Ajker Patrika

পাটকেলঘাটা গণহত্যা স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের অপেক্ষায়

মুজিবুর রহমান, পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা)
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ৩৫
পাটকেলঘাটা গণহত্যা স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের অপেক্ষায়

সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা পার কুমিরা বধ্যভূমিতে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদদের স্মৃতিরক্ষা ও সম্মানার্থে গণহত্যা স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।

কুমিরায় ১৯৭১ সালের ২৩শে এপ্রিল ৭৯ জন মানুষকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সেদিন নৃশংসভাবে পুড়িয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এ ছাড়া স্থানীয়দের বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়া হয়। এ পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে কয়েকজনকে তাঁদের পরিবারের লোকজন নিয়ে যায়। বাকি অপরিচিতদের লাশ তৎকালীন পার-কুমিরা দাতব্য চিকিৎসালয়ের সামনে গর্তের মধ্যে স্থানীয়রা মাটি চাপা দিয়ে রাখে। সেদিনের সেই লোমহর্ষক ঘটনা এলাকাবাসী আজও ভুলতে পারেনি।

প্রতিবছর ২৩শে এপ্রিল নিহতদের পরিবার ও রাজনৈতিক সংগঠন শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ, দোয়া, আলোচনা সভা ও গণকবরের স্থলে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানাতে থাকে। ১৯৯২ সালের ২৪মে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাশিপুর যাওয়ার পথে পারকুমিরা বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

শহীদ পরিবারের সন্তান তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম সেদিনের সেই হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘সেদিন ছিল শুক্রবার। মসজিদে জুমার আজান হচ্ছিল। এ সময় পাটকেলঘাটা থেকে পাক সেনারা পারকুমিরায় গিয়ে আলোচনার কথা বলে নিরীহ গ্রামবাসীকে একত্রিত করে। এ সময় সহজ সরল গ্রামবাসীর ওপর নির্বিচারে ব্রাশফায়ার চালালে ঘটনাস্থলেই ৭৯ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে যশোর নওয়াপাড়া, খুলনার ফুলতলা, চুকনগর, ডুমুরিয়া, পাইকগাছাসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন শরণার্থীও ছিলেন।’

সেদিন যারা শহীদ হন তাঁদের কয়েকজনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবেই পাওয়া যায়। তাঁরা হলেন, তালা উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামের শেখ আবদুর রহমান, শেখ আলাউদ্দীন, শেখ সামছুর রহমান, শেখ বদরুদ্দীন, মো. সালমত আলী, শেখ ফয়জুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, শেখ বিলায়েত আলী, সাজ্জাত আলী প্রমুখ।

শহীদদের অনেককেই পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি তাঁদের পারকুমিরার ওই বধ্যভূমিতে গণকবর দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে মতিলাল কুণ্ড, ননীলাল কুণ্ড, দিলীপ কুণ্ড, ডা. মণিন্দ্রনাথ সরকার, মুরারীমোহন কুণ্ড, গোষ্ঠ কুণ্ড, গোপাল কুণ্ড, শচীন দে, মোহনলাল কুণ্ড, রণজিৎ কুণ্ড, খোকন কুণ্ড, জীবন কুণ্ড, বিমল কুণ্ড, মনোরঞ্জন কুণ্ড, খগেন কুণ্ড, ফ্যাকা কুণ্ড, ননী কুণ্ড, দিলীপ কুণ্ড, গোবিন্দ কুণ্ড, কানাইলাল কুণ্ড, প্রতিমা কুণ্ড, মনোঞ্জন কুণ্ড, হারাধন কুণ্ডসহ অনেকেরই পরিচয় মেলে।

তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেম উদ্দীন জানান, ২০১৯ সালে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় একটি স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। সেই অনুযায়ী ২ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও এরই মধ্যে কাজ শেষ হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন ‘আগামী ২০২২ সালের ২৫ শে মার্চ অথবা ২৩শে এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে স্মৃতিস্তম্ভটি উদ্বোধন করা হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

বোনের বাড়িতে ‘ধর্ষণের’ শিকার: ২৪ ঘণ্টা পরও অচেতন শিশু, মূর্ছা যাচ্ছেন মা

আওয়ামী লীগ নেতা ‘ব্যাটারি বাবু’ ভবনে ঢুকে হাওয়া!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত