ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আছে জমিদারদের বাড়িগুলো

গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২২, ০৬: ৪৬
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১০: ০০

কালের পরিক্রমায় বদলে গেছে অনেক কিছু। হারিয়ে গেছে জমিদারি প্রথা। কিন্তু জমিদারদের বাড়িগুলো আজও রয়ে গেছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। তেমনিই চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন হিসেবে টিকে রয়েছে ‘কড়ৈতলী জমিদারবাড়ি’টি।

দেখা গেছে, হাতি, ঘোড়া, পাইক, পেয়াদা না থাকলেও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে জমিদারদের রেখে যাওয়া স্থাপত্যশৈলী। পোড়া ইটপাথরের দেয়ালে বাসা বেঁধেছে উদ্ভিদ আর শেওলা। তবুও ঐতিহ্যমণ্ডিত জমিদারবাড়িটি টিকে আছে আপন গৌরবে। যদিও জমিদারদের অধস্তন কেউ আর এখন সেখানে নেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দৃষ্টিনন্দন জমিদারবাড়িটির সৌন্দর্য দিন দিন হারাচ্ছে। বিভিন্ন লতা-পাতা মোড়ানো উদ্ভিদগুলো এখন সেখানে আধিপত্য বিস্তার করছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১২২০ সালে হরিশ চন্দ্র বসুর হাত ধরে জমিদারদের কড়ৈতলীতে প্রত্যাবর্তন। ১৯৫১ সালে জমিদার গোবিন্দ চন্দ্র বসুর মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে রাজপরিবারের। প্রায় ৩০০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত জমিদারবাড়িটির অস্তিত্ব এখন সামান্য জায়গাজুড়ে।

জমিদারবাড়িটিতে রয়েছে দুর্গামন্দির, বিধ্বস্ত প্রাসাদ, অট্টালিকা, কাছারি ঘর ও সুড়ঙ্গপথ। এ ছাড়া ‘বাবুর দীঘি’ নামে বিশাল এক দীঘি রয়েছে। কড়ৈতলী বাজারে রয়েছে ‘শ্মশানকালী মন্দির’। তবে সেখানে এখন আর পূজার ব্যবস্থা নেই। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটক এসে ভিড় জমান বাড়িটি দেখতে।

লোকমুখে শোনা যায়, সেখানকার জমিদারেরা অনেক আগেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁদের বংশের কেউ-ই এখন আর খবর নিতে আসেন না। জমিদারবাড়িটি ‘বাবুর বাড়ি’ নামে সবার কাছে পরিচিত। বাবুর বাড়ি বললেই একনামে চেনে উপজেলাবাসী।

স্থানীয় মো. হাসান বলেন, বাবুর বাড়িটি দেখতে অনেক মানুষই ছুটে আসে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা স্থাপত্যশৈলীর ব্যাপারে জানতে আসে। প্রতিদিনই বাড়িটিতে লোকে লোকারণ্য হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, প্রশাসন যদি বাড়িটিকে পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তোলে, তাহলে আরও প্রচার পাবে। পাশাপাশি বাড়িটি প্রাণ ফিরে পাবে। অর্থনীতির দিক থেকেও এগিয়ে যাবে গ্রামটি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি বলেন, ‘জমিদার বাড়ির বিষয়টি আমি জেনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জমিদার বাড়িটি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত