সীমানা পেরিয়ে পণ্য খালাস

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ৪৬
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৫৬

লালমনিরহাটের বুড়িমারী শুল্ক স্টেশনের পণ্য খালাসের নির্ধারিত সীমানা অতিক্রম করে ভারতীয় ট্রাক দেশের ভেতরে ঢুকছে। বন্দর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের বুড়িমারী ইউনিয়নের কল্লাটারীসহ আশপাশের এলাকায় পণ্য খালাস করছে ওই দেশের ট্রাক। এতে জাতীয় নিরাপত্তা ও চোরাচালানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও পর্যবেক্ষণে নিযুক্ত ব্যক্তিদের মতে, নির্ধারিত সীমানার বাইরে বিদেশি ট্রাক প্রবেশ করা এবং মালামাল খালি ও ভরাট করা কাস্টমস আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এতে অর্থদণ্ড, পণ্য ও যানবাহন বাজেয়াপ্ত করা যাবে।ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ বলেন, ‘বিদেশি পণ্যবাহী ট্রাক দেশের বেশ কিছু ভেতরে চলাচলে এ বন্দরে দায়িত্বরত বিজিবি, কাস্টমস ও শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের প্রকাশ্যে কোনো বিধিনিষেধ নেই। এ জন্য অবাধে প্রবেশের প্রবণতা বাড়ছে। সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। বুড়িমারী স্থলবন্দর জিরো পয়েন্ট থেকে ইসলামপুর ও বুড়িমারী মৌজার আবাসিক কিছু বসতবাড়ি ছাড়া চারপাশের এলাকায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়কের দুই পাশে ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার বাংলাদেশি এলাকার অভ্যন্তরে পণ্যবাহী শতাধিক ভারতীয় ও ভুটানি ট্রাক অবাধে ঢুকে পণ্য খালাস করছে।
২০১০ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের সীমা নির্ধারণ করা হয়। এতে আমদানি-রপ্তানি পণ্য ওঠানো ও নামানোর স্থান বুড়িমারী মৌজার বাংলাদেশ-ভারত সংযোগ মহাসড়কের সীমান্ত শূন্যরেখার ৫০০ মিটার অভ্যন্তর থেকে পাটগ্রাম উপজেলা অভিমুখী ওই সড়কের ইসলামপুর মৌজার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত উভয় দিকে ৫০০ মিটার বিস্তৃত এলাকা পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণ করা হয়। 
এদিকে সীমানা অতিক্রম করে ভারত ও ভুটান থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল ও পণ্য ওঠানো-নামানোর প্রবণতা কয়েক বছর ধরে বৃদ্ধি পায়। ২০২০ সালে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হলেও কেউ সীমানা অতিক্রম করার বিধিনিষেধ মানছেন না।
বুড়িমারী শুল্ক স্টেশনের মেসার্স গোল্ডেন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এক যুগ আগে কাস্টমসের নির্ধারিত সীমানা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত কম। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পণ্য রাখার শেডও কম। সরকারি স্থলবন্দর হিসেবে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরই বুড়িমারী স্থলবন্দরের গুরুত্ব রয়েছে। ব্যবসায়ী পরিবেশ নির্বিঘ্ন করতে কাস্টমের নির্ধারিত সীমানা বৃদ্ধি করা জরুরি।’

ভারতের আসাম থেকে আসা ট্রাকচালক জুরান আলী বলেন, ‘বাংলাদেশের আমদানিকারকেরা পাথরবোঝাই ট্রাক নিয়ে আমাদের যেখানে যেতে বলে সেখানে যাই। কেউ কোনো নিষেধ করে না। আমরা যদি অপরাধ না করি, তাহলে তো সমস্যা নেই।’
বাংলাদেশি ট্রাকচালক লিমন বাবু বলেন, ‘বুড়িমারী ইউনিয়নের কল্লাটারীসহ আশপাশের এলাকায় ভারতীয় ট্রাক পণ্য খালাস করে। কিন্তু ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরে নির্ধারিত সীমানা থেকে বেশি দূর যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। চালকদের গাড়ি নিয়ে চলাচল করার স্বাধীনতা নেই। দিনে-রাতে তাঁদের ওই দেশের নিরাপত্তা বাহিনী নির্ধারিত সীমানায় সতর্ক থাকে।’

এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার জে এম আলী আহসান বলেন, ‘কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হচ্ছে। কাস্টমস এলাকা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত