ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বাণিজ্য হবে ২৬ হাজার কোটি টাকা

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮: ২৯
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ১৭

দেশে প্রতিনিয়ত বিস্তৃত হচ্ছে আইটিকেন্দ্রিক ব্যবসার আকার। এভাবে বাড়তে থাকলে ২০২৩ সাল নাগাদ ব্যবসার পরিমাণ ২৬ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।

আর সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিশেষ করে রাজস্ব সংস্থাটা যদি সব ই-কমার্সভুক্ত প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটজালের আওতায় নিতে পারে, তবে সেখান থেকে বছরে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট আদায় সম্ভব হবে। এনবিআরের নিজস্ব বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, বর্তমানে কয়েকটি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান ভ্যাট প্রদান করছে। এ জন্য কোম্পানিগুলোর যেমন রয়েছে ভ্যাট প্রদানে উদাসীনতা, ঠিক একইভাবে কর আদায়কারী সংস্থাটিরও রয়েছে কিছু সীমাবদ্ধতা।

তবে সংস্থাটি স্বয়ংক্রিয় ভ্যাট আদায় পদ্ধতিসহ চালুর পাশাপাশি সব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে লক্ষ্য অনুযায়ী ভ্যাট আদায়ে কার্যকরী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্প্রতি এক সমীক্ষায় বলেছে, গত অর্থবছরের আড়াই লাখ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় সম্ভাবনার মুখে মাত্র ৯৭ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছে এনবিআর কর্তৃপক্ষ।

আরও জানা যায়, ২০২০ সালে বিশ্বে ই-কমার্সের ছয়টি ক্ষেত্রে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের জিডিপির তুলনায় প্রায় ১ হাজার গুণ বেশি। তা এশীয় অঞ্চলে ছিল ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার ও দক্ষিণ এশিয়ায় ছিল ১৩০ বিলিয়ন ডলার। আর ২০২৩ সাল নাগাদ এ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের আকার দাঁড়াবে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে।

ঢাকা পশ্চিমের কমিশনার (কাস্টমস, ভ্যাট এক্সাইস ও ভ্যাট কমিশনারেট) সৈয়দ মুসফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনবিআর কর্তৃপক্ষ রাজস্ব বাড়াতে বেশ কিছু গবেষণা পরিচালনা করেছে। সেখানে কয়েকটি সম্ভাবনাময় খাত চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাত হলো আইসিটিভিত্তিক ই-কমার্স ও খুচরা ব্যবসা।

 সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, ২০২৩ সালে আইসিটি খাতে ব্যবসার পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা। স্বয়ংক্রিয় ভ্যাট আদায় পদ্ধতিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে আইটি খাত থেকে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট আদায় সম্ভব।

একজন ই-কমার্সের ক্রেতা বা ভোক্তা দেশের পাশাপাশি বিদেশি প্ল্যাটফর্ম থেকেও পণ্য ও সেবা নেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশাল এ ক্ষেত্রটি পুরোপুরি ভ্যাটের আওতায় আনা হবে সামনের দিনের বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এনবিআর যে পরিকল্পনা অনুযায়ী সামনের দিকে যাচ্ছে এবং প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধি অর্জনের পথে ধাবমান রয়েছে এবং সে অনুযায়ী চলতে পারলে সামনের সব চ্যালঞ্জ মোকাবিলা করে লক্ষ্য অনুযায়ী ভ্যাট আদায় করতে সক্ষম হবে।’

এনবিআরের অপর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রায় দুই বছর দর-কষাকষির পর গত মে মাস থেকে অনাবাসী প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাট নিবন্ধন শুরু করে।

এ পর্যন্ত মোট সাতটি অনাবাসী প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, গুগল এশিয়া প্যাসিফিক, আমাজন ওয়েব সার্ভিস, মাইক্রোসফট ও নেটফ্লিক্স। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্য সংযোজন কর (মূসক) তথা ভ্যাট দিয়েছে ফেসবুক। গত পাঁচ মাসে তার পরিমাণ প্রায় ১২ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভ্যাট দিয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক গুগল এশিয়া প্যাসিফিক। ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া ভ্যাটেরপরিমাণ প্রায় ৯ কোটি টাকা। আর আমাজনের দেওয়া ভ্যাটের পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত