Ajker Patrika

আবার কার্পাস তুলায় সাদা হবে কাপাসিয়া

আনিসুল ইসলাম, কাপাসিয়া
আবার কার্পাস তুলায় সাদা হবে কাপাসিয়া

গাজীপুরের কাপাসিয়া। প্রাচীন এ জনপদের রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। বাঙালির হারানো ঐতিহ্য মসলিন কাপড়ের জন্য মিহি আঁশের কার্পাস তুলার উৎপাদন ও বিক্রির অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল এটি। সেই হারানো কার্পাস চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। প্রশাসনের সহায়তায় কাপাসিয়ায় আবার বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কার্পাস তুলার চাষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের বেলাসী তল্লাপাড়ার গ্ৰামের কৃষক মো. কুমুর উদ্দিন তাঁর তিন বিঘা জমিতে কার্পাস তুলার চাষ শুরু করেছেন। একই সময় লোহাদী গ্রামের কৃষক মোছাম্মৎ হালিমা খাতুন ২২ শতক জমিতে রুপালি-১ জাতের কার্পাস তুলার চাষ করছেন। এ ছাড়া উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকেরা কার্পাস তুলার রুপালি-১ ও ডিএস-৪ জাতের কার্পাস তুলার চাষ করছেন।

র্পাস তুলার চাষ সম্বন্ধে কৃষক মো. কুমুর উদ্দিন আজকের পত্রিকা বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো কার্পাস তুলার চাষ শুরু করি। বর্তমানে এ গাছগুলোর বয়স প্রায় আড়াই মাস। তুলা গাছগুলোয় ইতিমধ্যে ফুল এসেছে। আশা করা যায় আগামী দুই-আড়াই মাসে তুলা সংগ্রহ করা যাবে। কৃষি কর্মকর্তারা দেখে বলেছেন, গাছগুলো অনেক বাড়ন্ত ও ভালো হয়েছে। ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।’

কুমুর উদ্দিন বলেন, ‘আমি প্রথমে কার্পাস তুলার চাষ করতে চাইনি। তুলা উৎপাদিত হলে সেই তোলা বিক্রি করব কোথায় এ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়। পরে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁরা এখান থেকে ন্যায্যমূল্য দিয়ে তুলা কিনে নিয়ে যাবেন। পরে কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় পেয়ে তুলা চাষ শুরু করি।’

কুমুর উদ্দিনের এ পর্যন্ত তুলা চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তিনি একই জমিতে কার্পাস তুলার পাশাপাশি সবজি চাষ করেছেন। তিনি এই তুলা চাষের ওপরে একটি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় স্থানীয় সংসদ সদস্য তুলা চাষ করতে উৎসাহ দেন বলে জানান। সেই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যাঁরা অংশ নিয়েছেন অনেকেই এখন কার্পাস তুলার চাষ শুরু করেছেন।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান জানান, ‘সবার প্রচেষ্টায় কাপাসিয়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে কার্পাস তুলার চাষ শুরু করেছেন কৃষকেরা। এই কার্পাস থেকে জগদ্বিখ্যাত মসলিন উৎপাদিত হয়। সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও চাষিদের সম্মিলিত এই উদ্যোগটি কাপাসিয়া উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘তুলা বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের প্রধান কাঁচামাল। দেশে যে পরিমাণ তুলা প্রয়োজন তার বেশির ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমি কম থাকা সত্ত্বেও হাইব্রিড তুলা চাষ শুরু করা হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ২০ মণ তুলা উৎপাদন করা সম্ভব।’

মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘কাপাসিয়ার নামের সঙ্গে কার্পাস তুলার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ সময় কাপাসিয়ায় প্রচুর কার্পাস তুলা উৎপাদিত হতো। সেই তুলা দিয়ে ঐতিহ্যবাহী মুসলিম কাপড় তৈরি করা হতো। সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমির উদ্যোগে কার্পাস তুলার চাষ শুরু করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে।’ উৎপাদিত তুলা বাজারজাত করতে আমরা কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এনআইডির তথ্য ফাঁস করে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জিয়াউলের বিরুদ্ধে

সাতকানিয়ায় নিহত জামায়াত কর্মীর লাশের পাশে ব্রাজিলের তৈরি অত্যাধুনিক পিস্তল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত