২০১৮ সালের ২৩ জুনের কথা নিশ্চয়ই মনে পড়ছে। সেবার রাশিয়া বিশ্বকাপেও গ্রুপ পর্বের নিজেদের প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে হেরেছিল জার্মানরা। দ্বিতীয় ম্যাচ যখন জীবন-মরণ প্রশ্নের, তখন সুইডেনের বিপক্ষে দারুণ জয় দিয়ে বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখেন ক্রুসরা। এবারও কি এমন কিছুই করবে জার্মানি? সে উত্তর জানা যাবে আজ রাত ১টার ম্যাচে।

রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানদের প্রতিপক্ষ ছিল তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ সুইডেন। এবার তাদের পরীক্ষা নিচ্ছে ২০১০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন। কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের প্রথম রাউন্ড শেষে দুই দলের পথ যেন বিপরীত দিকে ছুটছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে এবারের আসরের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় জয়টা পেয়েছে স্পেনই। চারবারের বিশ্বকাপজয়ী জার্মানদের বিপক্ষেও সাম্প্রতিক সময়ে স্পেনের রেকর্ড রীতিমতো ঈর্ষণীয়। সর্বশেষ ইউরোপিয়ান ন্যাশনস লিগের ম্যাচে জার্মানদের বিপক্ষে ৬-০ গোলের বিশাল জয় পেয়েছিল স্পেন।

এসবে চিন্তিত নন জার্মান ফুটবলের অন্যতম পোস্টার বয় কাই হাভার্টজ। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে হাভার্টজ বললেন, ‘প্রত্যেকেই জানে আমাদের ভাবনা কী। আমাদের শতভাগ মনোযোগ শুধুই ফুটবলে। মাঠে আমাদের ফুটবলটা খেলাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।’

জার্মান মিডফিল্ডার হুলিয়ান ব্রান্ট যথেষ্ট সতর্ক প্রতিপক্ষ স্পেন নিয়ে। ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে যে আলোচনা হচ্ছে, সেটি গুরুত্বই দিচ্ছেন না তিনি। বলেছেন, ‘আমরা জানি লোকজন আমাদের নিয়ে কী বলছে। আমরা সেই অবস্থায়ই আছি।’ ব্রান্টের সব মনোযোগ এখন স্পেন ম্যাচে, ‘গত রোববার স্পেন ৭-০ গোলের বড় জয় পেয়েছে, যা তাদের চারপাশের পরিস্থিতিই বদলে দিয়েছে।’ তবে তারাও জানে, আজ তাদের জিততেই হবে। সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিলেন ব্রান্ট, ‘আমরা একটা বাজে পরিস্থিতিতে রয়েছি, মনে হয় দ্রুত নিজেদের পরিস্থিতি বদলে দিতে পারব। যদি রোববার (আজ) জিততে পারি পরিস্থিতি বদলে যাবে আবারও।’

জার্মানদের পরিস্থিতি বদলানোর ম্যাচকে ‘সুন্দর চ্যালেঞ্জ’ বলে মনে করেন স্পেন কোচ লুইস এনরিকে। জার্মানদের বিপক্ষে দারুণ জয়ের স্মৃতি থাকলেও বিশ্বকাপে জার্মানিকে কখনো হারাতে পারেনি স্পেন। এনরিকে এসব নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘জার্মানি এমন এক দল, যারা সব সময়ই আক্রমণ করে খেলে। দ্রুত খেলার ফল বের করে আনতে চায় তারা। বলের দখল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পছন্দ করে। ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে খেলার ধরনের দিক দিয়ে তারাও স্পেনের মতোই।’ তাই অনেকটা নিজেদের মতো দলের বিপক্ষে খেলাই মনে করছেন এনরিকে। বললেন, ‘এটা আমাদের জন্য “সুন্দর চ্যালেঞ্জ”, আমরা দুই দলই একই ফল প্রত্যাশা করছি, তাই দুই দলেরই সমান সুযোগ রয়েছে।’

বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের হাইভোল্টেজ ম্যাচে দুই দলের এই সমানে সমান লড়াই দেখতেই যেন অপেক্ষা করছে দর্শকেরা।