সার ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে রবিশস্য চাষিরা

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ০৫: ৫০
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৫০

সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে সারের মূল্য বেশি নেওয়া এবং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ায় রবিশস্য আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কৃষকেরা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় চাষাবাদে বাড়তি খরচ হচ্ছে। এতে কৃষি অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

বর্তমানে উপজেলায় আমন ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন কৃষকেরা আলু রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আলুর পাশাপাশি অন্যান্য শীতকালীন সবজিও চাষাবাদ করছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে গতকাল বুধবার সকালে দেখা গেছে, উপজেলার পাঁচগ্রামের একটি মাঠে মেসি (ট্রাক্টর) দিয়ে জমি চাষ করছেন ফিরোজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘লিটারে ১৫ টাকা বেশি দরে বাজার থেকে ডিজেল কিনেছি। গত বছর প্রতি শতক জমি চাষ করতে নিতাম ২৫ টাকা। তেলের দাম বাড়ায় এখন ৩০ টাকা করে নিচ্ছি।’

সাধারণত এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু কৃষকদের বেশি দামে সার কেনা ও তেলের দাম বাড়ায় সেই খরচে যোগ হয়েছে বাড়তি আরও ৭-৮ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ বাড়ায় চাষের শুরুতেই কৃষকদের মূলধনে টান পড়েছে।

উপজেলার তিশরাপাড়ার কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, তেলের দাম বাড়ায় এরই মধ্যে বেড়েছে হাল, সেচ ও পরিবহন খরচ। এতে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। ফসলের ভালো দাম না পেলে কৃষকেরা কৃষিকাজ থেকে বিমুখ হয়ে পড়বেন।

সার কিনতে আসা উপজেলার ঝামুটপুর গ্রামের কৃষক আবু হেনা বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে।

কৃষক জিল্লুর রহমান বলেন, সরকারিভাবে টিএসপি সারের বস্তা ১১০০ টাকা হলেও ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন দাম ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকা। এমওপি সারের দাম ৭৫০ টাকা, কিন্তু নেওয়া হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। ডিএপি ৯০০ টাকা ও ইউরিয়া ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশি দাম নিলেও রসিদে সরকার নির্ধারিত দামই লিখে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা বিএডিসির সার ডিলার মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারের বরাদ্দ কম কিন্তু কৃষকের চাহিদা বেশি। বাইরে থেকে বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে, তাই কৃষকের কাছে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কৃষকের চাহিদার তুলনায় উপজেলায় সারের বরাদ্দ কম। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তা ছাড়া তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে উপজেলায় সার পরিবহনসহ সেচকাজে কৃষকের খরচ বেশি পড়ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত