Ajker Patrika

আপসের প্রস্তাবের অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপসের প্রস্তাবের অভিযোগ

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম ইফতেখার আজাদের বিরুদ্ধে নার্স ও স্বাস্থ্য সহকারীদের করা অভিযোগের তদন্ত চলছে। তবে প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই আপসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নার্সরা। এখন তাঁরা সঠিক তদন্ত হবে কি না এবং প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, গত ১৩ জুন ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন নার্স সিভিল সার্জনের সঙ্গে দেখা করে মৌখিকভাবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইফতেখার আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন। সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমান অভিযোগগুলো লিখিত আকারে দিতে বলেন। ১৫ জুন নার্সদের পক্ষ থেকে ১৮টি এবং স্বাস্থ্য সহকারীদের পক্ষ থেকে ৮টি অভিযোগ লিখিত আকারে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। পরে সিভিল সার্জন সেগুলো স্বাস্থ্য  অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠান।

অভিযোগের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীকে নিজের চেম্বারে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া, মেডিকেল কর্মকর্তা থাকলেও স্যাকমো ও স্যাকমো ইন্টার্নি দিয়ে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া, স্যাকমো ও স্যাকমো ইন্টার্নিদের সহযোগী হিসেবে নার্সদের কাজ করতে বাধ্য করা, মৃদুল সিকদার নামে এক বহিরাগতকে নিজের ব্যক্তিগত এপিএস বানিয়ে তাঁকে দিয়ে নার্সদের ওপর খবরদারি করা, মামলার হুমকি দেওয়া, মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা, কার্ডিওগ্রাফার থাকা সত্ত্বেও তাঁকে অন্যত্র ডিউটি করানো এবং নার্সদের দিয়ে ২৪ ঘণ্টা অন্তবিভাগ, বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ ও নিজস্ব চেম্বারের রোগীদের ইসিজি করানো, বেতন-বিল সময়মতো ফরোয়ার্ড না করা, প্রণোদনার অর্থ না দেওয়া ও ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইনের বরাদ্দ অর্থ না পাওয়া।

১৩ জুলাই এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন উপপরিচালক (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা বিভাগ) এ বি এম আবু হানিফ; তেজগাঁও থানার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গাজী আহমেদ হাসান এবং সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ, ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্যের কার্যালয়) মো. হাবিব ইসমাইল ভূঁইয়া।

১৮ জুলাই ঢাকা থেকে কমিটির সদস্যরা এসে তথ্য সংগ্রহ করেন। এদিকে, ৮ আগস্ট ঢাকা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ফরিদ হোসেন মিয়া নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তিনি অভিযোগকারী নার্সদের নিয়ে বসেন।

নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স গুলশান আরা বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কর্মকাণ্ড নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আমাদের মিলেমিশে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরা এতে রাজি হইনি। আমাদের দাবি দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা এবং এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

আপসের প্রস্তাবের বিষয়ে ফরিদ হোসেন বলেন, ‘৮ আগস্ট নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে তাঁদের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলিনি। ওই বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এর আগে সেখানে কাজের পরিবেশ যাতে ঠিক থাকে এবং জনগণের সেবা যাতে নিশ্চিত করা যায়, তাই মিলেমিশে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি।’

অভিযুক্ত নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম ইফতেখার আজাদ বলেন, ‘আমি ভালো ও নতুন কিছু করতে চেয়েছিলাম, তা আমার সহকর্মীরা ভালোভাবে নেননি। এ জন্যই এসব অভিযোগ। এর কোনো বাস্তবতা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

বগুড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ছাদ থেকে পড়ে নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত