অসাধারণ এক স্নায়ুযুদ্ধ শেষে ১৮ ডিসেম্বর রাতে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলায় বিজয়ের হাসি হাসল আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ এই খেলা উপভোগ করেছেন তারকারাও। আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা তো বটেই, ব্রাজিল সমর্থক তারকারাও সেদিন চেয়েছিলেন বিশ্বকাপটা মেসির হাতেই উঠুক। বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে তারকাদের সেই রাতের অনুভূতি জানাচ্ছেন এম এস রানা

মেসির খেলা দারুণ উপভোগ করেন  ফারুকী
নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ব্রাজিলের সমর্থক। তবে তিনি ভালো ফুটবল খেলার পক্ষে। ব্রাজিলের বিদায়ের পরেও তাই তিনি চেয়েছেন লাতিন ফুটবলের জাদু মুগ্ধতা ছড়াক। ব্যক্তিগতভাবে তিনি মেসির খেলা দারুণ উপভোগ করেন। গতকাল ফাইনাল খেলার আগেই তিনি বলেছেন, ‘শুধু মেসি না, করিম বেনজেমার জন্যও আর্জেন্টিনার জেতা উচিত। যে অন্যায় ট্রিটমেন্ট বেনজেমা কোচ দেশমের কাছে পেয়েছে, তার ফল ভোগ করা উচিত ফ্রান্সের। গো আর্জেন্টিনা, উইন ইট!’

খেলা শেষে উত্তেজনায় কেঁদেছেন পরীমণি
মনের ভেতর তীব্র প্রত্যাশা আর চাপ নিয়ে খেলা দেখেছেন অভিনেত্রী পরীমণি। তাঁর চাওয়া ছিল, লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ। গোলের হিসাব-নিকাশ করেননি তিনি। খেলার শেষ দিকে নাকি হাত-পা কাঁপছিল তাঁর। আর্জেন্টিনার জয়ের পর তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে স্বামী রাজকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘আমি কেমন বোকার মতো এখনো কানতেছি! রাজ, তাড়াতাড়ি আমাকে নিয়ে আর্জেন্টিনা চলো।’

শুটিং থাকায় খেলা দেখতে পারেননি তমা
আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত অভিনেত্রী তমা মির্জা প্রতিটি ম্যাচে ছিলেন পর্দার সামনে। কিন্তু ১৮ ডিসেম্বর শুটিং থাকায় খেলা দেখতে পারেননি। দর্শকদের চিৎকার শুনে ছুটে গেছেন কে গোল দিয়েছে দেখতে। নিজের পছন্দের দল বিশ্বকাপ জেতায় ভীষণ খুশি তমা। তিনি বলেন, ‘খেলায় নৈপুণ্যের পাশাপাশি ভাগ্যও বড় ফ্যাক্টর। তবে আর্জেন্টিনা কাপ নেবে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। গতকাল শুটিং করতে করতে একটা বিষয় বুঝতে পারলাম, আমরা যারা প্রফেশনাল, মাঠে বা ক্যামেরার সামনে তারা সবাই যার যার কাজে ভীষণ অনেস্ট। নিজের কাজটা মন দিয়ে করতে পারলে সাফল্য আসবেই। আর সে কারণেই প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া দলটি বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে বিজয়ের হাসি হেসেছে।’

মিমের মন বলেছিল শেষ হাসিটা মেসিই হাসবেন
অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম ব্রাজিলের সমর্থক। ব্রাজিলের পক্ষে একাধিকবার ফেসবুক স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি। গতকাল তিনি সমর্থন দিয়েছিলেন মেসির দলকে। বলেছিলেন, ‘মন বলছে শেষ হাসিটা মেসিই হাসবেন।’ খেলা চলাকালে নাকি সেই প্রত্যাশার ঘোড়ায় সওয়ার হয়েছিল ভয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যিই বিজয়ের হাসি হেসেছেন মেসি। তাই অভিনন্দন জানিয়ে মিম বলেছেন, ‘অসাধারণ একটি ম্যাচ হয়েছে। দুই দলই ভালো খেলেছে। তবে বিজয়ের হাসিটা মেসিই হেসেছেন।’ খেলা শেষে মিম তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘অভিনন্দন আর্জেন্টিনা।’

ফাইনালে আর্জেন্টিনাকেই সমর্থন দিয়েছেন সাইমন
ব্রাজিলের নিরেট সমর্থক অভিনেতা সাইমন সাদিক। তাদের বিদায়ের পর খেলা দেখা বন্ধ রেখেছিলেন। তবে গতকাল ফাইনাল দেখেছেন। সমর্থন দিয়েছেন আর্জেন্টিনাকে। সাইমন বলেন, ‘অ্যাগ্রেসিভ প্লেয়ার আমার পছন্দ নয়, তাই এমবাপ্পে আমার পছন্দের তালিকায় নেই। অন্যদিকে, মেসি আমার পছন্দের খেলোয়াড়। তিনি যত বড় হচ্ছেন ততই উদার হচ্ছেন। আর তাঁর মতো একজন কালজয়ী খেলোয়াড় বিশ্বকাপ ডিমান্ড করে। পুরো খেলাটাই আমি উপভোগ করেছি। বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা যেমন হওয়ার ছিল তার চেয়েও বেশি উত্তেজনা ছিল। আমার প্রত্যাশা অনুযায়ী মেসির হাতেও কাপ উঠেছে।’

পাল্টাপাল্টি গোলে দুশ্চিন্তায় ঘেমে উঠছিলেন নিরব
অভিনেতা নিরব আর্জেন্টিনার সমর্থক। প্রথম থেকেই তিনি আশা করেছিলেন আর্জেন্টিনা এবার বিশ্বকাপ জিতবে। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে তাঁর। ফাইনালে তাঁর ধারণা ছিল আর্জেন্টিনা জিতবে ২-১ গোলে। কিন্তু শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় মধ্যরাত পর্যন্ত উত্তেজনায় ছটফট করেছেন তিনি। নিরব বলেন, ‘জানতাম আর্জেন্টিনা জিতবে। খেলার প্রথমার্ধ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশায় কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। কিন্তু এরপর পাল্টাপাল্টি গোলে দুশ্চিন্তায় ঘেমে উঠছিলাম। অবশেষে মেসির হাতে কাপ ওঠায় স্বস্তি ফিরে পেলাম।’