শেষ সময়ে ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর তোড়জোড়

মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ১৪: ০৪

কমবেশি ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। সেগুলো ঠিক করা হবে, নাকি একেবারে বাদ দেওয়া হবে–সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যদিও প্রকল্পের মেয়াদ আছে আর মাত্র কয়েক দিন। এ অবস্থায় ইভিএম প্রকল্পটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ঈদের পর এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

ইসির জন্য দেড় লাখ ইভিএম ক্রয় করতে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি পাস হয় ২০১৮ সালে। একসঙ্গে কেনাও হয় সব ইভিএম। বর্তমানে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার ইভিএম ভালো রয়েছে। বাকি ১ লাখ ৫ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ব্যবহারের উপযোগী নয়। নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা এসব ইভিএমের মূল্য কমবেশি ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এখন এসব ইভিএম মেরামত করতেও প্রচুর অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু ৩০ জুন শেষ হচ্ছে প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ। এ অবস্থায় আবারও প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি। এর আগে ২০২৩ সালের জুন শেষ হতে যাওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছিল। 

ইসি সূত্র জানায়, ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও প্রকল্পটি শেষ করা নিয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। তাই কমিশন তাড়াহুড়ো করে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েক দিন ধরে কর্মকর্তারা এ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বৃহস্পতিবার ইসির প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে চেয়েছিল কমিশন; কিন্তু সময়স্বল্পতার কারণে পাঠাতে পারেনি। তাই ঈদের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ইসির প্রস্তাবটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। 

জানতে চাইলে ইসি সচিব শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে, এ বছরে ইভিএম প্রকল্প শেষ করা সম্ভব নয়। আর ইভিএমে যেসব নির্বাচন হয়েছে, তাতে আস্তে আস্তে যন্ত্রটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। তাই ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এক বছর সময় পেলে ভবিষ্যতে আমরা কী করব, কতটুকু কী করা যায়, মেইনটেন্যান্স কীভাবে করব—সেসব পরিকল্পনা করা যাবে।’ 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করতে চেয়েছিল কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। এ জন্য ২ হাজার ইভিএম কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার প্রকল্পও হাতে নিয়েছিল ইসি। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তাতে সায় দেয়নি সরকার।

পরে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করে ইসি। পরে স্থানীয় সরকারের কিছু কিছু উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনে এই ভোটযন্ত্র ব্যবহার করে কমিশন। এদিকে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) ওয়্যারহাউসে ইভিএম রাখার ভাড়ার বকেয়া বাবদ প্রায় ৫৫ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে।

প্রকল্পের ডিপিপিতে ইভিএম সংরক্ষণের বিষয়টি না থাকায় বকেয়া টাকার বিষয়ে জটিলতা থাকায় সেই টাকা পরিশোধ করতে পারছে না ইসি। তারপরও ইভিএমের গুরুত্বের বিষয়ে জোর দিচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সম্প্রতি সিইসি বলেন, ‘প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমাদের এগোতে হবে। দুই বছর ধরে এটি নিয়ে কাজ করছি। ইভিএম গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে অনেক বেশি সহায়ক হবে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত