কৃষকদের উদ্যোগে খাল খনন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৭
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ৩০

হাওরের খাল ভরাট হওয়ায় তিন ফসলের স্থলে ফলন হয় এক ফসলের। বিন্ন্যার হাওরে শতাধিক পরিবার পানির সংকটের কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন তিন ফসল থেকে। এ সংকট নিরসনে কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে হাওরে খাল খনন শুরু করেছেন। এ খনন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিন্ন্যার হাওরে ৮ ফুট গভীরতার ১ হাজার ৮০০ ফুট দৈর্ঘ্য করে খাল খনন শুরু হয়েছে। এই খাল কোদালিছড়া খালের সঙ্গে সংযোগ হবে। কোদালিছড়া পাহাড়িছড়ার সঙ্গে সংযোগে শীত মৌসুমে মনু নদের বিশেষ প্রকল্পে যুক্ত হবে। ফলে শীত ও বর্ষায় সারা বছরই পানি থাকবে।

খাল পুনঃখনন উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান, জমির মালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী এবং স্থানীয়রা।

ভুজবল গ্রামের কৃষক নিখিল কুমার দাশ বলেন, ‘এখানে খাল ছিল, দখল করে ভরাট করা হয়েছে। এখন খনন হলে আমরা গরিব কৃষকেরা উপকৃত হব।’

গয়ঘর গ্রামের ছাদ মিয়া বলেন, ‘আমি বর্গা চাষ করে খাই। তিন ফসল এবং সবজি চাষ করলে পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারব।’

এই খাল খননের উদ্যোক্তা জাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘খালটি ভরাটের পর প্রভাবশালীরা দখল করে নেয়। এখানে আমারসহ শতাধিক মানুষের জমি রয়েছে। পানির অভাবে তিন গ্রামের মানুষ তিন ফসল চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। জেলা প্রশাসন এই খাল উদ্ধারের পর খননে সহযোগিতা করে। খাল খননে প্রায় ৬ লাখ টাকা লাগবে, আমরা জমির মালিকেরা এই খরচ বহন করব।’

কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, মোস্তফাপুর ও গিয়াসনগর ইউনিয়নের আজমেরু, ভুজবল, গয়ঘর গ্রামের শতাধিক কৃষকের প্রায় ৫০০ বিঘা জমি রয়েছে এ স্থানে। এসব জমিতে তাঁরা আউশ, আমন, বোরো চাষাবাদ করতে পারবেন।

কৃষকেরা বলেন, খনন করলে খালে সব সময় পানি সরবরাহ থাকবে। এতে মাছের উৎপাদন বাড়বে, এমনকি রবিশস্যের ফলনও ভালো হবে। এর ফলে হাওর এলাকায় পাখির আগমন ও বিচরণ বাড়বে। সব মিলিয়ে হাওরপারের বাসিন্দাদের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে আসবে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতায় পাশে থাকব।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হবে, যাতে চাষাবাদে তাঁদের আগ্রহ বাড়ে।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, এখানে এক সময় খাল ছিল। বর্তমানে খাল ভরাট হয়ে দখল হয়েছে। দখলমুক্ত করে পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে। আবারও কৃষকেরা তিন ফসল ধান এবং সবজি চাষ করতে পারবেন। সব মিলিয়ে এলাকার মানুষের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত