নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘কোথায় পালালো সত্য?/ দুধের বোতলে, ভাতের হাঁড়িতে! নেই তো/ রেষ্টুরেন্টে, হোটেলে, সেলুনে,/ গ্রন্থাগারের গভীর গন্ধে,/ টেলিভিশনে বা সিনেমা, বেতারে,/ নৌকার খোলে, সাপের ঝাঁপিতে নেই তো।’ এমন আকুলতা নিয়ে যে কবি সত্য খুঁজে ফিরেছেন নিরন্তর, ‘সত্য ফেরারী’র সেই কবি আজ অনন্তলোকে।
বাংলা সাহিত্যের অরণি পাথর কবি আসাদ চৌধুরী কানাডার টরন্টোতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৩টায় মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর ছোট ছেলে জারিফ চৌধুরী ও জামাতা নাদিম ইকবাল গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসাদ চৌধুরী কয়েক বছর ধরে টরন্টোতে বসবাস করছিলেন। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন অটোয়ায়। জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই কবি অসুস্থ ছিলেন।
কবি আসাদ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায়। ১৯৫৭ সালে আরমানিটোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
পরে কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের শুরু। ১৯৬৪-১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে। পরে তিনি সাংবাদিকতাও করেছেন। ১৯৭৩ সালে যোগ দেন বাংলা একাডেমিতে। দীর্ঘকাল চাকরি করার পর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে অবসর নেন।
প্রথম কবিতার বই ‘তবক দেওয়া পান’ দিয়েই পরিচিতি পান কবি। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১৩ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
১৯৮৩ সালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থে দেশের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে। দেশ ও মানুষের প্রতি অসীম দরদী এই কবি ‘শহীদদের প্রতি’ কবিতায় লিখেছেন, ‘তোমাদের যা বলার ছিল/ বলছে কি তা বাংলাদেশ?/...তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়/ গভীর নদী যেমন বাঁকা/ স্রোতটিকে লুকায়/ যেমন পাখির ডানার ঝলক/ গগনে মিলায়।’
চমৎকার আবৃত্তি করতেন আসাদ চৌধুরী। তাঁর বাচনশৈলীও ছিল আকর্ষণীয়। টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার জন্যও তিনি সব মহলে সুপরিচিত। মৌলিক কবিতা ছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া ও অনুবাদগ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। তাঁর কবিতায়-ছড়ায় ছন্দ ও অন্তমিল যে কাউকে আকর্ষণ করে খুব সহজে। খ্যাতিমান অন্য কবিরাও তা স্বীকার করেন অকপটে। ঢাকার বাইরে একটি মফস্বল শহরে এক অনুষ্ঠানে আসাদ চৌধুরীর সামনেই কবি নির্মলেন্দু গুণ একবার বলেছিলেন, ‘আমি তখন বিখ্যাত কবি হয়ে গেছি। “প্রেমাংশুর রক্ত চাই”, “না প্রেমিক না বিপ্লবীর” মতো কবিতার বই তুমুল জনপ্রিয়। কিন্তু একদিন জানলাম, আমি ছন্দের তেমন কিছু জানি না। ছুটলাম আসাদ চৌধুরীর কাছে। শিখিয়ে দিলেন ছন্দ। নতুন এক স্বাদ ধরিয়ে দিয়েছিলেন আসাদ ভাই।’
সাবলীল ছন্দময় কবিতা ‘সত্যি মানুষ ছিলাম’-এ আসাদ চৌধুরী লিখেছেন, ‘আগুন ছিল গানের সুরে/ আগুন ছিল কাব্যে/ মনের কাছে আগুন ছিল/ একথা কে ভাববে/ নদীর জলে আগুন ছিল/ আগুন ছিল বৃষ্টিতে/ আগুন ছিল বীরাঙ্গনার/ উদাস করা দৃষ্টিতে।’
দূর প্রবাসে এই কবির মৃত্যুতে দেশের কবি-সাহিত্যিকসহ কবিতাপ্রেমী মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
টরন্টো থেকে কৃষিবিদ কামরুজ্জামান ভূঁইয়া গতরাতে জানান, কবির জানাজা আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর স্কারবোরোর নাগেট মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর কবির মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আধা ঘণ্টা রাখা হবে সেই মসজিদে। পরে পিকারিং ডাফিন মেডোজে তাঁকে দাফন করা হবে।
‘কোথায় পালালো সত্য?/ দুধের বোতলে, ভাতের হাঁড়িতে! নেই তো/ রেষ্টুরেন্টে, হোটেলে, সেলুনে,/ গ্রন্থাগারের গভীর গন্ধে,/ টেলিভিশনে বা সিনেমা, বেতারে,/ নৌকার খোলে, সাপের ঝাঁপিতে নেই তো।’ এমন আকুলতা নিয়ে যে কবি সত্য খুঁজে ফিরেছেন নিরন্তর, ‘সত্য ফেরারী’র সেই কবি আজ অনন্তলোকে।
বাংলা সাহিত্যের অরণি পাথর কবি আসাদ চৌধুরী কানাডার টরন্টোতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৩টায় মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর ছোট ছেলে জারিফ চৌধুরী ও জামাতা নাদিম ইকবাল গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসাদ চৌধুরী কয়েক বছর ধরে টরন্টোতে বসবাস করছিলেন। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন অটোয়ায়। জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই কবি অসুস্থ ছিলেন।
কবি আসাদ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায়। ১৯৫৭ সালে আরমানিটোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
পরে কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের শুরু। ১৯৬৪-১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে। পরে তিনি সাংবাদিকতাও করেছেন। ১৯৭৩ সালে যোগ দেন বাংলা একাডেমিতে। দীর্ঘকাল চাকরি করার পর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে অবসর নেন।
প্রথম কবিতার বই ‘তবক দেওয়া পান’ দিয়েই পরিচিতি পান কবি। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১৩ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
১৯৮৩ সালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থে দেশের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে। দেশ ও মানুষের প্রতি অসীম দরদী এই কবি ‘শহীদদের প্রতি’ কবিতায় লিখেছেন, ‘তোমাদের যা বলার ছিল/ বলছে কি তা বাংলাদেশ?/...তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়/ গভীর নদী যেমন বাঁকা/ স্রোতটিকে লুকায়/ যেমন পাখির ডানার ঝলক/ গগনে মিলায়।’
চমৎকার আবৃত্তি করতেন আসাদ চৌধুরী। তাঁর বাচনশৈলীও ছিল আকর্ষণীয়। টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার জন্যও তিনি সব মহলে সুপরিচিত। মৌলিক কবিতা ছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া ও অনুবাদগ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। তাঁর কবিতায়-ছড়ায় ছন্দ ও অন্তমিল যে কাউকে আকর্ষণ করে খুব সহজে। খ্যাতিমান অন্য কবিরাও তা স্বীকার করেন অকপটে। ঢাকার বাইরে একটি মফস্বল শহরে এক অনুষ্ঠানে আসাদ চৌধুরীর সামনেই কবি নির্মলেন্দু গুণ একবার বলেছিলেন, ‘আমি তখন বিখ্যাত কবি হয়ে গেছি। “প্রেমাংশুর রক্ত চাই”, “না প্রেমিক না বিপ্লবীর” মতো কবিতার বই তুমুল জনপ্রিয়। কিন্তু একদিন জানলাম, আমি ছন্দের তেমন কিছু জানি না। ছুটলাম আসাদ চৌধুরীর কাছে। শিখিয়ে দিলেন ছন্দ। নতুন এক স্বাদ ধরিয়ে দিয়েছিলেন আসাদ ভাই।’
সাবলীল ছন্দময় কবিতা ‘সত্যি মানুষ ছিলাম’-এ আসাদ চৌধুরী লিখেছেন, ‘আগুন ছিল গানের সুরে/ আগুন ছিল কাব্যে/ মনের কাছে আগুন ছিল/ একথা কে ভাববে/ নদীর জলে আগুন ছিল/ আগুন ছিল বৃষ্টিতে/ আগুন ছিল বীরাঙ্গনার/ উদাস করা দৃষ্টিতে।’
দূর প্রবাসে এই কবির মৃত্যুতে দেশের কবি-সাহিত্যিকসহ কবিতাপ্রেমী মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
টরন্টো থেকে কৃষিবিদ কামরুজ্জামান ভূঁইয়া গতরাতে জানান, কবির জানাজা আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর স্কারবোরোর নাগেট মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর কবির মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আধা ঘণ্টা রাখা হবে সেই মসজিদে। পরে পিকারিং ডাফিন মেডোজে তাঁকে দাফন করা হবে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে