এসএসসির জীববিজ্ঞান

ফারহানা রহমান
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২১, ০৭: ৪৬
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ১৮

বারো অধ্যায়

প্রিয় ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের জীববিজ্ঞান বিষয়ের ‘বারো অধ্যায়: জীবের বংশগতি ও বিবর্তন’ থেকে অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব।

১। পৃথিবী থেকে ডায়নোসর লোপ পেয়েছে কিন্তু তেলাপোকা টিকে আছে কীভাবে?

উত্তর: পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য জীবের মধ্যে যে গঠনগত, শারীরবৃত্তীয় স্বভাব বা আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়, তাকে অভিযোজন বলে।

বিবর্তনের ধারায় যথোপযুক্ত অভিযোজন ক্ষমতার অভাবে অনেক প্রজাতি কালের গর্ভে হারিয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে যে প্রজাতিটির টিকে থাকার ক্ষমতা বেশি, সে বিবর্তন ধারায় তত বেশিদিন টিকে থাকে। আবার কম হলে সে বিলুপ্ত হয়। বিবর্তন ধারায় ডায়নোসরের অভিযোজন ক্ষমতা কম হওয়ায় সেটি লোপ পেয়েছে। অপর দিকে তেলাপোকার টিকে থাকার ক্ষমতা বেশি বলে তারা আজও টিকে রয়েছে।

২। প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলতে কী বোঝো?

উত্তর: জীবের অপ্রকাশিত বৈশিষ্ট্যকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলে, অর্থাৎ প্রকট বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি যেসব বৈশিষ্ট্যে প্রকাশিত হয় না, তাই প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য।

৩। বর্ণান্ধতার ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কীভাবে কাজ করে?

উত্তর: বর্ণান্ধতা এমন এক অবস্থা যখন কেউ কোনো রং সঠিকভাবে চিনতে পারে না।

রং চিনতে আমাদের চোখের স্নাযুকোষে রং শনাক্তকারী লিগমেন্ট থাকে। বর্ণান্ধতা একধরনের বংশগতীয় রোগ। তবে অনেক সময় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলেও এটি হতে পারে। বাত রোগের জন্য হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইনিন দীর্ঘ সময় ধরে সেবন করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চোখের রঙিন পিগমেন্ট নষ্ট হয়ে যায়। ফলে রোগী বর্ণান্ধ হতে পারে।

৪। সেক্স লিংকড ডিসঅর্ডার বলতে কী বোঝো?

উত্তর: যেসব জিনগত রোগে সেক্স ক্রোমোজোমে অবস্থিত জিনগুলোয় মিউটেশর ঘটে, সেসব রোগকে বলা হয় সেক্স লিংকড ডিসঅর্ডার। যেমন বর্ণান্ধতা, থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি।

যেহেতু Y ক্রোমোজোম খুবই ছোট আকৃতির এবং এতে জিনের সংখ্যা খুব কম, তাই বেশির ভাগ সেক্স লিংকড ডিসঅর্ডার হয় X ক্রোমোজোমে অবস্থিত জিনগুলোর মিউটেশনের কারণে।

৫। কালার ব্লাইন্ড কেন হয়?

উত্তর: কালার ব্লাইন্ড এমন এক অবস্থা, যখন কেউ কোনো রং সঠিকভাবে চিনতে পারে না।

এটি বংশগত কারণে অথবা কোনো কোনো ওষুধ, যেমন বাতরোগের জন্য হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনিন সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চোখের রঙিন পিগমেন্ট নষ্ট হয়ে রোগী কালার ব্লাইন্ড হয়ে থাকে।

৬। RNA বলতে কী বোঝো?

উত্তর: RNA হলো Ribonucleic Acid-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

অধিকাংশ RNA-ই একটি পলিনিউক্লিওটাইড সূত্র দ্বারা গঠিত। এতে পাঁচ কার্বনবিশিষ্ট রাইবোজ শর্করা, অজৈব ফসফেট ও নাইট্রোজেন বেস থাকে। নাইট্রোজেন বেসগুলোর মধ্যে থাকে এডেনিন (A), গুয়ানিন (G), সাইটোসিন (C) এবং ইউরাসিল (U)। যেসব ভাইরাস DNA দ্বারা গঠিত নয় তাদের নিউক্লিক অ্যাসিড হিসেবে RNA থাকে।

৭। জীনকে বংশগতির ধারক বলা হয় কেন?

উত্তর: জীবের সব দৃশ্য ও অদৃশ্যমান লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী একক হলো জিন, যা জীবের ক্রোমোজোমে অবস্থান করে।

জীবের সব বৈশিষ্ট্য ধারণ করে জিন এবং তা গ্যামেটের মাধ্যমে বংশপরম্পরায় পৌঁছে দেয়। জীবের সব বংশগতীয় বৈশিষ্ট্য ধারণ করে বলেই জিনকে বলা হয় বংশগতির ধারক ও বাহক।

৮। থ্যালাসেমিয়া বলতে কী বোঝো?

উত্তর: থ্যালাসেমিয়া রক্তের লোহিত রক্ত কণিকার এক অস্বাভাবিক অবস্থানজনিত রোগ।

এই রোগে লোহিত রক্ত কণিকাগুলো নষ্ট হয়। ফলে রোগী রক্তশূন্যতায় ভোগে। এই রোগ বংশপরম্পরায় হয়ে থাকে। তীব্র থ্যালাসেমিয়ার কারণে জন্মের আগেই মায়ের গর্ভে শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

৯। ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং বলতে কী বোঝো?

উত্তর: ডিএনএ টেস্টের বিজ্ঞানভিত্তিক একটি ব্যবহারিক পদ্ধতিই হলো ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং।

এই পদ্ধতিতে প্রথমে নমুনা থেকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ডিএনএগুলো কেটে ছোট ছোট করে তাদের দৈর্ঘ্য অনুসারে বিভিন্ন ব্যান্ড আকারে আলাদা করা হয়। এরপর নাইট্রোসেলুলোজ কাগজে ডিএনএ প্রোবের সঙ্গে রেডিও অ্যাকটিভ আইসোটোপকে হাইব্রিডাইজ করে তা এক্স-রে ফিল্মের ওপর রাখতে হয়। এরপর অটোরেডিওগ্রাফ পদ্ধতিতে দৃশ্যমান ব্যান্ডের সারিগুলো নির্ণয় করা হয় এবং অপরাধস্থল থেকে প্রাপ্ত নুমনার সঙ্গে সন্দেহভাজন নমুনার মিল ও অমিল চিহ্নিত করে তুলনা করা হয়।

১০। অনুলিপন বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় একটি DNA অণু থেকে আরেকটি DNA অণুর সৃষ্টি হয়, তাকে অনুলিপন বলে।

এ প্রক্রিয়াটি DNA অণুর সূত্র দুটির হাইড্রোজেন বন্ধন ভেঙে গিয়ে আলাদা হয় এবং প্রতিটি সূত্র তার পরিপূরক নতুন সূত্র সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন DNA অণু তৈরি করে।

ফারহানা রহমান
সহকারী শিক্ষক, ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত