‘বিপদে ভরসা ছিলেন ওমকার’

এম নুরুল ইসলাম, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৪
Thumbnail image

রাত-বিরাতে বিপদে-আপদে ওমকার ছিলেন এলাকার মানুষের ভরসাস্থল। ভোটকেন্দ্রে তাঁকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি মানতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনার সময় মেয়ের বাড়িতে ছিলেন মা দীপ্তি দত্ত ও বাবা দিলীপ দত্ত। সংবাদ পেয়ে বাড়ি ছুটে আসেন তাঁরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের সিংহরা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় স্বজনদের মাতম। বোন গীতা দত্ত বলেন, ‘ভোটের দিন (বুধবার) সকালে বাড়ির পাশের সিংহরা রামকানাই উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়েছিল ওমকার। সেখানেই সন্ত্রাসী আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করে।’

বাড়ির কাছেই একটি ওষুধের দোকান চালাতেন ওমদার দত্ত। প্রতিবেশী দীপক দত্ত বলেন, ‘রাত-বিরাতে বিপদে-আপদে ওমকার ছিল এলাকার মানুষের ভরসা। এমন বন্ধুবৎসল মানুষকে কেউ পিটিয়ে মারতে পারে, তা কারও কল্পনাতেই ছিল না।’

মা দীপ্তি দত্ত বলেন, তিন দিন আগে স্বামীর সঙ্গে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। অসুস্থতার কারণে ভোট দিতে আসতে পারেননি। ওই সময় বাড়িতে ছিলেন না ওমকারের স্ত্রীও।

‘ওঁমকার ছিল আমার অতি আদরের সন্তান। আমার প্রাণ। আমার জীবনের সম্বল। ওরা আমার ছেলে কেড়ে নিয়ে গেল। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব?’ বলে বিলাপ করছিলেন দীপ্তি দত্ত। বলছিলেন, ‘আমার ছেলে এলাকার মানুষের উপকার করে বেড়াত। কোনো মানুষের ক্ষতি করেনি সে।’ তবু কেন এমন হত্যার শিকার হতে হলো, এমন প্রশ্ন ছুড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই বৃদ্ধা।

চাচি মিতা দত্ত বলেন, ‘রাতে ওমকার বাড়িতেই ছিল। তাঁর মা-বাবা মেয়ের বাড়ি ও স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি গেছে বেড়াতে। মেম্বার প্রার্থী ধনঞ্জয় বিশ্বাস ভোলা একই এলাকার ছেলে ও সমবয়সী। এ জন্য সকাল সকাল সে (ওমকার) ভোট কেন্দ্রে চলে যায়। যে সব সময় মানুষের আপদে-বিপদে থাকত, তাকে কীভাবে মেরে ফেলতে পারল? বিশ্বাস করতে পারছি না।’

ওমকারের বোনজামাই কল্লোল সেন বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে মৃতদেহ বাড়িতে আনা হয়েছে। সৎকার শেষে থানায় মামলা করা হবে।

ওমকার হত্যায় সিংহরা গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়ে ব্যানার টানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

চাতরি ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ধনঞ্জয় বিশ্বাস ভোলার অভিযোগ, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রঘুনাথ সকারের সমর্থকেরা ওমকারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন রঘুনাথ সরকার। তাঁর দাবি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এক জোট হয়ে তাঁকে ফাঁসানোর জন্য এসব অভিযোগ এনেছেন।

অবশ্য ওমকার নিহত হওয়ার পর থেকেই তিনি এলাকা ছেড়ে দেন।

চাতরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী আফতাব উদ্দিন চৌধুরী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ইসলাম শিকদার বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

বিচার বিভাগের সমস্যা তুলে ধরলেন বিচারক, আনিসুল হক বললেন ‘সমস্যা কেটে যাবে’

বিদ্যালয়ে একই পরিবারের ১৬ জনের চাকরি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ভাতা নয়, সঞ্চয়পত্র কিনে দিচ্ছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত