মশা আরও বেশি ঘরের মধ্যে ঢুকে। মশার যন্ত্রণায় মশারিই এখন তাঁদের জন্য নিরাপদ। একই অভিযোগ নগরীর নিউ সার্কুলার রোড, কালুশাহ সড়ক, কাউনিয়ার একাধিক বাসিন্দার।

সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের পরিদর্শক আবুল কালাম রানা বলেন, তাঁরা দৈনিক দুটি করে ওয়ার্ডে মশার ওষুধ ছিটাচ্ছেন। তাঁদের সরঞ্জামের মধ্যে আছে পনেরোটি হ্যান্ড স্প্রে এবং ২০টি ফগার মেশিন। অন্যান্য নগরের চেয়ে বরিশালে মশা নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু বাসার পাশে জঙ্গল করে রাখলে কী করার আছে?

এদিকে সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকায় মশার উৎপাত আরও বেশি। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের টিয়াখালী এলাকার আক্তারুজ্জামান বলেন, ট্যাক্স দিই। কিন্তু মশার ওষুধ তো দূরের কথা, রাস্তা নেই, বিদ্যুতের খাম্বা নেই। তিনি জানান, গত এক মাসে মশার ওষুধ দিয়েছে, তা তাঁর চোখে পড়েনি। দুর্বিষহ অবস্থার কথা কাকে জানাবেন, বুঝতে পারছেন না।

জানতে চাইলে বিসিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ মানুষ কেবল অভিযোগ করতেই পারেন, ডোবা-নালা পরিষ্কার করতে পারেন না। আমার বাসা আলেকান্দা মেডিকেলের পেছনের গেটে খালের মধ্যে মশার বাসা। মশাও এত বেড়েছে, বর্ধিত এলাকায় নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে নগরের প্রধান প্রধান এলাকাগুলোতে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

ডা. রবিউল দাবি করেন, সিটি করপোরেশনের পর্যাপ্ত ওষুধ ও জনবল আছে। গত কয়েক বছরে এত ওষুধ আর দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটা সত্য, ওষুধ দিলেও কাজ হচ্ছে না। কারণ অসচেতনতায় নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ডোবা-নালায় মশার আবাসস্থল সৃষ্টি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, ‘৩০টি ওয়ার্ডব্যাপী মশকনিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম চলছে। কিন্তু মশা উৎপাদনের কারখানা আমাদের বাসাবাড়িগুলো। জনগণ সচেতন না হলে আর কত ওষুধ ছিটাবে বিসিসি।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশে রামকৃষ্ণ মিশন মন্দির। বিশাল এলাকায় মশার আবাসস্থল।’

তিনি তাঁর ওয়ার্ডের ল কলেজের পুকুর, ঝাউতলার পুকুর, গুপ্তবাড়ির পুকুর বিএম কলেজের পুকুরের কথা উল্লেখ করে বলেন, মশার এসব বিচরণক্ষেত্র স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সিটি করপোরেশন একা করবে কী করে? বিভিন্ন কলকারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য মশার সৃষ্টি করছে, যেখানে ঢুকতেই পারেন না কর্মীরা। প্যানেল মেয়র লিটু বলেন, ‘এই নগরে মশা নিয়েই বড় হয়েছি, এখনো মশার মধ্যেই আছি।’

এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, মশার কামড়ে মশাবাহিত রোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া, চর্মজাতীয় রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাচ্চাদের এবং বয়স্কদের এ জন্য সতর্কতার সঙ্গে মশারির মধ্যে রাখা দরকার। তা ছাড়া বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে নিজেদেরই সচেতন হতে হবে। তিনি মনে করেন, নগরে মশার যে উপদ্রব তাতে বৃষ্টি হলে ডেঙ্গুর প্রবণতা অনেক বাড়বে। এ জন্য আগে থেকেই সচেতন হওয়া দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত