ক্রিকেট বিশ্বকাপে আলোচিত ১০ ঘটনা

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২: ০৩
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২: ২৭

শুরুটা যেখানে হয়েছিল, শেষটাও হলো আহমেদাবাদের সেই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। নীল সমুদ্রের গর্জন থামিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল অস্ট্রেলিয়া। দেড় মাসের এই টুর্নামেন্টে মনে রাখার মতো কতশতই-না ঘটনা! সেসবেরই ১০টি এখানে তুলে দেওয়া হলো—

হেডের উদ্ধত শির
চোটের কারণে প্রথম পাঁচ ম্যাচ খেলতে পারেননি। তারপরও ট্রাভিস হেডে আস্থা রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফিরেই সেঞ্চুরি, সেমিফাইনালেও ফিফটির সঙ্গে ২ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচসেরা। আহমেদাবাদের ফাইনালে তো লিখলেন অস্ট্রেলিয়ার অনন্য অধ্যায়। লক্ষ্য তাড়ায় ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা অজিরা ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জিতল হেডের সেঞ্চুরিতে।

ম্যাক্সওয়েলের কীর্তি
এ বিশ্বকাপ দুহাত ভরে দিয়েছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। ডাচদের বিপক্ষে ৪০ বলের সেঞ্চুরি করে টুর্নামেন্টের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান তিনি। ফাইনালে জিতলেন শিরোপাও। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রানের যে ইনিংসটি খেলেছেন, অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে সেটি। ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯১ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে বসা অস্ট্রেলিয়াকে চোট নিয়েও অবিশ্বাস্য জয় এনে দেয় তাঁর সেই ইনিংস।

‘টাইমড আউট’ ম্যাথুস
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে হেলমেট সমস্যার কারণে উইকেটে আসতে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস সময়ক্ষেপণ করায় আম্পায়ারের কাছে টাইমড আউটের আবেদন জানান সাকিব আল হাসান। লঙ্কান অলরাউন্ডার বাংলাদেশ অধিনায়কের কাছে অনুরোধ জানিয়েও রক্ষা পাননি। আইসিসির নিয়মে এই আউট বৈধ হলেও সরগরম হয়ে ওঠে বিশ্বকাপ। এমন আউট যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসেই প্রথম!

কোহলির সেঞ্চুরির ‘ফিফটি’
২০১১ বিশ্বকাপে জয়ের পর শচীন টেন্ডুলকারকে কাঁধে নিয়ে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ঘুরেছিলেন বিরাট কোহলি। সেই মাঠেই কিউইদের বিপক্ষে সেমিতে ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’কে কুর্নিশ জানান ‘কিং’। ওয়ানডেতে শচীনের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড যে ভাঙা হয়ে গেছে ততক্ষণে! কোহলির সেঞ্চুরির ফিফটি মাঠে বসেই দেখেছেন শচীনসহ আরও অনেক তারকা। 

আফগান আখ্যান
তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলতে এসেই চার জয়, যার মধ্যে তিন চ্যাম্পিয়নকে হারানো—আফগানিস্তান তাদের ক্রিকেটে নতুন আখ্যান লিখল এবার। আশা জাগিয়েও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে যাওয়ায় প্রথমবার সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নটা মোটামুটি মুঠোছাড়া হয়ে যায় আফগানদের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়া জয় যে ফ্লুক নয়, সেটি তারা প্রমাণ করে প্রথমবার ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারিয়ে। 

ডাচ রূপকথা
নেদারল্যান্ডস বিশ্বকাপ শেষ করেছে সবার নিচে থেকে। তবে এক যুগ পর বিশ্বকাপে ফিরেই দেখিয়েছে চমক। ডাচরা নিজেদের তৃতীয় ম্যাচেই মাটিতে নামায় উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কমলানাচন তারা আবারও দেখায় দুই ম্যাচ পর। বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ে সেমির স্বপ্নও দেখেছিল ডাচরা। 

ইংল্যান্ডের পতন
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে নিয়ে বাজি ধরার লোকের অভাব ছিল না। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ভারতে আসা তাদের। তবে তারকায় ঠাসা দলটি পেরোতে পারেনি লিগ পর্ব। নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে জয় পেলেও তার আগে টানা পাঁচ ম্যাচ হারায় বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় বাটলারদের। উদ্বোধনী ম্যাচে গতবারের রানারআপ নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বসে তারা। 

৭৭১ রানের ম্যাচ
এ বিশ্বকাপ রানবন্যার হবে—এমন ভবিষ্যদ্বাণীর প্রমাণ পাওয়া যায় চতুর্থ ম্যাচেই। দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কার ম্যাচে ওঠে ৭৫৪ রান। তবে এটিই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ নয়। ৭৭১ রান নিয়ে এ তালিকার শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচটি। এ বিশ্বকাপে ভারত-নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালেই হলো ৭২৪ রান, যা এ তালিকার তৃতীয় সর্বোচ্চ। গত বিশ্বকাপে ৭১৪ রান হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ ম্যাচে, যা ছিল চার বছর ধরে শীর্ষে। সেটি এখন তালিকার চারে। 

অবিশ্বাস্য শামি
ভাগ্যিস, চোটে পড়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। নয়তো অমন অবিশ্বাস্য মোহাম্মদ শামির কি দেখা মিলত! ভারতের শেষ ৭ ম্যাচ খেলতে পেরেছেন, তাতেই ২৪ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের সেরা বোলার এই পেসার। যার মধ্যে তিনবার পেয়েছেন ৫ উইকেটের দেখা। তবে শেষটা ভালো হয়নি শামির। ফাইনালে নিতে পেরেছেন মাত্র ১ উইকেট।  

লঙ্কানদের ৫৫ রানের লজ্জা
হারলেও বড় স্কোরের দেখা পাচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ভারতের মুখোমুখি হতেই তারা বিশ্বকাপে ফিরিয়ে আনে গত সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের ফাইনালের স্মৃতি। সেই ম্যাচে মোহাম্মদ সিরাজের তোপের সামনে কলম্বোতে মাত্র ৫০ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ওয়াংখেড়েতে শামির তোপে করতে পারে তার চেয়ে ৫ রান বেশি, যা এ বিশ্বকাপের সর্বনিম্ন স্কোর। আর বিশ্বকাপ ইতিহাসে চতুর্থ সর্বনিম্ন। তাদের চেয়ে টেস্ট খেলুড়ে কোনো দল বিশ্বকাপে এত কম রানে অলআউট হয়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত