মিটুয়ানি সেতু এখন শুধু স্মৃতি

আল ইমরান মনু, (চৌহালী)
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২২, ০৭: ১২
আপডেট : ২৩ জুন ২০২২, ১৫: ৫২

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের মিটুয়ানি সেতুটি ৯ বছর উত্তাল যমুনায় দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাতে ধসে পড়ে। সেতুটি এখন এই অঞ্চলের মানুষের কাছে শুধুই স্মৃতি।

জানা গেছে, ২০০১-২০০৬ সালে উপজেলা সদরের সঙ্গে চৌহালী দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলা সদর থেকে খাষপুখুরিয়া ও বাঘুটিয়া হয়ে উমারপুর ইউনিয়নের পাথরাইল বাজার পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়। এ সড়ক ব্যবহার করে উমারপুর, বাঘুটিয়া ও খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের মানুষ উপজেলা সদরসহ ঢাকা, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জে যাতায়াত করত। এ সড়কের মিটুয়ানি খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

২০১০ থেকে ২০১৪ সালে যমুনা নদী এ অঞ্চলে ভাঙনের তাণ্ডবলীলা চালায়। ২০১৩ সালে শত শত ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ও চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র পাকা সড়কটি নদীর পেটে চলে যায়। কিন্তু সেতুটি দাঁড়িয়ে থাকে যমুনার বুকে। প্রায় ৫ বছর আগে সেতুটি ঘেঁষে বিশাল আয়তনের চর জাগে। এ কারণে সেতুটি আবারও শক্ত অবস্থানে দাঁড়ায়। কিন্তু দুই বছর আগে চরের মাঝখান দিয়ে খালের মতো ছোট ধারার সৃষ্টি হয়। সেই ধারাটি চৌহালী দক্ষিণাঞ্চলের পূর্ব পাড়ে চলমান বন্যায় বড় আকার ধারণ করে প্রায় ১০০ ফুট গভীর হয়। প্রচণ্ড স্রোতে সেতুটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। মঙ্গলবার রাতে সেতুটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

চরসলিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান সায়মন বলেন, ‘যমুনায় যখনই দেখতাম ব্রিজটি দাঁড়িয়ে আছে, তখনই অতীত স্মৃতি মনে পড়ে যেত। এ ব্রিজ দিয়ে দিনরাত কত যানবাহন চলাচল করত। এ রাস্তাকে কেন্দ্র করে হাট-ঘাট, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জমজমাট অবস্থানে চলে এসেছিল। ভাবতে গেলে সেগুলোকে এখন দুঃস্বপ্ন মনে হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা মো. সোলায়মান হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি নদীতে বিলীন হওয়ায় খুব কষ্ট লাগছে। যে রাস্তায় ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল, সেই রাস্তাকে উপলক্ষ করে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল। সবই আজ অতীত। ব্রিজটির সাথে সাথে অতীতের সেই স্মৃতিগুলোও হারিয়ে গেল।’

উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘১০ বছর হয়ে গেলে কোনো প্রকল্পের ফাইল আর থাকে না। তাই এই ব্রিজ সম্পর্কে কোনো তথ্য আমার জানা নাই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত