ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারকেল মাসুদের বাগানে

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২২, ১৫: ৫৪
Thumbnail image

পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে আগুনমুখা নদীর তীরে দেখা মেলে খাটো জাতের এক নারকেল বাগানের। এটি গড়ে তুলেছেন কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের মাসুদ চৌকিদার। দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে খাটোজাতের নারকেলের বাগান থেকে বাণিজ্যিকভাবে চারা ও নারকেল বাজারজাত করে পেয়েছেন সফলতা। তাঁর এই বাগান দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে নারকেল চাষাবাদ বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারকেল সিয়াম ব্লু ও সিয়াম গ্রিনের ১০০টি নারকেল চারা মাসুদ চৌকিদারকে দেওয়া হয়। মাসুদ চৌকিদার ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের পাটুয়া গ্রামে আগুনমুখা নদীর তীরে নিজের ১ একর জমিতে চারা রোপণ করেন। পরে চারা রোপণের আড়াই বছরের মধ্যে গাছগুলোতে নারকেল আসা শুরু হয়।

মাসুদ চৌকিদারের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, উত্তাল আগুনমুখা নদীর তীরে বাগানটিতে রয়েছে সারি সারি নারকেলগাছ। আর এসব গাছ পূর্ণ ডাব ও নারকেলে। নদীর পাড়ে বাগান হওয়ায় সেচের বদলে জোয়ার-ভাটায় লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যায় বাগানটি। বর্তমানে বাগানে প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ১৫০টি ফল এসেছে। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৫০০ চারা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন তিনি।

মাসুদ চৌকিদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ের কবল থেকে গাছ ও ফল রক্ষায় ভিয়েতনামের খাটো জাতের এ নারকেল গাছ বেছে নিই। দেশি জাতের নারকেল গাছে ফল আসতে ৭-৮ বছর লাগলেও রোপণের দুই বছরের মধ্যেই ফল চলে আসে খাটো জাতের এই গাছে। সব ধরনের মাটিতেও এ গাছ লাগানো সম্ভব। বীজ থেকেই চারা উৎপাদন করা হয়। বাগানটি শুরু করতে দেড় লাখ টাকা খরচ হলেও এখন পর্যন্ত ৫ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। বছরে এই বাগান থেকে চারা ও নারকেল বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে নারকেল চাষ করে সফলতা পেয়েছি। আর এসব কারণে গ্রামের অন্য কৃষকেরাও এখন এই নারকেল চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।’

মাসুদের বাবা আব্দুল ওহাব চৌকিদার বলেন, ‘আমাদের এই পাটুয়া গ্রামে এটাই প্রথম ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারকেলের বাগান। বাগানটি দেখাশোনা ও পরিচর্যা আমিই করছি। এ বাগানে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ দেখতে আসে। এলে তাদের ডাব কেটে আপ্যায়ন করা হয়।’

এলাকার হাফেজ বায়েজিদ হোসেন বলেন, ‘গাছভরা নারকেল দেখলে পরান জুড়িয়ে যায়। এই বাগান থেকে আমি ৫টি চারা নিয়েছি।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে এটাই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারকেলের বাগান। ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারকেল সিয়াম ব্লু ও সিয়াম গ্রিন নারকেলের চাহিদা বেশি। আমি সরেজমিনে এই বাগানে এসে সত্যিই অবাক হয়েছি। উত্তাল আগুনমুখা নদীর তীরে মাসুদ চৌকিদারের সফলতা আমাদের মুগ্ধ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত