Ajker Patrika

মণিপুরিদের স্মৃতি রক্ষায় ব্যক্তি উদ্যোগে জাদুঘর

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ৫৯
মণিপুরিদের স্মৃতি রক্ষায় ব্যক্তি উদ্যোগে জাদুঘর

মৌলভীবাজারে ইতিহাস-ঐতিহ্য, যুদ্ধ-বিগ্রহের নানা উপকরণের সমন্বয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে মণিপুরি জাদুঘর। মণিপুরিদের প্রাচীন বিলুপ্তপ্রায় সামগ্রীসহ তিন শতাধিক উপকরণ স্থান পেয়েছে জাদুঘরটিতে। কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ছনগাও গ্রামের হামোম তনু বাবু নিজ বাড়িতে এই জাদুঘর গড়ে তুলেছেন। তিনি ২০০৬ সালে তাঁর বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘চাউবা মেমোরিয়াল মণিপুরি ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি মিউজিয়াম’।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এখানে আসেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি জাদুঘরের দেড় দশক পূর্তি উৎসব উদ্‌যাপন করা হয়। জাদুঘরে স্থান পাওয়া তিন শতাধিক উপকরণের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মণিপুরি সম্প্রদায়ের প্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্যর সঙ্গে পরিচিত হতে এই সংগ্রহশালা অনন্য বলে মনে করছেন নৃতত্ত্ব গবেষক ও দর্শনার্থীরা। এটি একক নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে দেশের একমাত্র জাদুঘর দাবি করে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা চেয়েছেন জাদুঘরটির প্রতিষ্ঠাতা।

জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠাতা মণিপুরি লেখক ও গবেষক হামোম তনু বাবু জানান, প্রথমে এক-দুটো উপকরণ সংগ্রহ, পরে নিজের বাড়িতে একটি রুমে শুরু করি। এখন আমার বাড়ির ৪টি কক্ষে তাকে তাকে সাজানো আছে বিভিন্ন উপকরণ। ২০০ বছর আগের ব্যবহৃত কয়েন, মণিপুর মহাকাব্যের নায়ক-নায়িকার ছবি এবং যুদ্ধবিগ্রহে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ রয়েছে। তা ছাড়া প্রাচীন ঐতিহ্য ও নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে মণিপুরিদের আদি ধর্ম দেবতাদের পরিচিতি। আছে মণিপুরি নারীদের ব্যবহারের বিভিন্ন ধরনের গয়না, সাজসজ্জার উপকরণ। প্রাচীন কাঁসা পিতলের কলস, জগ, মগ। বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী। আছে কাপড় বুননের প্রাচীন সরঞ্জামও। কৃষিকাজে ব্যবহৃত উপকরণ ও প্রাচীন বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রও স্থান পেয়েছে এখানে।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘বাস্তবিক অর্থে ব্যক্তিগত পর্যায়ে মণিপুরিদের এমন একটি সংগ্রহশালা আমাদের একদিকে যেমন অনুপ্রাণিত করে, অন্যদিকে দায়বদ্ধও করে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, এখানে সকল জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ও অধিকার সংরক্ষণে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। আমি স্থানটি পরিদর্শন করেছি, তাঁদের দাবি ছিল জাদুঘরের জন্য একটি ভবন নির্মাণ ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করা। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেছি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত