রেডিওথেরাপি সেবা বন্ধ চার মাস, ভোগান্তি

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯: ৪৫

নেত্রকোনা সদরের মুদিদোকানি মতিউর রহমানের কয়েক মাস আগে কোলন ক্যানসার শনাক্ত হয়। স্বজনদের সহায়তায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে রেডিওথেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়েন তিনি। কারণ দেশের সর্ববৃহৎ এ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে রেডিওথেরাপি দেওয়ার যন্ত্র দুটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো।

মতিউর রহমান বলেন, ‘থেরাপি মেশিন নষ্ট থাকায় ঢামেক কর্তৃপক্ষ আমাকে মহাখালীর জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে যেতে বলে। সেখানেও রোগীর বাড়তি চাপ। সে কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।’

ঢামেক হাসপাতালের ক্যানসার বিভাগে রেডিওথেরাপি দেওয়ার জন্য প্রায় ২৩ কোটি টাকায় কেনা দুটি রেডিওথেরাপি মেশিন দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। জানা গেছে, রেডিওথেরাপি দেওয়ার কোবাল্ট মেশিনটি গত এপ্রিল থেকে অকেজো। সংশ্লিষ্টরা জানান, এ মেশিনের সহায়তায় দিনে দুই শিফটে প্রায় ১০০ রোগীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হতো। একজন রোগীর সেবা পেতে ব্যয় হতো মাত্র ১০০ টাকা। অথচ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একই সেবা পেতে রোগীদের গুনতে হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা মেশিনটি ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর স্থাপন করা হয়। স্থাপনের পর প্রায়ই ত্রুটি দেখা দিত। কয়েক দফা মেরামতের পর সর্বশেষ গত ২৬ এপ্রিল থেকে আর কাজ করছে না।

একই বিভাগে লিনিয়ার এক্সেলেটর মেশিনটি প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৭ সালে স্থাপন করা হয়। ২০১৯ সালে মেশিনটি অকেজো হয়ে যায়। এ মেশিন দিয়েও দিনে দুই শিফটে প্রায় ১০০ জন করে রোগীকে রেডিওথেরাপি দেওয়া যেত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মেশিন দুটি অকেজো থাকায় শত শত রোগীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দেশে ক্যানসার রোগী ও কী পরিমাণ রোগীদের রেডিওথেরাপি দিতে হয়—এমন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানসার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুন-অর-রশিদ বলেন, দেশে বর্তমানে ক্যানসার রোগী প্রায় ১৬ লাখ।

তাদের ৪০ শতাংশের রেডিওফেরাপির প্রয়োজন হয়।

রেডিওথেরাপি মেশিন অকেজো থাকার বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আলিয়া শাহনাজ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত